সেই শিক্ষকের মৃ’ত্যু নিয়ে মুখ খুললেন তসলিমা নাসরিন

| আপডেট :  ১৫ আগস্ট ২০২২, ০১:৫১ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৫ আগস্ট ২০২২, ০১:৫১ অপরাহ্ণ

‘হ’’ত্যা’ নাকি ‘আত্মহ’’ত্যা’ শিক্ষক খাইরুন নাহারের লা’শ উ’দ্ধারের পর বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে,এবার বি’ষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন বি’তর্কি’ত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। গতকাল (রোববার) মধ্যরাতে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে খাইরুন নাহারের মৃ’ত্যু নিয়ে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তসলিমা নাসরিন। তার স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-

‘অধ্যাপক খায়রুন নাহারকে মনে হচ্ছে শ্বা’সরো’ধ করে হ’’ত্যা করেছে তার বয়সে ছোট স্বামী মামুন। স্বামী কেন বয়সে ছোট, এটি ছিল খায়রুনের অ’পরাধ। পুরুষেরা যখন বয়সে ছোট মেয়েদের বিয়ে করে, তখন তো সেইসব পুরুষকে মানুষ অ’পমান করে না! এখন তো লোকে বলবে, পুরুষকে স্ত্রীর চেয়ে বয়সে বড় হতেই হয়- এটিই সমাজের নিয়ম। না, এটি সমাজের নিয়ম নয়। এটিকে নিয়ম বানানো হয়েছে। কিন্তু এক তুড়িতে নিয়ম বদলে যেতে পারে। নিয়ম মানুষই তৈরি করে, নিয়ম মানুষই ভাঙে।

স্ত্রী বয়সে বড় হবে, এটি যদি মানতে না পারো, তাহলে তোমরা তোমাদের প্রিয় নবীর সঙ্গে বিবি খাদেজার বিয়েও মানো না। তোমরা তো তবে মু’সলমানই নও। তোমাদের নবী যে পথ দেখিয়ে গিয়েছেন, সেই পথেই তো হাঁটতে চাও। তাহলে স্বামীর চেয়ে বয়সে বড় স্ত্রীকে মেনে নিতে পারো না কেন? আমার মনে হয় না মানুষের মানা না মানা নিয়ে খায়রুন নাহারের কোনও স’মস্যা ছিল। তিনি সমাজের লোকদের বদ চরিত্রের কথা জেনেই তো মামুনকে বিয়ে করেছিলেন। এমন আত্মবিশ্বাস যার, তিনি আত্মহ’’ত্যা করবেন কোন দুঃখে!

ম’য়নাত’দন্ত বলছে, শ্বা’সরো’ধ করে হ’’ত্যা করা হয়েছে। মামুন সাহেব স্ত্রীকে হ’’ত্যা করে রাত ২টার সময় বাড়ি থেকে বেরিয়ে সকাল ৬টায় ফিরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না ঝু’লিয়ে আ’গুনে ওড়না আর ফ্যানের কিছুটা পু’ড়িয়ে একটি আত্মহ’’ত্যার দৃশ্য হয়তো সাজিয়েছেন। হয়তো রাতে যেখানে ছিলেন, সেখান থেকেই এই বুদ্ধিটা নিয়ে এসেছেন।

যেহেতু খায়রুনের ও’পর সমাজ ক্ষি’প্ত ছিল, মামুনকে বয়স্ক নারীর ভিক্টিম হিসেবে দেখেছে। তাই মামুনের শা’স্তি হোক তা হয়তো লোকেরা চাইবে না। ছলে-কৌশলে মামুনকে বাঁচাবার চেষ্টা চলবে।

প্রশ্ন হলো, মামুন কেন খু’ন করবে খায়রুনকে? খায়রুনের দয়ায় সে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানতো পেয়েছে। এমনকি মোটর সাইকেল পেয়েছে, পড়ালেখার খরচপাতি পেয়েছে। খায়রুন বেঁচে থাকলে আরও সুযোগ সুবিধা পেত। নিশ্চয় কোনও বদ উদ্দেশ্য তার ছিল খায়রুনকে হ’’ত্যা করার। আমি ভু’ল হতে পারি। কিন্তু খবর যা পেয়েছি, তা শুনে এমনই মনে হলো।’

উল্লেখ্য, ৪২ বছর বয়সী খাইরুন নাহার গুরুদাসপুরের খুবজিপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। ২২ বছরের মামুনের বাড়ি উপজে’লার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামে। তিনি নাটোর এন এস স’রকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।