পুরুষ সঙ্গীর মৃত্যুশোকে স্ত্রী তিমির আত্মহত্যা

| আপডেট :  ২১ এপ্রিল ২০২১, ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২১ এপ্রিল ২০২১, ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ

সম্প্রতি কক্সবাজারের হিমছড়ি সৈকতে পরপর দু’দিন দুটি মৃত তিমি ভেসে আসে। ভেসে আাসা প্রথম তিমিটি ছিলো পুরুষ তিমি এবং দ্বিতীয় তিমিটি ছিলো স্ত্রী।আর ঘটনাস্থলে গিয়ে এই তিমি দুটির শরীর পর্যবেক্ষণ, নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ করে গবেষকরা ধারণা করছেন হয়তো পুরুষ তিমিটির শোকে আত্মহত্যা করেছিলো স্ত্রী তিমিটি।

সামুদ্রিক মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশরাফুল হক বলেন, গভীর পর্যবেক্ষণে মনে হয়েছে মৃত তিমি দুটি ‘দম্পতি’ (কাপল)। পুরুষ সঙ্গীর মৃত্যুর শোকে স্ত্রী তিমিটি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।

মৎস্য বিজ্ঞানী আশরাফুল হক বলেন, মৃত তিমি দুটি ‘ব্রাইডস হুয়েল’ (Bryde’s Whale) অথবা ‘বলিন’ প্রজাতির। এদের মধ্যে পুরুষ তিমিটির ওজন ছিলো ১৫ টন। লম্বায় এটি ছিলো ৪৪ ফুট এবং পেটের বেড় ২৬ ফুট। বয়স আনুমানিক ২৫ বছর। আর স্ত্রী তিমিটির ওজন ছিলো ১০ টন, এটি লম্বায় ছিলো ৪৬ ফুট এবং পেটের বেড় ১৮ ফুট।

সঙ্গীর প্রতি তিমির অনুভূতি ব্যাখ্যা করে আশরাফুল হক বলেন, তিমি জোড় বেঁধে সাগরে বিচরণ করে। তিমি অনুভূতি ও বুদ্ধি সম্পন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণী। জোড় বেঁধে সঙ্গী হয়ে চলার অভ্যাস তাদের মধ্যে আছে। হয়তো গভীর সমুদ্রে জোড় বেঁধে বিচরণের সময় বড় কোনো জাহাজের ধাক্কায় পুরুষ তিমিটি পেটে আঘাত পেয়ে মারা যায়। কারন আমরা তিমিটির শরীরে মারাত্মক জখমের চিহ্ন পেয়েছি। আর এ শোক সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় স্ত্রী তিমিটি।

এসময় তিনি আরও বলেন, ‘তিমির আত্মহত্যার ঘটনার অনেক নজির আছে। আর আমরা স্ত্রী তিমির শরীরে তেমন আঘাতের চিহ্ন পাইনি। শুধু লেজের আগে পেটের দিকে পচে বিকৃত হয়ে গিয়েছিল। তবে অনেকসময় দেখা যায় প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে বিষাক্ত গ্যাসের সৃষ্টি হয় তিমিসহ যেকোনো প্রাণীর মৃত্যু হয়। কিন্তু আমরা ভেসে আসা দুই তিমির পেটে কোনো ধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য পাইনি।

প্রসঙ্গত, গত ৯ এপ্রিল সকালে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি সৈকতে ভেসে আসে ১৫ টন ওজনের পুরুষ মৃত তিমি আর এর পরেরদিন একই সৈকতে ভেসে আসে ১০ টন ওজনের আরেকটি তিমি।