সব
রাজশাহীতে ১০ মাস বয়সী এক শিশুকে একসঙ্গে চার ডোজ টিকা প্রয়োগের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় চার স্বাস্থ্যকর্মীকে তাৎক্ষণিক সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রোববার (০৯ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। আজকের প্রত্রিকা
ছোটবনগ্রাম এলাকার শেখ রাসেল শিশু পার্কের পাশে আরবান ক্লিনিকে সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় ওই শিশুকে টিকা দিতে নিয়ে গিয়েছিলেন মা। সুমাইয়া খাতুন নামের শিশুটি নগরীর আসাম কলোনি এলাকার সাদ্দাম হোসেনের মেয়ে। গল্পের তালে থাকায় স্বাস্থ্যকর্মীরা সুমাইয়াকে চার ডোজ টিকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন মা। আর এতোগুলো টিকা হয়তো লাগবে ভেবে তিনিও কিছু বলেননি। পরে বিষয়টি সবাই বুঝতে পারেন। ডিবিসি টিভি
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যবস্থাপনায় নগরীতে ইপিআইয়ের এ টিকা প্রয়োগ করা হয়। রাসিকেরই স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা দিয়ে থাকেন। অতিরিক্ত টিকা প্রয়োগের ঘটনায় যাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে তারা হলেন-রাসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠকর্মী জোসনা, শিল্পী, তহমিনা ও সুপারভাইজার আজাহার আলী।
সুমাইয়ার বাবা সাদ্দাম হোসেন জানান, সুমাইয়াকে গত বছরের ২৩ জুন ইপিআইয়ের টিকার তৃতীয় ডোজ দেওয়া হয়। গত ১২ ডিসেম্বর চতুর্থ ডোজ দেওয়ার কথা ছিলো। তখন রাজশাহীতে না থাকায় টিকা দেওয়া হয়নি। গত বুধবার শিশুকে নিয়ে যাওয়া হলে এই কাণ্ড করে বসেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
সাদ্দাম বলেন, তার স্ত্রী সুমাইয়াকে বাড়ি নিয়ে আসার পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন স্ত্রীর কাছে জানতে চান শিশুকে কোন টিকা দেওয়া হয়েছে। স্ত্রী তখন টিকা কার্ড দেখান। কার্ডে সাদ্দাম দেখেন, এসব টিকা আগেই দেওয়া হয়েছে। আবার একসঙ্গে এত টিকা দেওয়ায় তিনি টিকাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে যান। কিন্তু প্রথমে তাকে পাত্তাই দেওয়া হয়নি। পরে ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশ ডাকেন। পুলিশ আসার পর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম সুমনও আসেন। তখন স্বাস্থ্যকর্মীরা ‘ভুল করে’ অতিরিক্ত টিকা দেওয়া হয়েছে বলে স্বীকার করেন।
সাদ্দাম হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘টিকা দেওয়ার সময় মোবাইলে কথা বলায় ব্যস্ত থাকার কারণে স্বাস্থ্যকর্মীরা এ ভুল করেন। এখন সুমাইয়ার শরীরে জ্বর।’ টিকা প্রদান কর্মসূচির সুপারভাইজার আজাহার আলী বলেন, ঘটনার সময় তিনি কেন্দ্রে ছিলেন না। তবে স্বাস্থ্যকর্মী রেজিস্ট্রার খাতা ও ট্যাব না দেখে বাচ্চাটিকে ভুল করে টিকা দিয়েছেন বলে তিনি শুনেছেন। দেশ রূপান্তর
বিকেলে শিশুটিকে দেখে আসেন রাসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসক সরকার বনি। তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। রাসিকের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন জানান, রাসিকের মেডিকেল অফিসার ডা. সরকার বনি শিশুটিকে দেখে এসে জানিয়েছেন, কোনো সমস্যা হবে না। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রাসিকের প্রধান কর্মকর্তা ডা. এফএএম আঞ্জুমান আরা বেগম জানান, ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আপাতত চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।