বায়ান্ন বাজার তেপ্পান্ন গলির মুনিয়ার বোন ও ভগ্নিপতির লোভেই সর্বনাশ

| আপডেট :  ২ মে ২০২১, ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২ মে ২০২১, ০৮:২৮ পূর্বাহ্ণ

রাজধানীর গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে গত ২৬ এপ্রিল ম’রদেহ উ’দ্ধার হওয়া মোসারাত জাহান মুনিয়া (২১) সম্পর্কে বহু তথ্য এসেছে পুলিশের কাছে। পুলিশ প্রাপ্ত তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে এসব ঘটনার সঙ্গে মুনিয়ার আত্মহ’’ত্যার সংযোগ আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে।

এদিকে নি’হত মুনিয়ার বড় চাচা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মো. শাহদাত হোসেন সেলিম দাবি করেছেন, আমার ভাতিজি নুসরাত জাহান ও তার স্বামী মেঘনা ব্যাংকের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান সানির অতি লোভের বলি হয়েছে মুনিয়া। তারা মুনিয়াকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। আমাদের সঙ্গেও মিশতে দিত না।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণের জাঙ্গালিয়া দৈয়ারা গ্রামের ছেলে মিজানকে ‘অসভ্য’ অভিহিত করে মুনিয়ার চাচা সেলিম বলেন, ‘পরিবারের অমতে নুসরাত বিয়ে করে মিজানকে। এরপর সে আমার ছোট ভাতিজি মুনিয়াকে দিয়ে ধন-সম্পদ অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করে। যার পরিণতিতে আজ মুনিয়ার করুণ মৃ’ত্যু হয়েছে।’

নি’হত মুনিয়ার স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার মনোহরপুর এলাকার উজির দীঘির দক্ষিণপাড়ে। ওই বাড়িতে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মুনিয়া নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় কুমিল্লা শহরের ৬নং ওয়ার্ডের শুভপুর এলাকার নিলয় নামে এক যুবকের সঙ্গে পা’লিয়ে যায়। নিলয় বিবাহিত, দুই স’ন্তানের জনক। কিন্তু মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বা’দী হয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় নিলয়কে আ’সামি করে নারী ও শি’শু নি’র্যাতন দ’মন আইনে মা’মলা করেন।

ঘটনাটি ২০১৪ সালের। ওই সময় মুনিয়ার মা-বাবা জীবিত ছিলেন। ওই মা’মলায় বলা হয়, ‘আমার অপ্রাপ্ত বয়স্ক বোনকে ফুসলিয়ে অ’পহরণ করে অ’জ্ঞাত স্থানে নিয়ে তার সম্ভ্রম লু’টসহ জানমালের ভ’য়াবহ ক্ষ’তির শঙ্কা করছি। অবিলম্বে নিলয়কে গ্রে’প্তারপূর্বক মুনিয়াকে উ’দ্ধারকল্পে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানাচ্ছি।

ওই মা’মলার সাড়ে তিন মাস পরে কুমিল্লার কোতোয়াাল থানা পুলিশ ফেনীতে নিলয়ের এক আত্মীয় বাড়িতে অ’ভিযান চা’লিয়ে উ’দ্ধার করে আনে মুনিয়াকে। পরে স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় গ্রাম্য বৈঠকে মোটা অঙ্কের জরিমানা আদা’য়ের মাধ্যমে নিলয়-মুনিয়ার বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটানো হয় এবং যে যার পরিবারে ফিরে যায়। এরপর নুসরাত ঢাকায় পাঠিয়ে দেন মুনিয়াকে।

মুনিয়ার বড় ভাই আশিকুর রহমান সবুজ বলেন, মুনিয়া ঢাকায় এসে একটি নারী হোস্টেলে থাকতো।
মুনিয়ার একাধিক আত্মীয় বলেন, এ সময় তার বড় বোন নুসরাতের উৎসাহে ও জনৈক হিরু মিয়ার মাধ্যমে শোবিজ জগতে যাতায়াত শুরু হয় মুনিয়ার। তার সঙ্গে পরিচয় হয় সিনেমার একজন পরিচিত নায়কের। এছাড়া একজন পরিচালক তাকে নায়িকা বানানোর স্বপ্ন দেখিয়ে ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে নিয়ে যান।