৬ মাসে কুরআনের হাফেজ হয়ে বাবার স্বপ্ন পূরণ করলেন আফ্ফান

| আপডেট :  ৩০ জুন ২০২২, ০৩:৩১ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৩০ জুন ২০২২, ০৩:৩১ অপরাহ্ণ

মাত্র ছয় মাসে পবিত্র কুরআন মাজিদ মুখস্থ করে হাফেজ হয়েছেন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার মো. আফ্ফান মিয়া (৯)।আফ্ফান উপজেলার দক্ষিণ শাহেদল গ্রামের মাহতাব উদ্দিন স্বপনের মেজো ছেলে। তিনি উপজেলার আল-জামিয়াতুল কাদিরিয়া ও শাহেদল এতিম খানা মাদরাসার ছাত্র।

এলাকাবাসী থেকে জানা যায়, হোসেনপুর বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী শাহেদল গ্রামের মাহতাব উদ্দিন স্বপনের তিন ছেল। স্বপনের ইচ্ছে একজনকে কুরআনের হাফেজ বানাবেন। সেই ইচ্ছে থেকে বড় ছেলেকে মাদরাসায় ভর্তি করিয়েও হাফেজ বানাতে পারেননি। তাই তিনি মেজো ছেলে মো. আফ্ফান মিয়াকে ভর্তি করান আল-জামিয়াতুল কাদিরিয়া ও শাহেদল এতিম খানা মাদরাসায়। বড় ভাই বাবার ইচ্ছে পূরণ না করতে পারলেও আফফান মাত্র ৬ মাসেই বাবার ইচ্ছে পূরণ করেছেন। আফ্ফানের সেই সাফল্যে বাবা-মাসহ পাড়াপ্রতিবেশী সবাই খুশি।

আফ্ফানের বাবা মাহতাব উদ্দিন স্বপনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হলে ছেলের এমন কৃতিত্বের কথা বলে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার বড় ছেলেকে কুরআনে হাফেজ বানাতে অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাকে হাফেজ বানাতে পারিনি। বড় ছেলে যখন পারেনি তাই আমার খুবই জেদ হলো যে মেজো ছেলেকেই হাফেজ বানাবো। আল্লাহ আমার ইচ্ছা পূরণ করেছে। তাই আমি মহান রাব্বুল আলামিন ও শিক্ষকদের কাছে কৃতজ্ঞ প্রকাশ করি। আমার ছেলের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।

আফ্ফানের শিক্ষক হাফেজ দিদারুল ইসলাম জানান, ৮ বছর বয়সে নূরানিতে ভর্তি হয়ে নূরানি পড়ার পর মাত্র ৩ মাস নাজেরা পড়ে (কুরআন দেখে পড়া) হেফজ ছবক নেয় আফ্ফান। হেফজ ছবক নেয়ার পর ৬ মাসে প্রতি দিন ৫/৬পৃষ্টা করে মুখস্থ করে ছবক দিত সে। এভাবে মাত্র ছয় মাসে পুরো কুরআন মুখস্থ করে ফেলে আফ্ফান। এখন প্রতিদিন সকালে আধা পারা, বিকালে আধা পারা করে মোট এক পারা করে আমাকে কুরআন মুখস্থ পড়ে শুনাচ্ছে আফ্ফান।

মাদরাসার মুহতামিম (প্রধান শিক্ষক) হাফেজ মাওলানা মুফতি আবুল কাশেম বলেন, এমন নজির খুবই কম। আফ্ফান তার মেধা ও কঠোর পরিশ্রমে তা সম্ভব করেছে। স্বাভাবিকভাবে অন্যদের ৩/৪ বছর বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও বেশি সময় লেগে যায় সেখানে আফ্ফান ৯ বছর বয়সে অল্প সময়ে পুরো কুরআন মুখস্থ করেছে। আমাদের মাদরাসার ইতিহাসে ৬ মাসে শুধু আফফান কুরআন মুখস্থ করেছে আর কেউ পারেনি।