লেখাপড়া বাদ দিয়ে সংসারের হাল ধরতে গিয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে সেই নয়ন

| আপডেট :  ৬ জুন ২০২২, ১০:১০ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৬ জুন ২০২২, ১০:১০ পূর্বাহ্ণ

সারাদেশ: পরিবারের বড় সন্তান অলিউর রহমান নয়ন লেখাপড়া করেছেন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত। বাবা দিনমজুর হাওয়ায় এবং সংসারের অভাব অনটনের কারণে আর লেখাপড়া করতে পারেনি নয়ন। জীবিকার তাগিদে চাকরি নেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে।

সব মিলিয়ে কোনরকম দিন কেটে যাচ্ছিল নয়নের ও তার পরিবারের। শনিবার (০৪ জুন) রাতে চট্টগ্রামের বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি নিজের ফেসবুকে লাইভ করছিলেন অলিউর রহমান নয়ন (২০)। লাইভ চলাকালীন হঠাৎ বিস্ফোরণ হয়। হাত থেকে ফোনটা পড়ে যায়। কয়েক মিনিট পর লাইভও বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ডিপোর বাইরে থাকা সহকর্মীরা খোঁজ করতে থাকেন। কিন্তু কোথাও তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।

শনিবার রাত ১টায় নয়নের সহকর্মী রুয়েল বলেন, ও আমার সঙ্গে কাজ করে। আমরা একসঙ্গেই থাকি। কত করে বললাম আমাদের সঙ্গে বাইরে চলে আসতে। কিন্তু সে এল না। লাইভ করার জন্য আগুন লাগা কন্টেইনারের পাশেই থেকে গেল। আমরা নিজের প্রাণ বাাঁচাতে পাশের টিলায় গিয়ে আশ্রয় নিই।

এরপর আর দেখা যায়নি নয়নকে। রোববার দুপুর ১২টার দিকে রুয়েলের কাছে খবর আসে নয়নের ক্ষতবিক্ষত লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাওয়া গেছে। রুয়েল জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা রওনা দেই চট্টগ্রামের দিকে। তার পরিবারের সবাই মৌলভীবাজার থেকে চট্টগ্রাম আসছেন লাশ নেওয়ার জন্য।

নয়নের মারা যাওয়ার খবর তার পরিবারের কাছে পৌঁছালে সেখানে নেমে আসে শোকের ছায়া।আত্মীয়-স্বজনরা বিলাপ আর আহাজারি করছেন। স্বজনদের কান্নায় এলাকার বাতাস ভারী হয়ে এসেছে। তার বাবা নিকটাত্মীয়দের নিয়ে লাশ আনতে চট্টগ্রামে রওনা হয়েছেন।

নয়নের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম হাসপাতাল থেকে ফোন দিয়ে তাদের জানানো হয়েছে নয়ন আর বেঁচে নেই। দ্রুত লাশ নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয় তাদের। নয়নের বাবা লাশ আনতে চট্টগ্রাম গিয়েছে। আজ সকালে বাড়িতে লাশ নিয়ে ফেরার কথা রয়েছে।