‘সত্যের জয় হবে’ বললেন মামুনুল হক

| আপডেট :  ২৪ নভেম্বর ২০২১, ০৭:১৩ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৪ নভেম্বর ২০২১, ০৭:১৩ অপরাহ্ণ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থা’নায় করা ধ’র্ষণ মা’মলায় হেফাজতে ইস’লামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হককে আগে বিভিন্ন সময় নারায়ণগঞ্জ আ’দালতে আনা হলেও সম’র্থকের তেমন উপস্থিতি দেখা যেত না। কিন্তু বুধবার (২৪ নভেম্বর) ছিল ব্যতিক্রম। মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জ আ’দালতে আনা হয়েছে—এ খবরে সকাল থেকেই তার সম’র্থকদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায় আ’দালতপাড়ায়। আ’দালতে অ’তিরিক্ত পু’লিশ মোতায়েন থাকলেও ভিড় করেন সম’র্থকরা।

বুধবার মামুনুল হকের উপস্থিতিতে কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী’ জান্নাত আরা ঝর্ণার সাক্ষ্য নেন আ’দালত। দুপুর ১২টা ২০ মিনিট থেকে ২টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জে’লা নারী ও শি’শু নি’র্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আ’দালতে এ সাক্ষ্য নেওয়া হয়।

আ’দালতে তোলার সময় সম’র্থকরা মামুনুল হককে উদ্দেশ্য করে সালাম দেন। একইসঙ্গে আ’দালত থেকে বের হওয়ার সময়ও আ’দালতের বারান্দায় অনেক সম’র্থন এগিয়ে আসেন বুক মেলানোর জন্য। তবে এসময় পু’লিশ তাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। কাউকে কাউকে বলতে শোন যায় ‘হুজুর ভ’য় নেই, আম’রা আছি আপনার সাথে’। অনেকে স্লোগান দেওয়ারও চেষ্টা করেন।

এসময় মামুনুল হক তার সম’র্থকদের উদ্দেশ করে বলেন, ‘তোম’রা সত্যের পথে থাকো। সত্যের জয় হবে’। যাওয়ার সময় বারবার সম’র্থকদের দিকে তাকাতে দেখা যায় হেফাজতের সাবেক এ নেতাকে।

আজ আ’দালতে বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিপি রকিবুদ্দিন আহমেদ। তাকে সহযোগিতা করেন নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহসীন মিয়া, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েলসহ কয়েকজন।

অ’পরদিকে আ’সামিপক্ষে ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মো. জয়নুল আবেদীন মেসবাহ ও নারায়ণগঞ্জ জে’লা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম ওম’র ফারুক নয়ন।

এর আগে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যদিয়ে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আ’দালতে আনা হয় মামুনুল হককে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আবার কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

নারায়ণগঞ্জ অ’তিরিক্ত পু’লিশ সুপার (ক-সার্কেল) নাজমুল হাসান জানান, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে আ’দালতে হাজির করা হয়। ২টায় সাক্ষ্য শেষে ফের কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হয়েছে।

আ’দালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রকিবুদ্দিন আহমেদ জানান, সাক্ষ্যগ্রহণের শুরুতে আ’দালত ঝর্নার মুখের হিজাব খুলতে বলেন। এসময় মামুনুল হক উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘শরিয়তের হুকুম, হিজাব খুলবে না ঝর্ণা।’ তবে ঝর্ণা একবার হিজাব খুলে বিচারককে মুখ দেখিয়ে ফের হিজাব দিয়ে মুখ ডেকে রাখেন। জেরা চলাকালীন ঝর্ণার দিকে বারবার তাকিয়েছেন মামুনুল হক।

গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওইসময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে মামুনুল হককে ঘেরাও করেন। পরে ওই রিসোর্টে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সম’র্থকরা এসে ব্যাপক ভাঙচুর করে মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়ে যান।

এ ঘটনায় গাড়ি ভাঙচুর, মহাসড়কে আ’গুন দিয়ে বি’ক্ষোভ, আওয়ামী লীগ কার্যালয়, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতার বাড়িঘরে হা’মলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। এক সাংবাদিককে পি’টিয়ে আ’হত করা হয়। এ ঘটনায় পু’লিশ বাদী হয়ে দুটি ও সাংবাদিক বাদী হয়ে একটি মা’মলা করেন। এর কিছুদিন পর স্থানীয়রা আরও তিনটি মা’মলা করেন। ছয়টি মা’মলার মধ্যে তিনটি মা’মলায় প্রধান আ’সামি মামুনুল হক।

গত ৩০ এপ্রিল বিয়ের প্রলো’ভনে দুই বছর ধরে ধ’র্ষণের অ’ভিযোগ এনে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বি’রুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থা’নায় মা’মলা করেন ওই নারী। তবে মামুনুল হক তাকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী’ দাবি করে আসছেন।