প্রকাশ্যে দু’র্বৃত্তের গু’লিতে নি’হত ‘বাবা হুজুর’, আস্তানায় পাওয়া গেল সহস্রাধিক জ্বীন!

| আপডেট :  ২৬ মে ২০২১, ০৪:২২ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৬ মে ২০২১, ০৪:০১ অপরাহ্ণ

বগুড়ায় দু’র্বৃত্তের গু’লিতে নি’হত মোজাফ্ফর হোসেন ওরফে বাবা হুজুরের আস্তানায় পাওয়া গেছে সহস্রাধিক কথিত জ্বিন। আধ্যাত্মিক সাধনার মাধ্যমে কথিত এসব জ্বিনদেরকে দীর্ঘ দিনব’ন্দী করে রাখা হয়েছে কাঁচের বয়ামে। বাবা হুজুর জ্বিনের সাধনা করতেন। আর এসব জ্বিনদেরকে বশ করার মাধ্যমে তার আস্তানায় আসা লোকজনের বিভিন্ন স’মস্যার সমাধানের নামে হাতিয়ে নিতেন হাজার হাজার টাকা।

এদিকে মোজাফফর হোসেন (৬০) ওরফে বাবা হুজুরকে প্রকাশ্যে গু’লি করে হ’’ত্যার তিন সপ্তাহেও কোন ক্লু বের করতে পারেনি পুলিশ। গত ৪ মে সকাল ১০ টার দিকে বগুড়া -নাটোর মহাসড়কে শাজাহানপুর থানার জোড়া নামক স্থানে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা থামিয়ে অন্যান্য যাত্রীদের সামনে গু’লি করে হ’’ত্যা করা হয়।

বাবা হুজুর হ’’ত্যার কারন অনুসন্ধান করতে গিয়ে পুলিশ তার সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য পেয়েছেন। কোরআনের হাফেজ এবং তার পরিচালনায় একটি কওমি মাদ্রাসা থাকলেও তিনি কখনও নামাজ পড়তেন না। এমনকি রমজান মাসেও তিনি রোজা রাখতেন না বলে জানিয়েছেন তার সহকারি মাওঃ মাহবুব হোসেন।

জ্বিন হাজিরের মাধ্যমে অন্যের সংসার ভাঙ্গা এবং জোড়া লাগানোর কাজ করলেও তার নিজের মেয়ের সংসার জোড়া লাগাতে পারেন নি তিনি। তার প্রথম স্ত্রীর মেয়ের সংসার ভেঙ্গে গেলে আবারো অন্যত্র বিয়ে দেয়া হয় তাকে। বাবা হুজুর সম্পর্কে আরো জানার জন্য পুলিশ মাওঃ মাহবুবকে জি’জ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছেন।

বাবা হুজুরের আস্তানায় গিয়ে দেখা গেছে,এক হাজারের বেশী ছোট-বড় কাঁচের বয়াম। যার প্রত্যেকটি গামছা দিয়ে মুড়িয়ে টাইট করে বেঁ’ধে বস্তাব’ন্দী করে রাখা হয়েছে। সহকারি মাওঃ মাহবুব জানান প্রত্যেকটি বয়ামে বাবা হুজুরের অনুগত জ্বিন ব’ন্দী করে রাখা আছে। এসব জ্বিনকে ব্যবহার করে তিনি মানুষের স’মস্যার সমাধান দিতেন। বাবা হুজুর খু’ন হওয়ার পর তার সহকারির কাছে এখনও বিভিন্ন এলাকার মানুষ বিশেষ করে নারীরা ফোন করেন বিভিন্ন স’মস্যার সমাধানের জন্য।

বাবা হুজুরের আস্তানায় আসা লোকজন জানান, পারিবারিক কলোহ, প্রেম ভালবাসা, স্বামী, স্ত্রীকে বশ করা, সংসার ভাঙ্গা কিম্বা টিকিয়ে রাখার জন্য জ্বিনের মাধ্যমে তাবিজ দিতেন বাবা হুজুর। তার আস্তানায় যাতায়াতকারীদের মধ্যে নারীর সংখ্যাই ছিল বেশী। তবে প্রেম এবং আইপিএল এর জু’য়া খেলায় জ’ড়িত অনেক যুবকও আসতো তার আস্তানায়।

বাবা হুজুর খু’নের পর গত তিন সপ্তাহে গো’য়েন্দা পুলিশ বিভিন্ন দিক অনুসন্ধান করেও কোন ক্লু পায়নি। এমনকি তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করেও খু’নের সাথে জ’ড়িতদের সনাক্ত করতে পারেনি। তবে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, চাঞ্চল্যকর এই খু’নের সাথে কোন ইসলামী জ’ঙ্গি সংগঠনের হাত আছে কি না, সে বি’ষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

বাবা হুজুরের দুই স্ত্রী নিয়ে বি’রোধ, মেয়েকে ২য় বিয়ে দেয়া নিয়ে বি’রোধ, জ্বিন হাজিরের মাধ্যমে তাবিজ বিক্রি করা নিয়ে বি’রোধ, আইপিএল জু’য়া খেলা নিয়ে ভবি’ষ্যৎ বানী করার বি’ষয় গু’লি অনুসন্ধান করেও কোন ক্লু পাওয়া যায়নি। নি’হত বাবা হুজুর হাফেজ হওয়া সত্বেও নামাজ পড়তেন না। এবি’ষয়টি মাথায় রেখে পুলিশ এখন খু’নের সাথে জ’ঙ্গি কানেকশন আছে কি না সে বি’ষয়ে অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছেন।

তবে বগুড়া জে’লা গো’য়েন্দা পুলিশের অফিসার ই’নচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন চাঞ্চল্যকর এই হ’’ত্যা মা’মলা নিয়ে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ডি’বি ও থানা পুলিশ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। ত’দন্তের স্বার্থে অনেক কিছু প্রকাশ করা যাচ্ছে না। খুব শীঘ্রই বাবা হুজুর হ’’ত্যার সাথে জ’ড়িতরা গ্রে’ফতার হবে।