‘লকডাউন’ ভেঙে মার্কেট খুললেন ব্যবসায়ীরা

| আপডেট :  ৫ এপ্রিল ২০২১, ০৯:২১ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৫ এপ্রিল ২০২১, ০৯:২১ পূর্বাহ্ণ

নিরাপদ শা’রীরিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বা’স্থ্যবিধি মেনে মার্কেট খোলা রাখার জন্য রোববার (৪ এপ্রিল) সংবাদ সম্মেলন করে দাবি জানিয়ে ছিলেন ব্যবসায়ীরা। দাবি মানা না হলে আন্দোলনে যাবেন বলেও হুঁ’শিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছিল।

কিন্তু সে দাবি না মানায় সোমবার (৫ এপ্রিল) স’রকার ঘোষিত ‘লকডাউন’ ভে’ঙেই মার্কেট খুলেছেন ব্যবসায়ীরা। সকাল থেকে মার্কেট বন্ধ রাখলেও বেলা ১১টার দিকে ব্যবসায়ীরা মহানগরীর আর’ডিএ মার্কে’টের সামনের সড়কে নামেন।

প্রথমেই তারা সড়ক অ’বরোধ করেন। পরে সড়কের ও’পরই বি’ক্ষো’ভ শুরু করেন। একপর্যায়ে পাশেই দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা সেখানে যান এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন।
কিন্তু আর’ডিএ মার্কে’টের দোকান খোলার জন্য ব্যবসায়ীরা আরও বিক্ষু’ব্ধ হয়ে ওঠেন।

এরই মধ্যে ভেতরে অনেকেই একটি দুইটি করে দোকান খোলা শুরু করেন। পরে বি’ক্ষো’ভ শেষে দায়িত্বরত পুলিশের হ্যান্ড মাইক নিয়ে সেখান থেকেই মার্কেট থোলার ঘোষণা দেন। এর পরপরই রাজশাহী মহানগরীর আর’ডিএ মার্কে’টের দোকানপাট খুলতে শুরু করেন ব্যবসায়ীরা।

তবে মার্কে’টের বাইরের দোকানপাট বন্ধ আছে। জনসাধরেণর চলাচলে লকডাউনের তেমন প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। সড়ক-মহাসড়কে দূরপাল্লা ও আন্তঃজে’লা রুটের সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা, সিএনজি ও মোটরসাইকেলসহ হালকা যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। আর এসব যানবাহনে কোনো স্বা’স্থ্যবিধি অনুসরণ করা হচ্ছে না। আগের মত ঠাসাঠাসি করেই এসব যানবাহনে বিভিন্ন গন্তব্যে যাচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা।

এর আগে সকাল ৬টা থেকে ক’রোনা সং’ক্র’মণরোধে স’রকারের ঘোষণা অনুযায়ী রাজশাহীতে ৭ দিনের লকডাউন শুরু হয়। এই লকডাউন চলবে আগামী ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত।

সকাল থেকে বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আগের তুলনায় রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা। তবে গণপরিবহন দেখা না গেলেও বিভিন্ন সড়কে অসংখ্য ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজি ও রিকশা চলাচল করছে। এছাড়া পণ্য পরিবহনের ট্রাক ও পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক আছে। মহানগরীর নওদাপাড়া আমচত্বর, গোরহাঙ্গা রেলগেট, সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট, তালাইমারীসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ যানবাহন চলাচল সীমিত করার চেষ্টা করছেন। এছাড়া কোথাও গণজমায়েত ঠেকানোরও চেষ্টা করছেন। যারা মাস্কছাড়া বাইরে বের হলে সতর্ক করছেন।

কিন্তু এরপরও মহানগরীজুড়ে অনেক মানুষের চলাচলও দেখা গেছে। কেউ অফিস কেউ ব্যক্তিগত কাজে ঘর থেকে বের হয়েছেন। অনেকে আবার সকালের নাস্তা ও বাজার করতে বের হয়েছেন। আবার অনেকে কেবল মহানগরীর লকডাউন পরিস্থিতি দেখার জন্যই বাইরে বের হয়েছেন। যদিও ক’রোনা সং’ক্র’মণের ঝুঁ’কি মো’কাবিলায় রাজশাহী জে’লাকেও লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এরই মধ্যে লকডাউন ঘোষণা করে জে’লা প্রশাসনের পক্ষ থেকেউ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।

জে’লা প্রশাসক স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রা’ণঘা’তী ক’রোনা ভাই’রাস সং’ক্র’মণ প্রতিরোধ করার জন্য সংক্রামক রো’গ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন-২০১৮ অনুযায়ী রাজশাহী জে’লাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এ জে’লার সঙ্গে অন্য জে’লার প্রবেশ ও বের হওয়ার সব ধরনের রাস্তাঘাট বা অন্য কোনো পথে জে’লার কেউ বাইরে যেতে পারবেন না কিংবা অন্য জে’লার কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। এই নির্দেশনা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। এ ক্ষেত্রে কেউ আইন ল’ঙ্ঘন করলে তার বি’রুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সব ধরনের গণপরিবহন, জনসমাগম বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি পরিষেবা, চিকিৎসাসেবা, কৃষিপণ্য, কৃষিকাজে নিয়োজিত সেবা, খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ ও সংগ্রহ ইত্যাদি এর আওতার বহির্ভূত থাকবে।

রাজশাহীর জে’লা প্রশাসক মো. আব্দুল জলিল জানান, সোমবার থেকে লকডাউন প্রশ্নে স’রকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য জে’লা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। এর আওতায় সোমবার থেকে সাত দিন লকডাউনের কারণে রাজশাহীতে কেউ প্রবেশ বা জে’লা থেকে বের হতে পারবেন না। লকডাউন কার্যকর করতে জে’লা নির্বাহী ম্যা’জিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সকাল থেকে মহানগর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আ’দালত পরিচালিত হছে। এছাড়া উপজে’লা নির্বাহী কর্মকর্তারা উপজে’লা পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আ’দালত পরিচালনা করছেন। কোথাও আইনি ব্যবস্থার নেওয়ার প্রয়োজন হলে নিচ্ছেন।

এ সময় স’রকারি নির্দেশনা মেনে জনসাধারণকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেন। এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে সর্বোচ্চ স্বা’স্থ্যবিধি মেনে চলার জন্যও সবার প্রতি আহ্বান জানান।