নিন্ম আ’য়ের মা’নুষের জন্য ই’ফতারের আ’য়োজন ভ’ণ্ডুল করে দিলেন আ.লীগ স’ভাপতি

| আপডেট :  ২৫ এপ্রিল ২০২১, ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৫ এপ্রিল ২০২১, ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ণ

কখনো উত্তরের বানভাসি মানুষের পাশে, আবার কখনো দক্ষিণে সাহায্য হাতে রো’হিঙ্গা ক্যাম্পের দুঃখীদের কাছে। তাঁর ভালোবাসায় ঈদের পোশাকে দুস্থ শি’শু হাসে, অ’সহায় মানুষও ফুটপাতে ইফতারে বসে। ক’রোনায় চারদিক দিশাহারা, গ্রামের নিরক্ষর মানুষগুলো তাঁকে পেয়ে যেন আত্মহারা। গ্রাম আর শহরে বৃক্ষযো’দ্ধা নামেই সবাই তাঁকে চেনে, অ’সুস্থ রো’গীরা তাঁর র’ক্তেই নতুন জীবনে মাতে।

এই মানবদরদির নাম মাহমুদুল হাসান রায়হান। দক্ষিণের জে’লা পটুয়াখালীতে তাঁর বাস। সেখানকার স’রকারি কলেজে পড়ছেন হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে। পড়াশোনার পাশাপাশি আর্তমানবতায় নিজেকে উজাড় করে দেওয়া ছেলেটির নে’শা। তাঁর সেবামূলক সব কাজই জননন্দিত। আর এখন এক আওয়ামী লীগ নেতার রোষানলে পড়ে ক্ষো’ভে-দুঃখে তিনি নিজেই নিজের ফাঁ’সি চান।

ক’রোনার মধ্যে এই রমজানে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আয়োজন করেন ইফতারের। রমজানের শুরুতে বেশ কয়েক দিন চলছিল ইফতার কার্যক্রম। এ কাজেও আলোচিত হয়ে ওঠে রায়হান এবং তাঁর দল। শেষ রমজান পর্যন্ত কার্যক্রম চা’লিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েও তা রক্ষা করতে পারলেন না। গত মঙ্গলবারের এক ‘ঝড়’ সব করে দিয়েছে এলোমেলো। সেদিন পটুয়াখালী জে’লা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন ও তাঁর কয়েক সাঙ্গোপাঙ্গ শহরের সার্কিট হাউস রোড এলাকায় এসে রায়হান ও তাঁর সহকর্মীদের ও’পর চড়াও হয়। মা’রধর করে ইফতার কার্যক্রম ভণ্ডুল করে দেওয়া হয়। এরপর ক্ষো’ভে, হতাশায় নিজেকে সব ধরনের সেবামূলক কাজ থেকে গুটিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন রায়হান। অথচ যেকোনো দু’র্যোগে কিংবা অ’সহায় মানুষের জন্য রায়হান ও তাঁর দলই ছিল ‘আশার আলো’।

রায়হান জানান, ২০০৯ সালে পটুয়াখালী আব্দুল করিম মৃধা কলেজে এইচএসসিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। তখন তাঁর এক সহপাঠী জটিল রো’গে আ’ক্রান্ত হয়। অর্থাভাবে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে মেয়েটির চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়। এক পর্যায়ে নিজে উদ্যোগী হয়ে তহবিল গঠন করে টাকা সংগ্রহ করে চিকিৎসা করিয়েছেন। এর পর থেকে অ’সহায় মানুষের জন্য কিছু করতে হবে—এমন মা’নসিকতা নিয়ে কাজ শুরু করেন।

সহপাঠী বন্ধুদের নিয়ে গঠন করেন ‘আমাদের বন্ধু সংগঠন’। এই নামেই সব সেবামূলক কার্যক্রম চলছিল। এরপর ‘পটুয়াখালীবাসী’ ব্যানারে রো’হিঙ্গাদের জন্য সহায়তা নিয়ে চলে যান রো’হিঙ্গা শিবিরে। এরপর উত্তরাঞ্চলের বানভাসি মানুষের পাশেও দাঁড়িয়েছিল ‘পটুয়াখালীবাসী’। জে’লার প্রশাসনিক কর্মকর্তা, স্থানীয় ব্যবসায়ী, এলাকাবাসী, পটুয়াখালীর স’ন্তান যাঁরা স’রকারের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন পদে কর্মরত রয়েছেন—সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে রায়হান ও তাঁর দল ‘পটুয়াখালীবাসী’ মানবিক সংগঠন হিসেবে আপন হয়ে ওঠে।

রায়হান বলেন, ‘কেন, কোন কারণে উনি আমার ও আমার দলের ও’পর হা’মলা করেছেন জানি না। তবে হা’মলার সময় তিনি আমাকে থা’প্পড় ও লা’থি মে’রেছেন। তিনি বলেছেন, পারমিশন নিয়েছিস? পটুয়াখালীতে তোর এবং তোর সংগঠনের কোনো কার্যক্রম চলবে না। এসব বলে তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন ব্যাপক মা’রধরের জন্য তাড়া দিলে আমরা দৌড়ে জীবন রক্ষা করি।’

আওয়ামী লীগের সিনিয়র দুজন নেতা নাম গো’পন রাখার শর্তে বলেন, ‘সভাপতি একটু বদমেজাজি টাইপের মানুষ। পরশ্রীকাতরতায় ভোগেন। রায়হান ও তাঁর দল তাঁকে (সভাপতি) তাদের (পটুয়াখালীবাসী) ভালো কাজে ডাকেনি বলে তিনি ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন। এটি নিন্দনীয়।’ রায়হান আরো বলেন, ‘আমি এবং আমার দল একটি মানবিক পটুয়াখালী তৈরির চেষ্টা করেছিল।

আমি ঝুঁ’কি নিয়ে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো মানবসেবায় ব্যয় করেছি। অ’সহায়, অভাবী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেছি। এটা যদি অ’পরাধ হয়, তাহলে আমি আমার ফাঁ’সি চাই।’ জে’লা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।