পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ছে কক্সবাজার

| আপডেট :  ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ

ক’রোনাভা’ইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন পরিস্থিতির অ’বনতি হওয়ায় আবারো পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ছে কক্সবাজার। ভিড় নেই সমুদ্রসৈকত, রেস্টুরেন্ট এবং পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পণ্যের দোকান ও স্পটগুলোতে। প্রতি বছর শীত মৌসুমে লাখো পর্যটক ভিড় করলেও এখন প্রায় জনশূন্য। পর্যটনের ভরামৌসুম হলেও ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়ে রুম বুকিং দেয়া হচ্ছে। তাতেও ৫০ শতাংশ রুমও বুকিং হচ্ছে না।

বিশ্বের দীর্ঘতম ‘সমুদ্রসৈকত’ যার অপরূপ সৌন্দর্য মুগ্ধ করে যে কাউকে। প্রকৃতির এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা। কিন্তু ক’রোনার দাপটের পর এ বছর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়া শুরু করলেও বর্তমানে ওমিক্রনের সং’ক্র’মণ বেড়ে যাওয়ায় স’রকারের নতুন নি’ষেধাজ্ঞার কারণে পর্যটক আসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে সমুদ্রসৈকত নগরী কক্সবাজার ঘিরে যাদের জীবিকা চলে, তারা পড়েছেন চ’রম বিপাকে।

পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলেন, নতুন নির্দেশনার কারণে পর্যটক কম আসছে। অন্য এক ব্যবসায়ী জানান, পর্যটক না থাকলে তো আমাদের ব্যবসা নেই। ওমিক্রনের কারণে মানুষ আ’তঙ্কিত। অনেকটা ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়াও ক’রোনা সং’ক্র’মণ বৃ’দ্ধি এবং যেকোনো মুহূর্তে লকডাউনের ঘোষণা আসতে পারে- এমন আ’তঙ্কে পর্যটকদের আনাগোনা কমে গেছে। পর্যটন মৌসুমে স্বাভাবিকভাবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়াও সবসময় অন্তত ৫০ শতাংশ রুম বুকিং থাকে। কিন্তু নতুন করে ক’রোনা সং’ক্র’মণ বেড়ে যাওয়ায় তা ২০ শতাংশে চলে এসেছে। আবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ৭০-৮০ শতাংশ রুম বুকিং থাকে। সে ক্ষেত্রেও ২০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। ফলে নতুন করে পর্যটন ব্যবসায় শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কলাতলী-মেরিনড্রাইভ হোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, স’রকার আবার কখন লকডাউন দেয় তা নিয়ে সাধারণ মানুষ আ’তঙ্কে আছে। এ কারণেও অনেকে আসার সাহস করছেন না। একই অবস্থা নামী-দামি হোটেল-রেস্তোরাঁয়ও। বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার রেডি করা হলেও ভোজনরসিক পর্যটকদের আনাগোনা কমে যাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। এমনকি নতুন করে লকডাউনের ঘোষণা এলে অনেকেই পুঁজি হা’রিয়ে আবারো পথে বসার উপক্রম হতে পারে- এ আ’তঙ্কে ছোট পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

কুটুমবাড়ি রেস্তোরাঁর চেয়ারম্যান, আশরাফুল ইসলাম রাকিব জানান, মাত্র ২১ দিন আগে কুটুমবাড়ি রেস্তোরাঁর একটি শাখা খোলা হয়েছে। কোটি টাকা ইনভেস্ট করে এখন শঙ্কায় দিন কা’টাচ্ছেন। ক’রোনা আ’তঙ্কের পর থেকে বেচাকেনা কমে গেছে।
হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, শুধু ক’রোনার কারণে নয়, বিভিন্ন কারণে পর্যটকদের আনাগোনা কমেছে। ক’রোনার পাশাপাশি এত দিন স্কুল খোলা ছিল, স্কুলের ট্যুরও বন্ধ। এখানে যারা আসেন বেশির ভাগ ফ্যামিলি ট্যুরে আসেন। সে হিসেবে ফ্যামিলির কেউ অ’সুস্থ হয়ে পড়লে আর আসা হয় না।

তিনি আরো জানান, মানুষের মধ্যে আ’তঙ্ক কাজ করছে। বিশেষ করে যারা আগে ক’রোনায় আ’ক্রান্ত হয়ে মৃ’ত্যুর সাথে লড়েছেন, তারা ভ’য়ে আসতে চায় না। হোটেল মোটেলে শুক্রবার ৪০ শতাংশ রুম বুকিং ছিল বলেও জানান তিনি।

এ দিকে ওমিক্রনের কারণে আ’তঙ্ক কাজ করলেও মাস্ক পড়া নিশ্চিত করাসহ স’রকারি নি’ষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে প্রতিদিন ৩-৪টি টিম নিয়ে প্রতিনিয়ত হোটেল মোটেল জোনসহ শহরের বিভিন্ন স্পটে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জে’লা ম্যা’জিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান। তিনি জানান, নিয়মিত অ’ভিযান হিসেবে স’রকার ঘোষিত স্বা’স্থ্যবিধি সঠিকভাবে পালন করা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে হোটেলগুলোতে অ’ভিযান অব্যাহত রয়েছে। কোনো বি’ষয়ে অসঙ্গতি পেলে জরিমানাও করা হচ্ছে।
বিশেষ করে পর্যটকদের মাস্ক ছাড়া সমুদ্রসৈকতে ঘুরাফেরা করতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি সচেতনতা বৃ’দ্ধির লক্ষ্যে মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে। মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে নিয়মিত মাইকিং করা হচ্ছে বলেও জানান অতিরিক্ত জে’লা ম্যা’জিস্ট্রেট। এ ছাড়া ট্যুরিস্ট পুলিশ জানায়, বর্তমানে অল্প কিছু পর্যটক এলেও তাদের স্বা’স্থ্যবিধি মানার বি’ষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে।