মাকে নিয়ে খুলনা ছাড়লেন সেই মরিয়ম

| আপডেট :  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৩:৫৯ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৩:৫৯ অপরাহ্ণ

টানা ২৯ দিন নি’খোঁজের পর উ’দ্ধার হওয়া মা রহিমা বেগমকে নিয়ে খুলনা ছেড়েছেন মরিয়ম আক্তার ওরফে মরিয়ম মান্নান। রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে মাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি। আর রাত আড়াইটায় তিনি ঢাকা পৌঁছান। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) মাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন মরিয়ম।

এদিকে খুলনা ছাড়ার বি’ষয়ে মরিয়ম মান্নান বলেন, রবিবার আ’দালত থেকে মাকে নিয়ে বের হওয়ার পর বয়রার বাসায় যাই আগে। তারপর মার জন্য খুলনা নিরাপদ মনে হয়নি। তাই রাতেই মাকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসি। সঙ্গে ছোট বোন আদুরী ও বড় দুলাভাইকে নিয়ে এসেছি। রাতের বেলা তাই ৩ জন নারীর জন্য বি’ষয়টি রিস্ক হবে ভেবে বড় দুলাভাইকে নিয়ে এসেছি। আমরা রাতেই নিরাপদে ঢাকার বসুন্ধরার বাসায় পৌঁছাই। তিনি আরও বলেন, সোমবার মাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়েছি। মায়ের চিকিৎসায় জো’র দেওয়া হয়েছে।

মরিয়ম এ সময় বলেন, পুরো ঘটনায় মায়ের কোনও ত্রুটি থাকলে সেটা শুধরে নেওয়া হবে। তবে মা ঠিক আছে, আমি জমি নিয়ে চিন্তিত নেই। মাকে চেয়েছি, মাকে পেয়েছি। আমি সন্তুষ্ট। তাই এখন মায়ের নিরাপত্তার বি’ষয়টি আমাদের ভাবতে হচ্ছে। তাই শুরুতেই খুলনা ছেড়ে ঢাকায় নিয়ে আসছি মাকে।

এরআগে, রবিবার বিকালে রহিমাকে আ’দালতে হাজির করা হয়। শুনানির পর তাকে নিজ মুচলেকায় মা’মলার বা’দী মেয়ে আদুরির জিম্মায় দেন আ’দালত। পরে তাকে বয়রা এলাকায় ছোট মেয়ে আদুরির বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।

বা’দীপক্ষের আইনজীবী আফরুজ্জামান টুটুল বলেন, ওই নারী আ’দালতকে তার অ’পহরণের বি’ষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, জমিজমা নিয়ে যাদের সঙ্গে বি’রোধ ছিল মূলত তারাই তাকে অ’পহরণ করে। পরে সেখান থেকে তিনি মুকসুদপুর ও ফরিদপুরে আসেন। মা’মলায় যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে ৪/৫ জন অ’পহরণের সঙ্গে জ’ড়িত।

এদিকে রহিমার পরিবারের দাবি, গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাড়ি থেকে নিচে নামেন তিনি। একঘণ্টা পার হলেও তিনি বাসায় ফিরে আসেননি। পরে স’ন্তানরা সেখানে গিয়ে মায়ের ব্যবহৃত স্যান্ডেল, গায়ের ওড়না ও কলস রাস্তার ও’পর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সব স্থানে সন্ধান নেওয়ার পর মাকে পান না তারা। এরপর স’ন্তানরা সাধারণ ডায়েরির পাশাপাশি কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মা’মলা দা’য়ের করেন।

এ মা’মলার ত’দন্তকালে পুলিশ ও র‌্যা’ব ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় জনকে গ্রে’ফতার করে। এরা হলেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, নি’খোঁজ গৃ’হবধূর দ্বিতীয় স্বামী হেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলা’শ, জুয়েল ও হেলাল শরীফ।

এ অবস্থায় বা’দীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ সেপ্টেম্বর আ’দালত মা’মলাটির ত’দন্তভার পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে নথিপত্র ১৭ সেপ্টেম্বর বুঝে নেয় পিবিআই। এখন এই মা’মলা ত’দন্ত করছেন পিবিআই পরিদর্শক আব্দুল মান্নান। ২২ সেপ্টেম্বর রহিমার মেয়ে মরিয়ম আক্তার ওরফে মরিয়ম মান্নান দাবি করেন, তার মায়ের লা’শ তিনি পেয়েছেন।

তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের ফুলপুরে দিনভর অবস্থান নেন এবং ব্যস্ততম সময় অতিবাহিত করেন। একইসঙ্গে সেখানে ১০ সেপ্টেম্বর উ’দ্ধার হওয়া অ’জ্ঞাত এক মহিলার লা’শকে নিজের মা বলে শনাক্ত করেন। পরে ডিএনএ প্রোফাইল করার জন্য সম্মত হন।