বেপরোয়া জীবনযাপনে স্বামীর সঙ্গে দূরত্ব, প্রণয় স্থায়ী করতে ছাত্রকে বিয়ে

| আপডেট :  ১ আগস্ট ২০২২, ০৪:২৭ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১ আগস্ট ২০২২, ০৪:২৭ অপরাহ্ণ

ফেসবুকে পরিচয় ডিভোর্সি কলেজ শিক্ষিকা নাহারের সঙ্গে একই উপজেলার কলেজছাত্র মামুনের। প্রথমে দু’জনার বিষয়টি গোপন রেখেই এক বছর চলে এই অসম প্রেম। পরে দু’জনেই নিজেদের মধ্যে দূরত্ব ভুলে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। দু’জনের মতে বিয়ে করলেও গোপনেই চলতে থাকে তাদের পরিণয়। তবে সম্প্রতি ৬ মাসের লুকোচুরি কাটিয়ে শহরে বাসা নিয়ে সংসার করছেন ওই দম্পতি।

আর তারপরই বিষয়টি জানাজানি হলে আলোচনা আর সমালোচনায় রূপ নিয়েছে ৪৭ বছরের কলেজ শিক্ষিকা নাহারের সঙ্গে ২২ বছর বয়সী কলেজছাত্র মামুনের বিয়ে ও প্রেম কাহিনী। তবে বিয়েটি মামুনের পরিবার মেনে নিলেও মেনে নেয়নি নাহারের পরিবার। তাই নাহার এলাকা ও কর্মস্থল ছেড়ে এসে শহরে বাসা নিয়েছেন ওই দম্পতি। এদিকে এলাকা ও পরিচিতজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ভিন্ন কাহিনী। এই বিয়েকে ঘিরে এখন নানা কাহিনীও বেরিয়ে আসছে।

অনেকেই এটাকে নেতিবাচক ভাবে দেখছেন। এক সন্তানের জননী নাহারের আগের সংসার না টেকায় নেতিবাচক গল্প চাউর হয়ে উঠছে। তবে প্রেমিক দম্পতির দাবি তারা সুখে আছেন। সারাজীবন এভাবেই জীবন পার করতে চান। জানা গেছে, গত বছরের ১২ই ডিসেম্বরে গোপনে কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে করেন তারা। বিয়ের ৬ মাস পর সম্প্রতি তারা নাটোর শহরে একই বাসায় বসবাস করায় তা প্রথমে বন্ধু মহলে ও পরে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে জানাজানি হলে ছেলে মামুনের পরিবার বিয়েটি মেনে নিলেও শিক্ষিকা নাহারের পরিবার মেনে নেয়নি।

শিক্ষিকা মোছা. খাইরুন নাহার গুরুদাসপুরের খুবজিপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও গুরুদাসপুরের খামার নাচকৈড় এলাকার বাসিন্দা আর কলেজ ছাত্র মামুন হোসেন নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ওই শিক্ষিকা নাহার প্রথমে বিয়ে করেছিলেন রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার এক ছেলেকে। পারিবারিক কলহে সেই সংসার বেশিদিন না টিকলেও সেই স্বামীর ঘরে দুটি সন্তান রয়েছে। কলেজছাত্রকে বিয়ের বিষয়ে খাইরুন নাহার বলেন, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। সেই সময় ফেসবুকে মামুনের সঙ্গে পরিচয় হয়।

এরপর দু’জনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থেকে ভালোবাসা হয়। তারপর দু’জন সিদ্ধান্ত নিয়ে বিয়ে করি। সমাজে কে কী বললো তা বড় বিষয় না। যদি দু’জন ঠিক থাকি, তাহলে সব ঠিক। আমার পরিবার থেকে সম্পর্ক মেনে নেয়নি। মামুনের বাড়ি থেকে মেনে নিয়েছে। আমার শ্বশুর-শাশুড়িও আমাকে অনেক ভালোবাসে। অনেক সুখে আছি। মামুন বলেন, খাইরুনকে বিয়ে করে আমি খুশি এবং সুখী। সবার দোয়ায় সারাজীবন এভাবেই থাকতে চাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কলেজ শিক্ষিকা জানান, চাকরিজীবী স্বামী বাহিরে থাকায় কিছুটা বেপরোয়া জীবনযাপনের কারণে স্বামীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে নাহারের। তারই জেরে সংসার ভাঙে তাদের। এরইমধ্যে মামুনের সঙ্গে পরিচয় ও প্রণয় হলে সে আশ্রয় হিসেবে সম্পর্কটাকে স্থায়ী করতে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন।

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও ভাইরালও হয়েছে। এতে কেউ পক্ষে দোয়া আশীর্বাদ কামনা করে বাহবা দিয়েছেন আবার অনেকে কতোদিন টিকবে তাদের সংসার তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

এদিকে এ ব্যাপারে, খুবজীপুর মোজাম্মেল হক ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু সাইদ বলেন, খায়রুন নাহার আমার প্রতিষ্ঠানের দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। গতকাল ফেসবুকের এই খবর দেখে প্রথমে ঘটনা জানলাম। ওই শিক্ষিকা বছরখানেক আগে বলেছিলেন, তিনি নাটোর শহরে বাসা নিবেন। এতটুকুই জানতাম। কলেজে আসলে কথা বলে বিস্তারিত জানা যাবে।