নাইট গার্ড থেকে সহকারী অধ্যাপক হলেন, সত্যিকারের অনুপ্রেরণা!

| আপডেট :  ১৫ এপ্রিল ২০২১, ১২:১৬ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৫ এপ্রিল ২০২১, ১২:১৬ অপরাহ্ণ

আমার এই কাহিনী শুনে যদি কারও মনোবল বাড়ে, তবে নিজেকে সার্থক মনে করব,’ লিখেছেন রঞ্জিত। সারাদিন কলেজ, ক্লাস, পড়াশোনা। রাতে নাইট গার্ডের কাজ। এভাবেই জীবনের বেশ কয়েকটা বছর কেটেছে রঞ্জিত রামাচন্দ্রনের। কেরলের কাসাড়গড়ের ছিপছিপে চেহারার ছেলেটা আজ আইআইএম রাঁচির সহকারী অধ্যাপক।

একটা ছোট্ট ত্রিপল ঢাকা কুঁড়েঘর থেকে দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক। নিজের জীবনের এই লড়াইয়ের কাহিনী ফেসবুকে লেখেন রঞ্জিত। সঙ্গে তাঁর পৈতৃক ভিটের ছবি। তাঁর এই অনুপ্রেরণার কাহিনী ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।

দ্বাদশ শ্রেণি পাশের পরই অর্থাভাবে পড়াশোনা ছেড়ে দেবেন, এমনটাই ভেবেছিলেন রঞ্জিত। কারণ পরিবারকে টানতে একটা চাকরি সত্যিই প্রয়োজন। কিন্তু চাকরি করতে করতে তো আর পড়ার সময় পাবেন না।

এমন সময়েই মেলে দুটিই করার সুযোগ। পানাথুরে বিএসএনএল-এর টেলিফোন এক্সচেঞ্জে নাইট গার্ডের চাকরি জুটিয়ে ফেলেন তিনি। ব্যাস। এরপরই শুরু হয় আসল লড়াই। নাইটগার্ডের কাজের মাঝেই সারারাত পড়াশোনা করতেন। আর দিনে পিউস এক্স কলেজে অর্থনীতিতে স্নাতকের ক্লাস করতে থাকেন।

এভাবেই কেটে যায় তিনটে বছর। এরপর ধাপে ধাপে কেরালা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি ও তারপর আইআইটি মাদ্রাজে পড়াশোনা চালিয়ে যান। দুর্দান্ত নম্বরের ফলে ভরতি হওয়া নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি তাঁর। আর পড়াশোনার খরচ নিজেই চালাতেন কষ্ট করে।

এভাবেই ধীরে ধীরে পিএইচডি সারেন। ততদিনে তিনি বৃত্তিও পেতে শুরু করেন। ফলে আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। গবেষণা শেষে অধ্যাপনা শুরু করেন বেঙ্গালুরুর ক্রাইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপরেই আসে আইআইএম রাঁচিতে অর্থনীতিতে অধ্যাপনার সুযোগ।

‘ওই ছোট্ট কুঁড়েঘর থেকে আইআইএম রাঁচির পথটি ছিল দুর্গম। কিন্তু স্বপ্নে ঘেরা। আমায় মা-বাবা কখনও বলেননি কী করতে হবে। আমি পরের পর যেটা মনে হয়েছে করে গিয়েছি। আমার এই কাহিনী শুনে যদি কারও মনোবল বাড়ে, তবে নিজেকে সার্থক মনে করব,’ লিখেছেন রঞ্জিত।