ছেলের কবরে মাথা ঠুকছেন বাবা, হাজারো চোখে অশ্রু

| আপডেট :  ১৬ মার্চ ২০২২, ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৬ মার্চ ২০২২, ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ণ

বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন হাদিসুর রহমান। জাহাজটি তুরস্ক থেকে রওনা হয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দর জলসীমায় নোঙর করে। ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হলে অলভিয়া বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। সেখানেই ২ মার্চ বিকেলে রকেট হামলায় হাদিসুর রহমান আরিফ নি.হ.ত হন।

পরবর্তীতে গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে হাদিসুরের লাশবাহী টার্কিশ এয়ারের ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তার লাশ বাড়িতে পৌঁছয় রাত ৯টা ৪০ মিনিটে। আর এরপরই কান্নায় ভেঙে পড়েন তার স্বজনরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাদিসুরের বাবা মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার বারবার মূর্ছা যেতে যেতে বলছেন, ‘বাবা, ও বাবা, ও হাদিস বাবা, একবার বুকে আয় বাবা। মোরে ওষুধ কিনে কে দিবে? তোর কবরে মোরেও নে বাবা। ‘ এই বলে বারবার ছেলের কবরে মাথা ঠেকাচ্ছেন।

এর আগে সকাল ১০টায় জানাজা সম্পন্ন হয় হাদিসুরের। এ সময় মানুষের ঢল নামে। জানাজার পূর্ব মুহূর্তে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, ‘প্রকৌশলী হাদিসুরের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। সরকার ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সব সময় হাদিসুরের পরিবারের পাশে থাকবে। ‘ এ সময় এক লাখ টাকার চেক দিয়ে পরিবারকে সহায়তা করেন তিনি।

ওইদিনর ঘটনাট বর্ণনা দিয়ে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের অপর এক ক্যাপ্টেন বলেন, ‘ঘটনার কিছু সময় পূর্বে হাদিসুর আসরের নামাজ পড়ে। এরপর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার জন্য জাহাজের ওপরে চলে আসে। কথা বলার কিছুক্ষণ পরেই রকেট হামলায় নি.হ.ত হয়। ’

জানাজা শেষে দাদা আতাহার উদ্দিন হাওলাদার ও দাদি মোসা. রোকেয়া বেগমের কবরের পাশে দাফন করা হয় হাদিসুরকে। এর আগে গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে হাদিসুরের লাশবাহী টার্কিশ এয়ারের ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তার লাশ বাড়িতে পৌঁছয় রাত ৯টা ৪০ মিনিটে।

মা আমেনা বেগম জানান, হাদিসুর রহমান গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। বাড়িতে এসে অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা-মাকে চিসিৎসা করান। সে সময় হাদিস বাবা-মাকে জানান, ঈদের আগেই বাড়িতে ঘর তোলা হবে এবং ঈদের পরেই বাবা-মায়ের পছন্দ অনুযায়ী বিয়ে করবেন।