যৌ’নপল্লি থেকে উঠে আসা অদম্য এক ‘বেগম রোকেয়া’

| আপডেট :  ৮ মার্চ ২০২২, ০১:১৪ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৮ মার্চ ২০২২, ০১:১৪ অপরাহ্ণ

মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিন স’ন্তানের জনকের সাথে বিয়ে হয়েছিল মর্জিনার। তবে শেষপর্যন্ত সংসার করা হয়নি বরং স্বামীর নি’র্যাতনে ফিরতে হয়েছিলো ফরিদপুরে নানার বাড়িতে। কিন্তু সেখানেও বাঁধে বিপত্তি। সেখানকারই এক দালাল তাকে সিরাজগঞ্জ প’তিতাপল্লিতে বিক্রি করে দেয়।

পরবর্তীতে ১৯৮৮ সালে সিরাজগঞ্জ থেকে দৌলতদিয়া যৌ’নপল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয় মর্জিনাকে। এরপর থেকে ছিলেন যৌ’নপল্লির অন্ধকার জীবনে। নি’র্যাতনের শি’কার হয়েছেন প্রতিদিন। তবে অদম্য শক্তিতে সে জীবন থেকে বেরিয়ে এসেছেন রাজবাড়ির মর্জিনা। আর আজও লড়ে যাচ্ছেন যৌ’নপল্লির নারী ও শি’শুদের জন্য। আদায় করেছেন শিক্ষা থেকে শুরু করে কবরস্থানে জায়গা পাওয়ার অধিকার।

একসময়ের সেই নি’র্যাতিত মর্জিনা প্রায় দুই যুগের চেষ্টায় এখন মুক্তি মহিলা সমিতির নির্বাহী পরিচালক। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ মর্জিনা ও তার সংগঠন অর্জন করেছেন জয়িতা সম্মাননা, কবি নজরুল সম্মাননা, স্বাধীনতা সং’সদ সম্মাননা ও শেরেবাংলা স্বর্ণপদক।

মূলত অধিকার আদা’য়ের লড়াইকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ১৯৯৮ সালে গঠন করেন মুক্তি মহিলা সমিতি। এই সংগঠনের আওতায় বর্তমানে ১৬০ জন শি’শুর পাঠদান ও যৌ’নকর্মীদের কারিগরি প্রশিক্ষণ চলছে। মর্জিনা জানালেন, এই সমিতিতে প্রশিক্ষণার্থী যৌ’নকর্মীদের হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল ইত্যাদি পালন, সেলাই ইত্যাদি প্রশিক্ষণ দিয়ে নারীদের যৌ’নবৃত্তি থেকে স্বাবলম্বী হতে সাহায্য করা হয়।

১৯৯৯ সালে সমাজসেবা, ২০০৯ সালে এনজিও ব্যুরো ও ২০১৮ সালে মহিলা বি’ষয়ক অধিদফতরের অনুমোদন পায় মুক্তি মহিলা সমিতি। রেজিস্ট্রেশনের পর বিভিন্ন দাতা সংস্থার অর্থ সহায়তায় যৌ’নপল্লির নারী ও শি’শুদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন মর্জিনা। জানালেন, এই উদ্যোগ নেয়ার পর থেকে নানা রকম বা’ধা এসেছে, এসেছে নি’র্যাতন। তবু তিনি চান কোনো বৈষম্যের শি’কার না হোক নারীরা। নিশ্চিত হোক শি’শুদের আলোকিত ও সুন্দর ভবি’ষ্যৎ।