প্রশ্ন ফাঁসের মূলহোতা, মাউশিতে ১০ বছর চন্দ্র শেখর হালদার

| আপডেট :  ১২ জুন ২০২২, ০৬:৫৮ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১২ জুন ২০২২, ০৬:৫৮ অপরাহ্ণ

বিশেষ প্রতিনিধি: ভারতে কিছুদিন আগে দুর্নীতিবাজ পিকে হালদারের ঘটনা দেশে বিদেশে আলোচনার ঝড় বইছে। এরই মাঝে চন্দ্র শেখর হালদার নামের এক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিয়েও তেমনি প্রশ্ন উঠেছে মাধ্যমিক ও উ”চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশিতে)। মাধ্যমিক ও উ”চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) মাধ্যমিক-২ শাখায় কর্মরত চন্দ্র শেখর হালদার। ১০ বছর যাবৎ আছেন একই¯স্থানে। ২০১৯ সালের আগে ছিলেন এমপিও দায়িত্বে। এসময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওর নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন চন্দ্র শেখর হালদার। এখন তিনি শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। এত টাকা পেলেন কোথায়? চন্দ্র শেখর হালদা কে যারা চেনেন জানেন তাদের মুখেই এমন হাজারও প্রশ্ন।

সম্প্রতি শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা ডিবি পুলিশ। এ্যাম্বুলেন্সে করে অভিনব কৌশলে প্রশ্ন পাচার করেছিল শিক্ষা কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর হালদারসহ কয়েকজন। এঘটনার পর মে মাসে ১৭- ১৮ তারিখ দুদিনের ছুটি নিয়ে চন্দ্র শেখর হালদার আর অফিসে আসেননি এবং মাউশিতে তার রুমে গিয়ে দেখা মেলেনি।

এই আসার কারণ হিসাবে জানাগেছে. ইডেন মহিলা কলেজসহ ৬১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রশ্নপত্রের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তাদের ধারণা তিনি এই সময়ের মাঝেই কৌশলে পালিয়ে কিংবা আতœগোপনে চলে গিয়েছিলেন। তবে কি প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনার মূলহোতা চন্দ্র শেখর হালদার? গোয়েন্দারা বলছে, সূত্র ওখানেই। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা গেলেই চক্রের সন্ধান মিলবে।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, চন্দ্র শেখর হালদার দীর্ঘ চাকরি জীবনে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। একাধিক বাড়ি ও ফ্লাট, জমি জমা নগন টাকা অনেক। টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনও করেছেন। ভারত কিংবা বিদেশে বাড়ি থাকলে মানিলন্ডারিং করেছেন। বর্তমান সরকারের আমলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ খুব একটা ওঠেনি। প্রশ্ন ফাঁসকারিরা শিক্ষাব্যব¯’ার নৈতিকভাবে দেউলিয়াই নয় সরকারকে বিব্রত অব¯’ায় ফেলেছে। গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় জড়িত চক্রের সন্ধানে অভিযান চলছে। সচেতন মহল বলছেন, নীতিনির্ধারকদের জড়িত থাকাটা দুখঃজনক। মূল কারিগর যদি প্রণয়নকারী হয় তবে তা আতœঘাতি। জাতিকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে, মাধ্যমিক ও উ”চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি)তে কর্মরত শিক্ষা কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর হালদার এমপিওভূক্ত সংক্রান্ত নথি আটকে রেখে সংশ্লিষ্টদের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। টাকার অংকের উপর ভিত্তি করে ফাইল নিষ্পত্তির সময় বাড়িয়েছেন এবং কমিয়েছেন । বৈধ অনুমোদন ছাড়াই এমপিও তালিকায় নাম অনেক প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত করেছেন তদন্ত হলে এমন ঘটনাও বেড়িয়ে আসবে । এই কর্মকর্তার এমপিওভুক্তির নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মূল দায়িত্বে থেকে কোটি কোটি টাকা বানিয়েই ক্ষান্ত হননি । এবার প্রশ্নপত্র ফাঁসেরও প্রধান তিনি। চন্দ্র শেখর হালদারের অনুপস্থিতিতই প্রশ্নের তীর ছুটে চলেছে তার দিকে।

আজিজুল ইসলাম নামের একজন শিক্ষক জানান, চন্দ্র শেখর হালদার আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে। আমি অনেক সুখি ছিলাম তার কারনে আমার সুখের সংসারটা তছনছ হয়ে গিয়েছে। মাউশির শিক্ষা কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর হালদারের বক্তব্য নিতে চাইলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। মাউশির পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন জানান, চন্দ্র শেখর হালদার গত ১৭-১৮ মে ছুটি নিয়েছিলেন। এখন তিনি নিয়মিত অফিসে আসেন।