নির্মাণকাজ শেষের আগেই দেয়ালে ফাটল, খসে পড়ছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের পলেস্তারা

| আপডেট :  ৭ জুলাই ২০২১, ০৬:২৫ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৭ জুলাই ২০২১, ০৬:২৫ অপরাহ্ণ

ফেনীর পরশুরামের বক্সমাহমুদ ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরগুলোর নির্মাণকাজ শেষের আগে দেয়ালে ফাটল ধরেছে। দেয়ালের আস্তরে ‘সিমেন্টের চেয়ে বালুর পরিমাণ’ বেশি থাকায় খসে পড়ছে পলেস্তারা। ঘরের চালে ব্যবহার হয়েছে নিম্নমানের কাঠ। নিম্নমানের ইট দিয়ে হচ্ছে গাথুনি ও মেঝে ঢালাইয়ের কাজ।

ঘরনির্মাণ সামগ্রী ও ঘরের বর্তমান কাঠামো দেখে স্থানীয়দের অভিযোগ, উদ্বোধনের আগে বা পড়ে যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে উপহারের ঘর। এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান। প্রকল্পের বিষয় নিয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অজিত চন্দ্র দেবনাথের সঙ্গে দেখা করতে রোববার তার কার্যালয়ে গেলে তিনি ছুটিতে রয়েছেন বলে জানান প্রকল্প সহকারী কর্মকর্তা মো. শাহ আলম। প্রকল্প সহকারী কর্মকর্তা মো. শাহ আলম বলেন, ‘স্যার অজিত চন্দ্র দেবনাথের বাবা পরলোক গমন করেছেন। আসামী ১৫ই জুলাই পর্যন্ত তিনি ছুটিতে থাকবেন।’

বক্সমাহমুদ আশ্রয়ণ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার (ইউপি সদস্য) ও বক্সমাহমুদ ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ উল্যাহ মামুন জানান, ‘তার তত্ত্বাবধানে ১৫টি ঘরের নির্মাণকাজ চলছে। তিনি সার্বক্ষণিক প্রকল্পের কাজ দেখাশোনা করছেন। সরকারিভাবে ঘরপ্রতি ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও ওই অর্থে ঘর করা সম্ভব না।’ ঘর নির্মাণকাজে অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রকল্পে দুর্নীতি কীভাবে হবে। এত অল্প টাকায় কি দুটি কক্ষ, রান্নাঘর ও টয়লেট নির্মাণ করা সম্ভব? দুর্নীতি যাই দূরে থাক বরং প্রকল্প শেষ করতে উল্টো নিজের পকেট থেকে টাকা খরচ হবে।’

বক্সমাহমুদ এলাকার ষাটোর্ধ্ব আবুল হাশেম বলেন, ‘ঘরগেন যেন্নে বানার হেন্নে কি মানুষ থাইকেতে হাইরবো? সব দু’ম্বরি কাম চলের। ভাঙ্গি যাইবো যে কোন সময়।’ এদিকে পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রিয়াঙ্কা দত্ত সঙ্গে গত রোববার তার কার্যালয়ে গিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি নির্মাণাধীন প্রকল্পের বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া তিনি কোনো ধরনের মন্তব্য করতে পারবেন না বলেও প্রতিবেদকে জানিয়ে দেন।

ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান জানান, ‘গত ৩রা জুলাই শনিবার অন্য একটি কাজে আমি পরশুরাম গিয়েছিলাম। ফেরার পথে আমি বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের আশ্রয়ণ ঘরগুলো পরিদর্শন করেছি। তবে তখন কাজের মান যাচাই করার কোনো উদ্যোগ ছিল না। ঘরগুলো নির্মাণকাজের সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে আগামী ২০শে জুলাইর মধ্যে কাজ শেষ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘নির্মাণকাজ নিয়ে আমার কাছে কেউ কোনো ধরনের অভিযোগ করেনি। নির্মাণকারী ব্যক্তি থেকে কাজ বুঝে নেয়ার সময় কাজের মান যাচাই করা হবে।’ সূত্রঃ মানব জমিন