সেই রাতের ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন স্বামী মামুন

| আপডেট :  ১৪ আগস্ট ২০২২, ০৬:০৭ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৪ আগস্ট ২০২২, ০৬:০৭ অপরাহ্ণ

কলেজছাত্রকে বিয়ে করে আলোচনায় আসা নাটোরের কলেজশিক্ষিকার ম’রদেহ উ’দ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (১৪ আগস্ট) সকাল সাতটার দিকে নাটোর শহরের বলারিপাড়া মহল্লার ভাড়া বাড়ি থেকে ম’রদেহটি উ’দ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তার স্বামী মামুন হোসেনকে (২২) আ’টক করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।

এর আগে মামুন বলেন, ওকে আমি নিষেধ করছিলাম ও’ষুধ খাইও না এভাবেই ঘুমাইয়া যাও, ঘুমাতে না পারলে জেগে থাকো। ও আমাকে বলল, আমাকে রিকোয়েস্ট কইরো না টেনশনের কারণে আমি দুইটা ঘুমের ও’ষুধ খাবই। ও’ষুধ খেয়ে আমি ঘুমাই।

তিনি আরও বলেন, ‘ও ও’ষুধ খেয়ে ঘুমানোর পর আমি নামাজের উদ্দেশে বের হয়েছি। পরে হঠাৎ করে মনে হলো ও আমাকে সাতটার সময় যাওয়ার কথা বলছিল। ও যেহেতু ঘুমের ও’ষুধ খাইছে ও সাতটার সময় উঠতে পারবে না। তাই আমি রিং দেওয়ার ট্রাই করি। তাহলে ও যাওয়ার সময় আমার জন্য খাবার-দাবার রেডি করে যাবে। ও ওর অফিসে যাবে আমিও আমার কলেজে যাব। আমি বারবার কল দিচ্ছিলাম, কল ঢুকতেছিল কিন্তু রিসিভ করতে ছিল না। তখন একটু ভয় হলো আমার।’

মামুন আরোও বলেন, ও (খায়রুন) সবসময় ডিপ্রেশনে থাকতো। আজ ৮ মাস ধরে বিয়ে করসি আমরা, আমি একটা দিনও এসে দেখলাম না যে ওর মুড ভালো। কিন্তু মুড খা’রাপের একটা দিনেরও কারণ আমি না। তার মুড খা’রাপ থাকতো কারণ তার আত্মীয়-স্বজন, কলিগরা ফোন দিয়ে বিভিন্ন কথা বলতো এসব কারণে। বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ কথা তাকে শুনতে হতো। সব পরিচিতরা যখন ব্রেন ট’র্চার করে তখন একজনের অবস্থা কি রকম হতে পারে সেটা তো সবাই বুঝে।’

নি’হত খাইরুন নাহার (৪০) গুরুদাসপুর খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন। মামুন (২২) নাটোর এনএস স’রকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

এলাকাবাসী জানান, রাত তিনটার দিকে শিক্ষিকার স্বামী মামুন এলাকাবাসীকে ডেকে জানান, তার স্ত্রী খায়রুন নাহার গ’লায় ফাঁ’স দিয়ে আত্মহ’’ত্যা করেছেন। এলাকাবাসী ছুটে গিয়ে তার ঘরের মেঝেতে ম’রদেহ দেখতে পান। এ বি’ষয়ে স’ন্দেহ হলে এলাকাবাসী মামুনকে আ’টকে রেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনার ঘটনাস্থলে পৌঁছে লা’শের সু’রতহাল রিপোর্ট তৈরি করে। পরে মামুনকে জি’জ্ঞাসাবাদের জন্য আ’টক করে।

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, আমরা প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। শিক্ষিকা ও ছাত্রের প্রেম কাহিনী ছড়িয়ে পরলে দুজনই বি’ষয়টিকে পজিটিভ নিয়েছিলেন। কিন্তু সামাজিক, পারিবারিক এবং কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় তাদের মধ্যে মা’নসিকচা’প সৃষ্টি হয়। মা’নসিকচা’পের কারণেই এই আত্মহ’’ত্যা কিনা তা ত’দন্ত করে দেখছি।

জানা গেছে, গুরুদাসপুর উপজে’লার খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোছা. খাইরুন নাহারের প্রথমে বিয়ে হয়েছিল রাজশাহীর বাঘায়। সেখানে তার এক স’ন্তানও রয়েছে। তবে পারিবারিক ক’লহে ওই সংসার বেশি দিন টেকেনি। তারপর কে’টে যায় অনেক দিন। এরই মাঝে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় ২২ বছরের যুবক মামুনের সঙ্গে।

ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ২০২১ সালের ২৪ জুন তাদের প্রথম পরিচয়। তারপর গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। তারপর ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সম্প্রতি তাদের বিয়ের বি’ষয়টি ছড়িয়ে পড়ে।