নারীতেই ডুবল তাঁরা!

| আপডেট :  ৭ জুন ২০২১, ০৪:৩৬ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৭ জুন ২০২১, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ণ

পৃথিবীতে যতো সৃষ্টি চির কল্যাণকর/অর্ধেক তার গড়িয়াছে নারী অর্ধেক তার নর।’- কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই পঙতির কথা কে জানে। তবেও এ-ও সত্য নারীতে জয়, নারীতে ক্ষয়। কারো জীবনে নারী আসে আর্শীবাদ হয়ে, কারো অভিশাপ।দেশে এপ্রিল ও মে মাসে তিনটি নারীঘটিত আলোচনা বেশ তুঙ্গে। তিনজন মহারথির জীবনে তিনজন নারী এসে সব ত’ছনছ করে দিয়েছে। ঘটনা সত্য-মি’থ্যা সে আলোচনার পাশাপাশি এ-ও আলোচনা জায়গা করে নিয়েছে তিন নারীতেই ডুবে গেল তিন ‘টাইটানিক’।

ঘটনাগুলোর আগে তিনপুরুষই ছিলেন দেশকাঁপানো ব্যক্তিত্ব। জনপ্রিয়তা, ক্ষমতা ও খ্যাতিতে আকাশছোঁয়া। কিন্তু নারীঘটিত ঘটনাগুলোর পরে তাদের অবস্থান আর সেখানে নেই। ঘটনাগুলো থেকে কে কীভাবে উতরাবেন তা নিয়ে আলোচনার চাইতে কে কতটা ডুবলেন তাই আলোচনা হচ্ছে। আলোচনা চলবে আরও অনেকদূর।

আল্লামা মামুনুল হক। হেফাজত ইসলামের যুগ্ম-স’চিব। যদিও পরবর্তীকালে হেফাজত ইসলামের সে কমিটিও বিলুপ্ত হয়। সংগঠনে ও সংগঠনের বাইরে প্রচণ্ড প্র’তাপশালী একজন নেতা ও ইসলামিক আলোচক। কিন্তু চলতি বছরের ৩ এপ্রিল শনিবার স্ত্রী পরিচয়ে জান্নাত আরা ঝর্ণা নামের এক না’রীকে নিয়ে অবকাশ যাপনের সেই লঙ্কাকা- এখনও অনেকেই ভু’লে যাবার কথা নয়। পরবর্তীতে কালে সে ঘটনার জল আরও বহুদূর গড়ায়। এ ঘটনা দিয়ে মামুনুল হকের জীবনে শনির দশা শুরু হয়।

শুধু মামুনুল হক নন, পরবর্তীকালে এ ঘটনার খেসারত দিতে হয় হেফাজত ইসলামকেও। বেরিয়ে আসে আরো নানা ঘটনা। শেষ পর্যন্ত গ্রে’ফতার হন মামুনুল হক। সেই না’রী জান্নাত আরা ঝর্ণাই প্রথমে তার বি’রুদ্ধে মা’মলা করেন। এরপর আরো অনেক ঘটনা বেরিয়ে আসে মামুনুল হকের। মা’মলার পরে মা’মলা। তিনি এখন কা’রাঅন্তরীন।

সায়েম সোবহান আনভীর। দেশের সর্ববৃহৎ বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। কুমিল্লার মোশারাত জাহান মুনিয়া নামের এক কলেজপড়ুয়া নারীর মৃ’ত্যুর সঙ্গে জড়িয়ে যায় তার নাম।
চলতি বছরের ২৬ এপ্রিল রাতে রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানের একটি বাড়ি থেকে তার লা’শ উ’দ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সায়েম সোবহান আনভীরকে দায়ী করেন নি’হত মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান। তিনি গুলশান থানায় আত্মহ’ ‘ত্যার প্ররোচনার অ’ভিযোগে একটি মা’মলাও করেন। দেশজুড়ে শুরু হয় নানা আলোচনা।

প্রচ- ক্ষমতাধর ও বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েও সায়েম সোবহান আনভীর বে’কায়দায় পড়েন। তার জীবনে নেমে আসে টাইটানিকের মতোই এক বি’ভীষিকাময় সময়।
মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের তিনবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর। বিএনপির রাজনীতির সাথে জ’ড়িত এই নেতা ক’রোনাকালে সাহসী ভূমিকা রেখে দেশে ও আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেন। ক’রোনাকালে একটি টিম গঠন করে হিন্দু-মু’সলিম-নারী-পুরুষ এমনকি জে’লার বাইরেও দাফন করে গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়ে উঠে আসেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে হয়ে উঠেন-‘দেবদূত’।

কিন্তু হঠাৎ করে তার জীবনেও নেমে আসে বি’ভীষিকাময় অমানিষা। সাইদা শিউলী নামের এক না’রী দাবি করেন তাকে বিয়ে করেছেন মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ। ব্যস, শুরু হয়ে গেল। সাধারণ মানুষের চোখে দেবদূত থেকে নেমে আসেন ধরায়। শুরু হয় নানা আলোচনা।

যদিও মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ দাবি করছেন, তিনি বিয়ে করেননি। এমনকি তার সাথে একমত পোষণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে বক্তব্য রাখেন তার স্ত্রী আফরোজা খন্দকার লুনা-ও।

তবুও ঘটনা থেমে থাকেনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘মা’নহা’নি’ করা হয়েছে এমন অ’ভিযোগে গত ১৭ মে মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ ও আরেকজন না’রীর বি’রুদ্ধে আইসিটি আইনে মা’মলা করেন শিউলি নামের ওই নারী। মা’মলার পর থেকে মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না।

উপরের তিনটি ঘটনায় মা’মলা হয়েছে। পুলিশি ত’দন্ত চলছে। ত’দন্তে কী ফল আসবে তা এখনও অজানা। কিন্তু ঘটনার পর থেকে সাধারণ মানুষের ত’দন্তে তিনজন পুরুষ যে ডুবেছেন তা প্রায় স্পষ্ট। ঘটনার আগের ও পরের চিত্র আকাশ-পাতাল। পক্ষে-বিপক্ষে নানা মন্তব্য হলেও তিন নারী যে তাদের জীবনের সেরা অঘটনা তাতে কোনও স’ন্দেহ নেই।