ভয়ে এলাকা ছাড়লো গাছিরা, গুড় তৈরি বন্ধ

| আপডেট :  ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ০৯:৪৪ পূর্বাহ্ণ

ঠাকুরগাঁও সদর উপজে’লার বোচা’পুুকুর এলাকার একটি খেজুরের বাগানে চার বছর ধরে শীত মৌসুমে রস থেকে গুড় উৎপাদন হচ্ছিলো। এবারো বাগানটি লিজ নিয়েছিলেন কয়েকজন গাছি। কিন্তু তারা গুড় উৎপাদন বন্ধ রেখে বাড়ি চলে গেছেন। চলে যাওয়া গাছিরা জানিয়েছেন, তারা চাঁ’দাবাজদের ভ’য়ে এলাকা ছেড়েছেন ।

জানা গেছে, বাগানটি ঠাকুরগাঁও সুগারমিলের। বাগানে রয়েছে ছোট বড় ৫০০ খেজুরগাছ। ২০১৮ সালে রাজশাহীর কয়েকজন গাছি বাগানটি লিজ নেয়। তারা রস সংগ্রহ করে গুড় উৎপাদন করে। এরপর প্রতিবছরই এখানে শীত মৌসুমে গুড় উৎপাদন হচ্ছিলো। জে’লার বিভিন্ন মানুষ ভিড় করতো বাগান দেখতে, খেজুরের রস খেতে কিংবা গুড় তৈরি দেখতে।

প্রতিবারের ন্যায় এবছরও রাজশাহীর গাছিরা এই বাগানে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি শুরু করে। তবে তাদের অ’ভিযোগ কিছু দিন আগে একদল যুবকের দেওয়া হু’মকির ভ’য়ে গুড় তৈরি বন্ধ করে তারা এলাকা ছেড়ে গেছে। শনিবার (২২ জানুয়ারি) সকালে খেজুরের গুড় তৈরির বি’ষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সেখানে গাছিদের দেখা পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় গাছি দলের প্রধান কারিগর সুজন আলীর সাথে।

এই বি’ষয়ে কারিগর সুজন আলী মুঠোফোনে জানান, কিছুদিন আগে রাতে কয়েকজন লোক এসে বিনামূল্যে খেজুরের রস খেতে চায়। তাদের রস খেতে না দিলে কথা কা’টাকাটি হয়। এতে তারা নানা রকম হু’মকি দেয়। রাতে এসে হ’’ত্যা করবে বলেও ভ’য় দেখায়।

সুজন আলী বলেন, ‘খেজুর বাগানে এক দুইদিন পর পর এসে তারা এভাবে চাঁ’দা দাবি করেন ও হু’মকি দেন। ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত তারা চাঁ’দা দাবি করেন। শেষ পর্যন্ত উপায়ান্তর না পেয়ে আমরা বা’ধ্য হয়ে গুড় তৈরির কাজ বন্ধ করে বাড়ি চলে আসি।,

চাদা দাবি করা ও হু’মকি প্রদানকারিদের পরিচয় জানতে চাইলে সুজন আলী জানান, চাঁ’দা দাবি করা ও হু’মকি প্রদানকারিরা রাতের অস্ধকারে আসতো, নাম পরিচয় জানতে চাইলে তারা পরিচয় দিতো না। তাই তাদের নাম ও পরিচয় জানা যায়নি।,

এবি’ষয়ে সুজন আলী স্থানীয় প্রশাসন বিভাগের কারও কাছে অ’ভিযোগ করেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, আমাদের বাড়ি অনেক দূরে। রাতে তারা যদি সেখানে আমাদের মে’রে ফেলতো কে আসতো আমাদের বাঁচাতে? তাই প্রা’ণের ভ’য়ে আমরা প্রশাসনকে বি’ষয়টি জানাইনি।,

তিনি বলেন, ‘আমরা মাঘ মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত খেজুর রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করতাম কিন্তু হু’মকি ও চাঁ’দা দাবি করার কারণে গত সপ্তাহে আমরা বাড়ি চলে আসি।, এই বি’ষয়টি শুনে স্থানীয়রা জানান, এটি খুব দুঃ’খজনক বি’ষয়। এতে কিছু অ’সাধু লোকের জন্য আমাদের জে’লার সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজে’লার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান বলেন, বি’ষয়টিকে অত্যন্ত দুঃ’খজনক। গাছিরা বি’ষয়টি যদি আমাকে অবগত করতো তাহলে তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতো। ভ’য় পেয়ে গাছিরা গুড় তৈরির কাজ বন্ধ না করে তাদের উচিত ছিলো প্রশাসনকে অবগত করা।

আগামিতে এরকম কোনো কিছু হলে ক’ঠোর হস্তে তা দ’মন করা হবে বলে জানান তিনি।