‘মামিকে শেষ করে সব পাপ মুছে ফেললাম’

| আপডেট :  ২৭ জুলাই ২০২২, ০৮:৩৮ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৭ জুলাই ২০২২, ০৮:৩৮ পূর্বাহ্ণ

কি’শোরগঞ্জে প’রকীয়ার জের ধরে ৩ স’ন্তানের জননী রেকসোনা আক্তার (৩৫) কে গ’লা কে’টে হ’’ত্যার ঘটনায় দা’য়ের করা মা’মলায় আ’সামি গ্রে’প্তার ও আ’দালতে ১৬৪ ধারায় স্বী’কারোক্তিমূলক জ’বানব’ন্দি প্রদানসহ ৪৮ ঘণ্টায় চার্জশিট দেয়া হয়েছে। গত সোমবার মা’মলার একমাত্র আ’সামি মো. মামুন (৩০) কে অ’ভিযুক্ত করে আ’দালতে চার্জশিট দাখিল করেন ত’দন্তকারী কর্মকর্তা কি’শোরগঞ্জ সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মো. তরিকুল ইসলাম।

র আগে শনিবার রাতে নি’হত গৃ’হবধূ রেকসোনা আক্তারের স্বামী মো. তাইজুল বা’দী হয়ে দ’ণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় মো. মামুনকে আ’সামি করে কি’শোরগঞ্জ মডেল থানায় মা’মলা করেন। মো. মামুন কি’শোরগঞ্জ জে’লা শহরের চরশোলাকিয়া এলাকার সোহরাব উদ্দিনের ছেলে ও নি’হত গৃ’হবধূ রেকসোনার স্বামী তাইজুলের ভাগ্নে।

শনিবার দুপুরে ঘটনার পর পরই হ’’ত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত র’ক্তমাখা ছু’রি ও ক্রিকেট ব্যাটসহ তাকে গ্রে’প্তার করে পুলিশ। অন্যদিকে নি’হত রেকসোনা আক্তার জে’লা শহরের হারুয়া কলেজ রোড এলাকার একটি বাসায় স্বামী মো. তাইজুল ও ৩ শি’শুস’ন্তানকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন। সোমবার রাতে কি’শোরগঞ্জ সদর মডেল থানার গোলঘরে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান কি’শোরগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন হোসাইন।

এ সময় কি’শোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মাদ দাউদ ও মা’মলার ত’দন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মো. তরিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন হোসাইন জানান, ২০০৫ সালে তাইজুলের সঙ্গে রেকসোনার বিয়ে হয়েছিল এবং তাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। পেশায় রঙমিস্ত্রী ভাগ্নে মামুন পাশের ক্লাসিক গলির ভাড়া বাসায় থাকার সুবাদে মামা তাইজুলের বাসায় তার অবাধ যাতায়াত ছিল। একপর্যায়ে মামী রেকসোনার সঙ্গে মামুন প’রকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।

দীর্ঘদিনের প’রকীয়ার বি’ষয়টি দুই পরিবারে জানাজানি হলে ২০১৭ সালে মামুনকে বিয়ে করানো হয় এবং তার ৪ বছর বয়সী একটি স’ন্তান রয়েছে। কিন্তু বিয়ের পরও মামী-ভাগ্নের প’রকীয়া চলতে থাকে। একপর্যায়ে মামুনকে ছেড়ে তার স্ত্রী চলে যায়। এ রকম পরিস্থিতিতে প’রকীয়ার জাল ছিন্ন করতে চাইলেও মামী রেকসোনার কারণে মামুন তা পারেনি। এক সময় মামুন মামী রেকসোনাকে হ’’ত্যার পরিকল্পনা করে। এ জন্য সে শহরের একটি দোকান থেকে ছু’রি কিনে। গত শনিবার সংঘটিত হ’’ত্যাকাণ্ডের আগেও মামুন একবার রেকসোনাকে হ’’ত্যা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, মামুন তাদের বলেছে, ‘আমি অ’বৈধ সম্পর্ক শেষ করতে চেয়েছি। কিন্তু রেকসোনার জন্য পারিনি। আমি অনেক পাপ করেছি। রেকসোনাকে হ’’ত্যা করে সেই পাপ শেষ করলাম।’ মা’মলার ত’দন্তে নি’হত রেকসোনার সঙ্গে আ’সামি মামুনের প’রকীয়ার সম্পর্কের ফলে মামুনের নিজ পরিবারের ভাঙন ও টানাপড়েনের কারণে মামুন পরিকল্পিতভাবে একাই এ হ’’ত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে মন্তব্য করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন হোসাইন জানান, শনিবার দুপুরে রেকসোনা রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় ভাগ্নে মামুন ঘরে ঢুকে রেকসোনার সঙ্গে ঝ’গড়া শুরু করে। একপর্যায়ে মামুন ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে রেকসোনাকে আ’ঘাত করে এবং পরে ছু’রি দিয়ে তাকে জ’বাই করে।

এতে ঘটনাস্থলেই রেকসোনার মৃ’ত্যু হয়। ঘটনার পর পরই তড়িৎ অ’ভিযান চা’লিয়ে পরিহিত প্যান্টে র’ক্তমাখা অবস্থায় পুলিশ মামুনকে আ’টক করে। পরদিন রোববার আ’দালতে পাঠানোর পর বিকালে কি’শোরগঞ্জের সিনিয়র জু’ডিশিয়াল ম্যা’জিস্ট্রেট রাশেদুল আমিনের কাছে মামী হ’’ত্যার বিবরণ দিয়ে মামুন ১৬৪ ধারায় স্বী’কারোক্তিমূলক জ’বানব’ন্দি প্রদান করে।

পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার) এর নিবিড় তদারকিতে পুলিশ নিরবচ্ছিন্নভাবে সুষ্ঠু ত’দন্তে মা’মলার ঘটনা সংশ্লিষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ ও জ’ব্দকৃত আলামতসহ তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে দ্রুততম সময় অর্থাৎ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মা’মলার ত’দন্তকাজ শেষ করে আ’দালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। দ্রুততম এই সময়ের মধ্যে মা’মলার আ’সামি গ্রে’প্তারসহ ত’দন্তকাজ শেষ করে আ’দালতে চার্জশিট দাখিল করায় বা’দী মো. তাইজুল সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।