এবার খোঁজ মিলল যুবদল নেতার ট’র্চার সেলের ভ’য়াবহতার

| আপডেট :  ২৩ আগস্ট ২০২১, ০৪:১৪ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৩ আগস্ট ২০২১, ০৪:১৪ অপরাহ্ণ

নওগাঁর মহাদেবপুরে মিঠুন চৌধুরী (২৭) নামে এক নার্সারি ব্যবসায়ীকে ফুসলিয়ে অ’পহরণ করে ট’র্চার সেলে তিন দিন আ’টকে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নি’র্যাতন ও তার স্ত্রীর (২৫) চুল কর্তনের ঘটনার ৮ দিন পর অবশেষে থানায় মা’মলা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ অ’ভিযুক্ত যুবদল নেতা রুহুল আমিনের দুই স্ত্রী রুবাইয়া আকতার বৃষ্টি (২২) ও মুক্তা পারভীনকে (২১) গ্রে’প্তার করেছে। মহাদেবপুর থানার ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, রবিবার (২২ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় নি’র্যাতনের শি’কার মিঠুনের স্ত্রী বা’দী হয়ে মহাদেবপুর থানায় একটি মা’মলা দা’য়ের করেন।

রাতেই থানা পুলিশ রুহুলের বাসায় অ’ভিযান চা’লিয়ে তার দুই স্ত্রীকে আ’টক করে। কিন্তু মূল আ’সামি রুহুল পা’লিয়ে যায়। পুলিশ তার ব্যবহৃত কার জ’ব্দ করেছে ও ভু’ক্তভোগীদের স্বাক্ষর নেওয়া ফাঁকা স্ট্যাম্প উ’দ্ধার করেছে। মা’মলার অন্য আ’সামি হলো, রুহুলের সহযোগী পত্নীতলা উপজে’লার ছোট চাঁদপুর গ্রামের তরিকুল ইসলাম (৪০)। রুহুল মহাদেবপুর উপজে’লার দক্ষিণ হোসেনপুর বোয়ালমারী মোড়ের চাতাল ব্যবসায়ী মৃ’ত আবুল কালামের ছেলে ও উপজে’লা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।

মিঠুনের স্ত্রী জানান, অ’ভিযুক্ত রুহুল আমিন তাদের নার্সারি থেকে বিভিন্ন জাতের চারাগাছ কিনতেন। গত ১৫ আগস্ট সকালে রুহুল তার কাজ করার জন্য মিঠুনকে ডেকে নিয়ে জোড়পূর্বক তার গাড়িতে উঠিয়ে মহাদেবপুরে নিয়ে আসে। সেখানে তার বয়লারের সামনে অবস্থিত ট’র্চার সেলে তাকে আ’টকে রেখে মোবাইলে ১০ হাজার টাকা পাঠাতে বলে। তিনি তার শাশুড়ির গ’লার সোনার মালা বন্ধক রেখে বিকাশে ১০ হাজার টাকা পাঠান।

কিন্তু রুহুল ও তার লোকেরা আরো টাকা চায়। টাকা না পেয়ে তারা ধা’রালো অ’স্ত্র দিয়ে মিঠুনের পায়ের রগ কে’টে দেয়, প্লায়ার দিয়ে চিমটিয়ে হাতের আঙুল জ’খম করে, হা’তুড়ি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আ’ঘাত করে। তাকে ঠিকমত খেতেও দেওয়া হয়নি। তৃতীয় দিন ১৭ আগস্ট মিঠুনের স্ত্রী পত্নীতলা থেকে মহাদেবপুর থানার সামনে এসে এসআই সাইফুল ইসলামকে বি’ষয়টি জানিয়ে রুহুলের বয়লারে যান। সেখানে রুহুল ও তার দুই স্ত্রী তাকে বেদম প্রহার করে তার মাথার চুল কে’টে দেয়।

পরে এসআই সাইফুল সেখানে উপস্থিত হয়ে মা’রাত্মক আ’হত অবস্থায় স্ত্রী ও তার স্বামীকে রুহুলের ট’র্চার সেল থেকে উ’দ্ধার করেন। কিন্তু তিনি রুহুল বা তার দুই স্ত্রীর বি’রুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। আ’হত মিঠুন ও তার স্ত্রীকে পত্নীতলা উপজে’লা স্বা’স্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। বি’ষয়টি জানার পর মহাদেবপুরের একদল সংবাদকর্মী রবিবার (২২ আগস্ট) বিকেলে মিঠুনের বাড়িতে গিয়ে মা’রাত্মক আ’হত অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীকে বিছানায় শুয়ে য’ন্ত্রণায় কাতরাতে দেখেন।

তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বি’ষয়টি লাইভ দেখালে পুরো জে’লা জুড়ে বি’ষয়টি টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়। এরপরই থানা পুলিশ মিঠুনের স্ত্রীকে ডেকে এনে মা’মলা এন্ট্রি করে। ট’র্চার সেলে নি’র্যাতনের শি’কার অনেকেই তাদের ঘটনাও গণমাধ্যমে প্রকাশের অনুরোধ জানান।ভু’ক্তভোগীরা জানান, অ’ভিযুক্ত রুহুলের বয়লারে প্রায়ই মা’দকের ও গ্রুপ সে’ক্সের আসর বসতো। রুহুল তার কার ব্যবহার করে বিভিন্ন স্থানে মা’দকের চালান পৌঁছে দিত।

এসব কাজের বি’রোধিতা করলে তাকে নি’র্যাতনের শি’কার হতে হতো। রুহুল উপজে’লা যুবদলের সক্রিয় সদস্য হলেও সম্প্রতি ভিন্ন দলের একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় বে’পরোয়া হয়ে ওঠে। মা’দকের আসরে জি’ম্মি করে অনেকের সর্বস্ব হাতিয়ে নেওয়ারও অ’ভিযোগ করেছে ভু’ক্তভোগীরা। এদিকে মহাদেবপুর থানা পুলিশের বি’রুদ্ধে রুহুলকে পা’লিয়ে যেতে সহায়তার অ’ভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার দিন থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত পুলিশ এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

পুলিশি অ’ভিযানের কিছুক্ষণ আগেই রুহুল কারযোগে পা’লিয়ে যায়। পুলিশ কারটি জ’ব্দ করলেও রুহুলকে আ’টক করতে সক্ষম হয়নি। এ ব্যাপারে ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ বলেন, এক্ষেত্রে পুলিশের কোনো গাফলতি নেই। রুহুলকে আ’টকের জোড় তৎপরতা চা’লানো হচ্ছে বলেও তিনি জানান। সুত্রঃ কালের কণ্ঠ