‘ট্রান্সজেন্ডার সাদমুআকে’ যে কারণে ফ্ল্যাটে নিয়েছিলেন আরজে নীরা ও রিশু

| আপডেট :  ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ০৭:০৪ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ০৭:০৪ অপরাহ্ণ

ফেসবুকে সাদমান আফিফ ওরফে রিশুর সঙ্গে পরিচয় হয় ট্রান্সজেন্ডার নারী বিউটি ব্লগার সাদমুআ’র। পরিচয় সূত্র ধরে গত ১০ জানুয়ারি রাজধানীর ভাটারায় একটি রেস্টুরেন্টে দেখা করেন তারা। এরপর সাদমুআ’কে কৌশলে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ফুয়াদ আমিন ইশতিয়াক ওরফে সানির ভাড়া করা ফ্ল্যাটে নিয়ে যান রিশু। সেখানে ফুয়াদ, নীরা ও রিশু জো’রপূর্বক ভি’কটিমকে মা’রধর, শ্লী’লতাহা’নি ও যৌ’ন নি’পীড়ন করার পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করেন।

এসবই তারা করেছেন মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য। তারা ভি’কটিমের মোবাইল ফোন, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা ছি’নিয়ে নেন। আরও ১ লাখ টাকা দাবি করেন।কেবল তাই নয়, পুলিশ ও সা’মরিক বাহিনীর ভুয়া পরিচয়ে ভীতি প্রদর্শন ও ভু’ক্তভোগীকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরিয়ে রামপুরায় নামিয়ে দেয়।

চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত ওই ঘটনায় মূলহোতা ইশতিয়াক আমিন ফুয়াদসহ ৩ জনকে রাজধানীর ফার্মগেট ও মহাখালী থেকে গ্রে’প্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে র‍্যা’ব।রোববার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে কারওয়ান বাজার র‍্যা’ব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, গত ১০ জানুয়ারি রাজধানীর ভাটারা এলাকায় একজন খ্যাতনামা বিউটি ভ্লগার ট্রান্সজেন্ডার নারীকে যৌ’ন নি’র্যাতন ও হ’’ত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটে।ভিক্টিম একজন প্রতিষ্ঠিত কর্মজীবী। তিনি নিজ যোগ্যতা, অধ্যবসায় ও কর্ম’দক্ষ’তায় উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। তিনি দেশের প্রচলিত আইন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থার জায়গা থেকে স্ব-উদ্যোগে অ’পরাধীদের বি’রুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সচেষ্ট হন।

ঘটনার প্রেক্ষিতে ভু’ক্তভোগী গত শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মা’মলা দা’য়ের করেন। যার নম্বর ৩৫। মা’মলার প্রেক্ষিতে র‍্যা’ব গো’য়েন্দা নজরদারি বৃ’দ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় গো’য়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যা’ব সদর দপ্তর গো’য়েন্দা শাখা ও র‍্যা’ব-১ ও র‍্যা’ব-২ এর যৌথ অ’ভিযানে গতরাত থেকে আজ (রোববার) দুপুর ১টা পর্যন্ত রাজধানীর ফার্মগেট ও মহাখালী এলাকায় অ’ভিযান পরিচালনা করে ঘটনার মূলহোতা ফুয়াদ আমিন ইশতিয়াক ওরফে সানি (২১), সহযোগী সাইমা শিকদার নিরা ওরফে আরজে নিরা (২৩) ও আব্দুল্লাহ আফিফ সাদমান ওরফে রিশুকে (১৯) গ্রে’প্তার করা হয়।

অ’ভিযানে ভি’কটিমের ছি’নিয়ে নেওয়া আইফোন উ’দ্ধারসহ জ’ব্দ করা হয় প্র’তারণার কাজে ব্যবহৃত অ’বৈধ ওয়াকিটকি সেট, খেলনা পি’স্তল, মোবাইল ও অন্যান্য সামগ্রী। প্রাথমিক জি’জ্ঞাসাবাদে গ্রে’প্তারকৃতরা ঘটনার সম্পৃক্ততার বি’ষয়ে বিভিন্ন তথ্য প্রদান করে।গ্রে’প্তারকৃতদের জি’জ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তাদের একটি সংঘবদ্ধ অ’পরাধী চ’ক্র ছিল। গ্রে’প্তার ইশতিয়াক চ’ক্রের মূলহোতা এবং গ্রে’প্তার আরজে নীরা ও গ্রে’প্তার অপর সদস্য সাদমান আফিফ ওরফে রিশু তার অন্যতম সহযোগী।

গ্রে’প্তারকৃতরা বিগত প্রায় ২ বছর যাবত নানাবিধ কৌশলে জি’ম্মি, ব্ল্যা’কমেইল ও প্র’তারণা করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী-পুরুষদের অর্থ হাতিয়ে আসছিল। তারা সাধারণত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন জনের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে। অতঃপর কৌশলে বিভিন্ন সময়ের আ’পত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ভি’কটিমকে হে’নস্তা ও ব্ল্যা’কমেইল করে। অ’পকর্মের জন্য তাদের ভাড়াকৃত বাসা ব্যবহার করে থাকে। যেখানে জো’রপূর্বক আ’পত্তিকর ভিডিওগুলো ধারণ করে ব্ল্যা’কমেইল করা হতো।

এছাড়া অনলাইনেও ভি’কটিম’দের ফাঁ’দে ফে’লে। এসব অ’পকর্ম করার ক্ষেত্রে তারা নিজেদেরকে সে’না কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে ভুয়া পরিচয় দিয়ে আসছিল।

গ্রে’প্তারদের ট্রান্সজেন্ডার নারীকে হে’নস্তা ও নি’র্যাতন সম্পর্কে জি’জ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কিছুদিন পূর্বে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয় হয় রিশুর। পরিচয়ের সূত্রে ১০ জানুয়ারি ভাটারা বসুন্ধরা এলাকার একটি বেস’রকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রেস্টুরেন্টে ভি’কটিমের সঙ্গে সাক্ষাত করে রিশু। সেখান থেকে সারপ্রাইজ দেওয়ার কথা বলে কৌশলে ভি’কটিমকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইশতিয়াকের ভাড়াকৃত বাসায় নিয়ে যায়।

সেখানেই ৩ জন মিলে ভি’কটিমকে মা’রধর, শ্লী’লতাহা’নি ও যৌ’ন নি’পীড়ন করার পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করে। গ্রে’প্তার ইশতিয়াকের বি’রুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় দুটি মা’মলা রয়েছে। ইতোপূর্বে বিভিন্ন মা’মলায় তিনি কারাভোগ করেছেন। গ্রে’প্তারকৃতদের বি’রুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।