গ্রে’ফতারে বি’প’র্যস্ত হেফাজত

| আপডেট :  ১৫ এপ্রিল ২০২১, ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৪ এপ্রিল ২০২১, ০৭:০৫ পূর্বাহ্ণ

একদিকে হেফাজতের শীর্ষ নেতারা পদত্যাগ করছেন হেফাজত আদর্শ বিচ্যুতি হয়েছে এই অ’ভিযোগ করে, অন্যদিকে উ’গ্রবা’দীরা বিভিন্ন অ’ভিযোগে গ্রে’ফতার হচ্ছেন। গ্রে’ফতার আর পদত্যাগে হেফাজত এখন বি’পর্যস্ত অবস্থায়। সামনে হেফাজতে গণপদত্যাগ আসছে। এই পরিস্থিতিতে হেফাজত অস্তিত্বের সং’কটে ভুগছে। শেষ পর্যন্ত সংগঠনটি থাকবে কি থাকবে না এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

গত কয়েকদিনে হেফাজতের নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ হাসান সহ অন্তত ১২ জন নেতা পদত্যাগ করেছেন। বিভিন্ন জে’লা থেকে তারা পদত্যাগের ঘোষণা দিচ্ছেন। এই পদত্যাগের ব্যাপারে যদিও হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী তাদেরকে অনুরোধ করছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন, কিন্তু তার অনুরোধের সত্বেও পদত্যাগ অব্যাহত আছে।

সর্বশেষ পদত্যাগ করা হেফাজতের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল্লাহ মোহাম্ম’দ হাসান বলেছেন যে, হেফাজতকে একটি রাজনৈতিক সংগঠনে রূপান্তরিত করা হচ্ছে এবং বি’তর্কি’ত করা হচ্ছে। এজন্যই তিনি হেফাজতের সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখতে চান না। তিনি এ কারণেই পদত্যাগ করেছেন।

একই অ’ভিযোগে পদত্যাগ করেছেন অন্যান্য জে’লায় বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ। জুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজতের আমির হওয়ার পরেই হেফাজতের মধ্যে টানাপড়েনের সৃষ্টি হয়েছিলো। বিশেষ করে জুনায়েদ বাবুনগরী স’রকারের বি’রুদ্ধে উ’গ্রবা’দী অবস্থান গ্রহণ করেন, তা হেফাজতের বিভিন্ন মহল গ্রহণ করতে পারেনি। আর গ্রহণ না করার কারণেই তারা মনে করছেন যে হেফাজতে ইসলাম এবং কওমি মাদ্রাসা দুটোর জন্যই নিরাপদ নয়।

আর জুনায়েদ বাবুনগরী দায়িত্ব গ্রহণের পরই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে বি’রোধিতা, তারপর বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী নিয়ে বি’রোধিতা করে হেফাজতকে স’রকারের মুখোমুখি দাঁড় করান। এই সময় বিশেষ করে ২৬ এবং ২৭ মার্চ ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের নেতৃত্বে নারকীয় তা’ণ্ডব হয়। তা’ণ্ডবগুলোকে অনেক একাত্তরের ব’র্বরতার সঙ্গে তুলনা করেন।

এখন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এই সমস্ত তা’ণ্ডবের সঙ্গে যারা জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করছে। তাদেরকে আইনের আওতায় আনছে। ইতিমধ্যে সারাদেশে হেফাজতের শতাধিক নেতাকর্মী গ্রে’ফতার হয়েছেন বলে জুনায়েদ বাবুনগরী দাবি করেছেন। তিনি গ্রে’ফতারকৃতদের মুক্তির দাবি করে মিনমিনিয়ে কিছু কথা বললেও সেই কথা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা খুব একটা আমলে নেয়নি।

কারণ হেফাজতের আমির বাবুনগরীর পায়ের তলার মাটি ইতিমধ্যে সরে যাচ্ছে। তিনি এক রকম চা’পের মধ্যে আছেন। আর বিশেষ করে তার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত যারা, যেমন হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবা’দী, হেফাজতের নারায়ণগঞ্জ জে’লার সেক্রেটারি বশির উল্লাহ`র মতো নেতৃবৃন্দ যখন গ্রে’ফতার হচ্ছেন তখন বাবুনগরী নিজেই গ্রে’ফতার আ’তঙ্কে ভুগছেন। তাকে পরামর্শ দেওয়ার মতো এবং সহযোগিতা করার মত কোনো লোকও তিনি পাচ্ছেন না।

আল্লামা শফী যখন হেফাজতের আমির ছিলেন তখন তিনি সরাসরি স’রকারের সঙ্গে দেনদরবার করতেন এবং বিভিন্ন স’মস্যা নিয়ে স’রকারের সাথে কথা বলতেন। কিন্তু জুনায়েদ বাবুনগরীকে স’রকার পছন্দ করে না এবং তার সঙ্গে জামাতের একটি সম্পর্ক এবং স্বাধীনতাবি’রোধী উ’গ্র মৌলবা’দী গোষ্ঠীর সঙ্গে গো’পন আঁতাতের খবর পাওয়া যায়। তাদের নির্দেশেই তিনি স’রকারের বি’রুদ্ধে উ’স্কানিমূলক তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছিলেন বলেও অ’ভিযোগ পাওয়া যায়।

আর এ কারণেই এখন হেফাজত যে স’রকারের সাথে সমঝোতা করবে, আত্মসমর্পণ করবে বা একটা বোঝাপড়া করবে এমন সম্ভাবনা নাকচ হয়ে যাচ্ছে। ফলে গ্রে’ফতার আর পদত্যাগের দুই ধারায় হেফাজত সংকুচিত হচ্ছে।

হেফাজতের নেতারাই বলছেন, এরকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে সামনে হয়তো হেফাজতের কোনো নেতাই খুঁজে পাওয়া যাবে না। অতিরিক্ত বাড়াবাড়ির জন্য হেফাজতকে চ’রম মূল্য দিতে হচ্ছে এবং সংগঠনটি হয়তো নিঃশেষিত হবে।