টাকা আয় নয়, মানবিক চিকিৎসক হতে চায় হারিছা

| আপডেট :  ১১ এপ্রিল ২০২২, ১০:১১ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১১ এপ্রিল ২০২২, ১০:১১ পূর্বাহ্ণ

বরিশালের বানারীপাড়া এলাকার দরিদ্র রিকশাচালক মিজানুর রহমানের মেয়ে সাদিয়া আফরিন হারিছা চান্স পেয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে। মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়ে আনন্দিত হওয়ার পরিবর্তে দুশ্চিন্তায় রয়েছে পরিবারটি।

মিজানুর রহমানের চার কন্যার মধ্যে হারিছা তৃতীয়। বাবা দরিদ্র রিকশাচালক হলেও সব সন্তানকে পড়ালেখা শিখিয়েছেন। বড় মেয়ে মাস্টার্স পড়ছে, মেজো মেয়ে ডিগ্রী এবং ছোট মেয়ে নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত রয়েছে।

হারিছা বলেন, ‘সকাল থেকে রিকশা চালিয়ে বাবা চাল নিয়ে আসতেন বিকালে। রান্না করে ভাত খেতাম সন্ধ্যায়, ক্লান্ত শরীরে রাতে পড়তে পারতাম না। তবু অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করে মেডিক্যালে ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। বাবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’

শুরু থেকেই হারিছার স্বপ্ন ছিল মানবিক চিকিৎসক হওয়ার। দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠার কারণে প্রাইভেট পড়া, এমনকি ঠিকমতো পড়াশোনা করার সুযোগ পায়নি মেয়েটি। তবে অদম্য মনোবল এবং স্কুল কলেজের শিক্ষকদের সহানুভূতি মেয়েটির স্বপ্ন পূরণে সহায়ক হয়েছে। বর্তমানে আর্থিক সংকট তার স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিল এই সংকট কেটে যাবে।

হারিছা জাতীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে এ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ ও ব্রোঞ্জ পদক এবং ৬৭টি সার্টিফিকেট পেয়েছেন হারিছা। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় ৩০০ নম্বরের মধ্যে ২৭৮ নম্বর পেয়েছেন।

হারিছা বলেন, ‘গর্ব করে বলি আমার বাবা একজন রিকশাচালক। দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার জন্য সরকারের সহযোগিতা করা দরকার। কারণ দেশে আমার মতো অনেক হারিছা রয়েছে। সরকার তাদের সহায়তা করলে কেউ চিকিৎসক, কেউ ইঞ্জিনিয়ার হবে।’

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির বিভাগীয় সমন্বয়ক অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, ‘হারিছার দাবিটা যৌক্তিক। হতদরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীরা যাতে হারিয়ে না যায় সেজন্য সরকারকেই উচ্চ শিক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে। হারিছার মতো শিক্ষার্থীদের পাশে সবাইকে দাঁড়াতে হবে।’