তিন বোতল ওষুধ খেয়ে বউ আর বাপের বাড়ি যায়নি!

| আপডেট :  ৯ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:০৬ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৯ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:০৬ পূর্বাহ্ণ

কুমিল্লার রানীর দিঘীর পাড়ে জিলা স্কুলের হোস্টেলে থাকার সময় প্রায় বিকেলেই আমি টাউন হল মাঠে চলে যেতাম। সেখানে লিটন মিয়া নামক একজন ক্যানভাসার এতো মোহনীয়ভাবে তার র’ক্তশোধন ঔষধালয়ের ও’ষুধ বিক্রির ক্যানভাস করতো যে তা বারবারই শুনতে ইচ্ছা করতো।

তার একটা টেকনিক ছিল সে নিজের কিছু এজেন্ট শ্রোতাদের মধ্যে মিশিয়ে রাখতো। প্রায়ই সে বলতো আগে যারা ও’ষুধ খেয়ে উপকার পেয়েছেন তারা হাত তুলেন। যারা হাত তুলতো তাদের মধ্যে থেকে দুতিনজনকে ডেকে মাইকের কাছে নিয়ে যেতো আর তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে বলতো।

কেউ বলতো সংসারটা ভে’ঙ্গেই যাচ্ছিলো, তিন বোতল এই ও’ষুধ খাবার কারণে বউ আর বাপের বাড়ি চলে যায়নি। কেউ বলতো দীর্ঘদিনের পে’টব্যা’থা, দুই বোতলেই শেষ, কেউ বলতো কত ডাক্তার যে দেখিয়েছি হাঁ’পানি ভালো করতে পারেনি, এক বোতল র’ক্তশো’ধন ও’ষুধ খেয়ে শ্বা’সক’ষ্ট যে ছিল সেটাই ভু’লে গেছি। ঠিক তারপরেই শুরু হতো ও’ষুধ বি’ক্রির ধুম। আমারে দুই বোতল, আমারে তিন বোতল কাড়াকাড়ি লেগে যেতো। পুরো খেলাটাই হতো পাতানো ছকে।

ঠিক একই টেকনিক এখন অনেক ক্যা’নভাসার ব্যাবহার করছে। পার্থক্যটা শুধু ওরা মাঠে লেকচার দিতো, আর এরা দেয় ইউটিউবে। ওরা ছিল ময়লা জামা পরা মহল্লার টাউট টাইপের লোকজন, এরাও টাউট তবে ফিটফাট শিক্ষিত। ওদের ও’ষুধ ক্রে’তারা ছিল আশেপাশের রিক্সা/ভ্যান/ঠেলা চালক আর এদের খদ্দেররা হলো ইন্টারনেট চালাতে পারা লোকজন।

ওদের এজেন্টরা ছিল লুঙ্গি পড়া নিম্নবিত্তের লোকজন, এদের এজেন্টরা ব্যবসায়ী, ভুমিপতি, প্রিন্সিপাল এসব উচ্চমার্গীয় পরিচয়ে পরিচিত। ওরা তাদের এজেন্টদের মাইকের সামনে নিয়ে যেত, আর এরা তাদের এজেন্টদের নিয়ে আসে ভিডিও ক্যামেরার সামনে।

আগে ওদের এজেন্টরা শ্রোতাদের মধ্যেই মিশে থাকতো ও’ষুধ খেয়ে উপকৃত হয়েছে ভান ধরে, আর এখনকার এজেন্টরা প্রশংসার ফুলঝুড়ি নিয়ে ফেসবুকে লুকিয়ে আছে নানা আইডি নিয়ে। সেই র’ক্তশোধনের ক্রেতারা ভাবতো ‘দেখিনা এক বোতল খেয়ে’, আর এদের রো’গীরা ভাবে ‘দেখিনা একবার গিয়ে’