যেভাবে হেফাজতে প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন মামুনুল

| আপডেট :  ২২ এপ্রিল ২০২১, ০৮:২৬ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২২ এপ্রিল ২০২১, ০৮:২৬ পূর্বাহ্ণ

রিসোর্টকান্ডের পর থেকেই দেশজুড়ে আলোচিত মাওলানা মামুনুল হক। হেফাজত ইসালামেও তিনি বর্তমানে পরিচিত অন্যতম প্রভাবশালী নেতা হিসেবে। দলটির যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও বর্তমান কমিটির অনেকে মামুনুল হককে কার্যত তোয়াজ করে চলে।

আর সাম্প্রতিক সময়ে মামুনুল হকসহ সংগঠনটির শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতারের পর মামুনুল হকের এই প্রভাবের উৎস খুঁজেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্যও। জানা গেছে আহমেদ শফী বেঁচে থাকা অবস্থায়ও মামুনুল হকের এতটা প্রভাব ছিলো না তবে বাবুনগরী দায়িত্ব পাওয়ার পরই মামুনুল হকের প্রভাব বৃদ্ধি পায়।

রিমান্ডে থাকা মামুনুলসহ একাধিক হেফাজত নেতারা জানিয়েছেন হেফাজতে শুরু থেকেই দুটি ধারা রয়েছে। একটি ধারার নেতারা আল্লাহ-রাসুলের (সা.) তরিকা অনুযায়ী নিরিবিলি জীবন যাপনে অভ্যস্ত। তারা কোনো কর্মসূচিকে ঘিরে নাশকতা ও উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে। আর অপর দলের নেতারা ধর্মের অপব্যাখ্যা, কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য ও বিতর্কিত রাজনৈতিক মন্তব্য করে সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ান। এই দলটির সাথে বিএনপি-জামায়াতের কোনো কোনো নেতার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। অনেকে আবার হেফাজতের আড়ালে নিজেরাই জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্নিষ্ট।

রিমান্ডে থাকা নেতাদের বক্তব্য অনুযায়ী, মামুনুল হক অনেকদিন ধরেই হেফাজতের উগ্রপন্থি এ গ্রুপটির নেতা হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। কোনো কর্মসূচির ডাক দেওয়া হলেই মামুনুল তা ঘিরে জল ঘোলা করে পরিস্থিতি ভিন্ন খাতে নেওয়ার পাঁয়তারা চালাতেন। আর হেফাজতের একটি অংশ তাকে এতে সহযোগিতা করে আসছে। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী মামুনুলের সঙ্গে হেফাজতের বর্তমান আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। আবার হেফাজতের বর্তমান কমিটির অনেক সদস্যও মামুনুল-ঘরানার।

এছাড়া, হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হাবিবুল্লাহ আজাদী, মনির হোসেন, জুনায়েদ আল হাবিব, খালেদ, নাসির উদ্দিন মনির, সাখাওয়াত হোসেন, আতিকুল্লাহ, মোহাম্মদ জালাল প্রমুখের সঙ্গে মামুনুলের ‘বিশেষ সম্পর্ক’ রয়েছে বলে জানা গেছে। আর এসব কারণেই রিসোর্টকান্ডের পরও মামুনুল হকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংগঠনটি। বরং বিষয়টিকে মামুনুল হকের ব্যক্তিগত বিষয় হিসেবে আখ্যা দিয়ে এড়িয়ে গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের করা একটি মামলায় মামুনুলকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি হারুন অর রশিদ বলেন, ২০১৩ সালের পর ৫ মে শাপলা চত্বরের ঘটনা ছাড়াও নানা সময় বিতর্কিত মন্তব্য করে আসছিলেন মামুনুল। সরকার পালানোর পথ পাবে না- এমন হুমকিও দিয়েছিলেন। নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে দেওয়া কর্মসূচিতেও উগ্র আচরণ করেন তিনি। কারা পেছন থেকে তার এসব বিতর্কিত কর্মকাে ইন্ধন জোগাত, তাদের খুঁজে বের করা হবে।