নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করে ভাইরাল আ’লীগ নেত্রী রূপা

| আপডেট :  ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ১১:২৫ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ১১:২৫ পূর্বাহ্ণ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে অখ্যাত অনেকেরই রাতারাতি তারকা বনে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। কেউ ভাইরাল হন গান গেয়ে কেউবা অসাধারণ কৃতিত্ব দিয়ে। আবার স্ক্যান্ডাল ভাইরাল হয়েও তোলপাড় সৃষ্টি করতে দেখা গেছে অনেককে। সর্বশেষ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁ’স করে ভাইরাল হলেন আ’লীগ নেত্রী মাহবুবা নাসরীন রূপা।

ফেসবুকে অনেকেই রূপার ছবি শেয়ার করে প্রশ্নফাঁ’সের ক’ঠোর নি’ন্দা জানান। এর আগে শুক্রবার ভর্তি পরীক্ষা ও স’রকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁ’সের চ’ক্রের সঙ্গে জ’ড়িত থাকার অ’ভিযোগে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজে’লা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরিন রুপাকে গ্রে’ফতার করা হয়। তার বি’রুদ্ধে প্রতিরক্ষা মহা-হিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ের অধীনে ‘অডিটর’ নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁ’সে জ’ড়িত থাকার অ’ভিযোগ উঠেছে।

এদিকে প্রশ্নফাঁ’সে জড়িয়ে গ্রে’ফতার হওয়া মাহবুবা নাসরীন রূপাকে বগুড়া জে’লা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। জে’লা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আল রাজি জুয়েল রবিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন।

প্রশ্নফাঁ’সে রূপা গ্রে’ফতার হওয়ার বি’ষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। বহু মানুষ তার ছবি শেয়ার করে প্র’তিবাদের ঝড় তোলেন। এরপরই তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার খবর আসে।

কে এই রূপা?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্রলীগ ইডেন কলেজ শাখার সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক, বগুড়া জে’লা আওয়ামী লীগের সদস্য ও দুপচাঁচিয়া উপজে’লা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরীন রূপা দুপচাঁচিয়া উপজে’লার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত ভুঁইপুর গ্রামের মৃ’ত আতাউর রহমানের মেয়ে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি বড়। বাবা আতাউর রহমান দীর্ঘদিন ঢাকায় বেস’রকারি অফিসের নিরাপত্তা প্রহরীর চাকরি করতেন। গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে ঢাকায় বাবার কর্মস্থলে লেখাপড়া করেন। ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন রূপা।

২০১৮ সালের জাতীয় সং’সদ নির্বাচনের প্রাক্কালে তিনি হঠাৎ ঢাকা থেকে দুপচাঁচিয়ায় এসে ১৪ দল মনোনীত জাতীয় পার্টির সং’সদ সদস্য প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগে নামেন। ২০১৯ সালের মার্চে উপজে’লা পরিষদের নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার পর এলাকায় তার পরিচিতি প্রকাশ পায়। ঢাকার ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পরিচয়ে তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের আশীর্বাদ নিয়ে নির্বাচনে মাঠে নামেন। স’রকারি দলের পরিচয় দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বেশ কয়েকজন নারী প্রার্থীকে হা’রিয়ে তিনি উপজে’লা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই তার বাবা মা’রা যান।

এরপর শুরু হয় উপজে’লা আওয়ামী লীগের নেত্রী পরিচয়ে বিভিন্ন দফতরে তার দাপট। নির্বাচনে জিতে শপথ গ্রহণের পর উপজে’লা পরিষদের প্রথম মিটিংয়ে তিনি আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ইশারায় উপজে’লা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ নির্বাচিত হন। তিনি ভুঁইপুর গ্রামে না থেকে চাচা দেলোয়ার হোসেনের গোবিন্দপুরের পালিমহেশপুর গ্রামে থাকতেন। চাচার বাড়িতে থেকেই তিনি ভাই রকিবুল হাসান রকিকে সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, স’রকারের ও দলের শীর্ষ কয়েকজনের সঙ্গে থাকা ছবি দেখিয়ে তিনি এলাকায় প্রভাব সৃষ্টি করেন। তার হস্তক্ষেপে অনুপ্রবেশকারী নেতাদের নিয়ে দুপচাঁচিয়া উপজে’লা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্থানীয় নেতারা বলছেন, রূপা দলের প্রাথমিক সদস্য না হলেও উচ্চ মহলের চা’পে তাকে জে’লা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য পদ দেওয়া হয়।