গার্ডার দুর্ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন বেঁচে ফেরা নবদম্পতি

| আপডেট :  ১৬ আগস্ট ২০২২, ০২:৫৫ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৬ আগস্ট ২০২২, ০২:৫৫ অপরাহ্ণ

উত্তরার জসীমউদ্‌দীন সড়কে বিআরটি প্রকল্পের একটি গার্ডার পড়ে ঘটা দু’র্ঘটনায় ৫ জনের মৃ’ত্যুর ঘটনায় ভাগ্য চ’ক্রে বেঁচে যান নবদম্পতি রেজাউল করিম হৃদয় (২৬) ও রিয়া মনি (২১)। বেঁচে ফিরলেও এতো বড়ো দু’র্ঘটনার শো’ক কাটিয়ে উঠতে পারছেন না তারা।

বেঁচে ফিরে হৃদয় ও রিয়া সে দুঃসহ ঘটনার বর্ণনা দেন। হৃদয় বলেন, আমরা যখন যাচ্ছি, তখন দেখেছি গার্ডারটা উপরে ঝুলছে। এর নিচে দিয়ে অনেক গাড়ি যাচ্ছে। সব গাড়ি যেহেতু যাচ্ছে, তাই আমরাও যাই। আমাদের আগের সবগুলো গাড়িও ওর নিচে দিয়ে যায়। কিন্তু আমরা যখন যেতে যাই, তখনই ওটা গাড়ির ঠিক ডান দিক বরাবর পড়ে। আর গাড়িটা মাটির সাথে দেবে যায়।

হৃদয় আরও বলেন, আমার বাবা ড্রাইভ করছিলেন। পেছনে ছিল আমার শ্বাশুড়ি, আমার স্ত্রীর খালা আর তার দুই স’ন্তান। আমার স্ত্রীও পেছনে ছিল কিন্তু ও বাম দিকে জানালার দিকে বসায় বেঁচে যায়, আমিও বাম দিকে ছিলাম। তবে ডান দিক বরাবর পড়ায় ওরা ঘটনাস্থলেই মা’রা যান।

হৃদয় বলেন, গার্ডারটা এমনভাবে পড়ে যে আমার পাশে সামান্য জায়গা ছিল। ফলে আমি নড়াচড়া করতি পারছিলাম। কিন্তু আমার পা আ’টকে যাওয়ায় পায়ে ব্যাথা পাই। কিন্তু রিয়ার পাশে কোনো জায়গা ছিল না। গাড়ি আর গার্ডারের মধ্যে রিয়ার পুরো শরীর আ’টকে গিয়েছিল। জ্ঞান থাকলেও আ’তঙ্কে চি’ৎকার করছিল ও। পরে আশপাশের মানুষ এসে আমাকে গ্লাস ভে’ঙে উ’দ্ধার করে। কিন্তু রিয়ার পরিস্থিতি এমন ছিল যে গ্লাস ভাঙা যায়নি। গাড়ির দরজা ভে’ঙে ওকে বের করার পর আমাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়।

এ নিয়ে রিয়া বলেন, আমাদের দুই ভাই-বোনকে ছোট থেকে বড় করার ব্যাপারে সম্পূর্ণটাই আমার মায়ের অবদান। সেই মাকেই এভাবে পৃথিবী থেকে চলে যেতে হলো।

ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিয়া বলেন, ওনারা কাজ করবে.. এতো ব্যস্ত একটা রোড। আল্লাহ না করুন ওখানে আমাদের গাড়ির বদলে অন্য কোনো গাড়িও থাকতে পারতো। এরকম ব্যস্ত রাস্তায় কাজ করবে, তাহলে সিকিউরিটি নেয়া অবশ্যই উচিত ছিল, রোড বন্ধ করতো। যে গাড়িটির (ক্রেন) কথা শুনলাম, শুনছি তাদের না আছে লাইসেন্স, না আছে সিকিউরিটি। তারা দুইটা টাকার লোভে এমন নর্মাল গাড়ি দিয়ে রাস্তায় কাজ করাবে। ঠিক আছে করাক, কিন্তু সিকিউরিটি কেনো রাখলো না?

প্রসঙ্গত, সোমবার (১৫ আগস্ট) উত্তরার জসীমউদ্‌দীন সড়কে বিআরটি প্রকল্পের একটি গার্ডার পড়ে প্রাইভেটকারের ৫ যাত্রী নি’হত হয়েছেন। নি’হতদের মধ্যে দুজন শি’শু ও একজন নারী। তবে ভাগ্যক্রমে এ ভ’য়বহ দু’র্ঘটনা থেকে বেঁচে যান নবদম্পতি রেজাউল করিম হৃদয় (২৬) ও রিয়া মনি (২১)। তবে এ ঘটনায় হৃদয়ের বাবা রুবেল হাসান (৫০), রিয়ার মা ফাহিমা (৪০), রিয়ার খালা ঝর্না (২৮), ঝর্নার মেয়ে জান্নাত (৬) ও ছেলে জাকারিয়া (৩) মা’রা যান।