মামুনুল গ্রেফতারে কেন নীরবতা হেফাজতে?

| আপডেট :  ২০ এপ্রিল ২০২১, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২০ এপ্রিল ২০২১, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ণ

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের গ্রেফতারে শুনশান নীরবতা দেখা দিয়েছে হেফাজতের মধ্যে। এখন তারা একদম চুপ আছে। কেউ যেনো টু শব্দটিও করছে না। সংগঠনটির উগ্র মৌলবাদী নেতারা এখন যে যার যার মত করে তাদের কোটরে প্রবেশ করেছে। তারা মনে করতো মামুনুল হকের খুঁটির জোর অনেক বেশি।

তাই মামুনুল হকের কিছু হবে না। মামুনুল হককে সরকার গ্রেফতার করতে পারবে না। কিন্তু গতকাল মামুনুল হকের গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে তাদের সেই ভ্রান্ত ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। ফলে তারা এখন আর কোনো কথা বলার অবস্থায় নেই। সবাই যার যার মত করে নিজেকে বাঁচাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।

শেখ হাসিনার সরকার সব সময় অন্যায়ের ব্যাপারে শুণ্য সহিষ্ণুতা নীতি গ্রহণ করেন, মামুনুল হকের গ্রেফতার তার একটি বড় প্রমাণ। মামুনুল হককে গ্রেফতার করে আজ আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত হেফাজতের নেতারা নীরব। এমনকি হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো কথা বলেন নি। ফলে স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে হেফাজতের উগ্র মৌলবাদী নেতাই এখন গ্রেফতার আতঙ্গে ভুগছে। তাদের পায়ের নিচের মাটি আস্তে আস্তে সরে যাচ্ছে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাচ্ছে। তাদের আর পালাবার পথ নেই। ফলে তারা নীরব।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিণতির বিষয়ে হেফজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী এবং তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উগ্র মৌলবাদী যেসব নেতারা রয়েছেন, তাদের আগে ভাবা উচিৎ ছিলো। তারা কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরকে পুঁজি করে আন্দোলন করে ধরাকে সরা জ্ঞান করেছিলো। তারা মনে করেছিলো তারা দেশের মধ্যে যা খুশি তাই করে যাবে। তাদের কেউ কিছু করার নেই। এই চিন্তা থেকেই তারা বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশব্যাপী তাণ্ডব চালায়।

বিশেষ করে গত ২৬ এবং ২৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে দেশের বিভিন্ন স্থানে একাত্তরের কায়দায় তাণ্ডব চালায় হেফাজত। এগুলো করার পরেও তাদের মধ্যে কোনো ধরনের ভয় কাজ করে নি। তারা চিন্তাই করেছিলো যে সরকার তাদের আন্দোলনকে ভয় পাচ্ছে। কিন্তু সরকার ঠান্ডা মাথায় সব কিছু সামাল দিয়েছে এবং সময় মত এসে কঠোর হয়েছে। ফলে তারা এখন পদে পদে সরকারের কৌশলের কাছে ধরাশায়ী।

বিশ্লেষকরা আরো বলছেন, হেফজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর ডান হাত হিসেবে কাজ করতো মামুনুল হক। এমনকি আল্লামা শফীর মৃত্যুর পর হেফাজতের আমির হওয়ার ক্ষেত্রে জুনায়েদ বাবুনগরীকে অনেককংশে সাহায্য করেছিলো মামুনুল হক। এখস মামুনুলের গ্রেফতার হওয়া দেখে বাবুনগরীর গলা শুকাচ্ছে। গ্রেফতার আতঙ্ক তার মধ্যে ভর করেছে। ফলে সে ও তার পন্থী উগ্র মৌলবাদী নেতারা এখন একদম নীরব।

তারাও জানে যে কোনো সময় তাদেরকেও গ্রেফতার করা হতে পারে। ফলে তারা এখন সেই চিন্তায় দিনাতিপাত করছে। এখন দেখার বিষয় হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী কখন গ্রেফতার হয়।