করোনায় মৃত্যুঝুঁকি ৭৫ শতাংশ কমাতে পারে আইভারমেকটিন

| আপডেট :  ৮ এপ্রিল ২০২১, ০২:৫৩ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৮ এপ্রিল ২০২১, ০২:৫৩ অপরাহ্ণ

দেশজুড়ে আবারও বেড়েছে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। প্রতিদিনই মৃত্যু এবং নতুন শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যার রেকর্ড হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনায় মৃতের সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়েছে। আর বাংলাদেশে এ সংখ্যা প্রায় ১০ হাজারের কাছাকাছি। আর এমন পরিস্থিতিতেই গবেষকরা দেখাচ্ছেন নতুন আশা আলো। মাত্র ১০০ টাকার ওষুধেই করোনা রোগীর জীবন বাঁচতে পার।

সম্প্রতি ২৯ টি প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা মিলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের ওপর আইভারমেকটিনের প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণা চালিয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পৃষ্ঠপোষকতায় এ গবেষণা পরিচালিত হয়। আর এ গবেষণাতেই মিলেছে চমকপ্রদ তথ্য। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অ্যান্টি-প্যারাসাইটিক ওষুধ আইভারমেকটিন প্রয়োগে কভিডে আক্রান্তদের মৃত্যুহার ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ের যে ২৯টি সংস্থার বিশেষজ্ঞরা এ গবেষণা চালিয়েছেন তার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের আইসিডিডিআর,বি, বারডেম ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের বিশেষজ্ঞরাও। আর গবেষণা প্রতিবেদন লিখেছেন যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইউনিভার্সিটি অব লিভারপুলের ফার্মাকোলজি বিভাগের ড. অ্যান্ড্রু হিল। দৈবচয়নভিত্তিক পরীক্ষায় পাওয়া এ ফলাফল মেটা অ্যানালাইসিস বা সমন্বিত পর্যালোচনার ভিত্তিতে প্রকাশ হয়েছে। প্রতিবেদনের ভাষ্যমতে, আইভারমেকটিন প্রয়োগে কভিডে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুঝুঁকি ৭৫ শতাংশ কমানো সম্ভব।

গবেষকদের পর্যবেক্ষণে উঠে আসে, ভাইরাস দমনের ক্ষেত্রে আইভারমেকটিন সেবন প্লাজমার চেয়েও বেশি কার্যকর। এছাড়া এখনো এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া চিহ্নিত হয়নি। প্রতিবেদনের ভাষ্যমতে, ২৭টি দেশের ২ হাজার ২৮২ জন কভিড-১৯ রোগীর ওপর এ গবেষণা পরিচালিত হয়। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ওপর চালানো গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, আইভারমেকটিন অবিশ্বাস্য দ্রুততম সময়ে করোনার আক্রমণ থেকে ফুসফুসকে রক্ষা করতে সক্ষম।

গবেষণাটির সঙ্গে যুক্ত থাকা বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. তারেক আলম বলেন, প্রতি মাসেই কিছুদিন পর পর আইভারমেকটিন সেবন করা প্রয়োজন। টিকার সঙ্গে এটির সেবন সাংঘর্ষিক নয়। যতদিন পর্যন্ত আমরা অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করতে না পারছি, ততদিন পর্যন্ত প্রতিরোধক হিসেবেই আইভারমেকটিন সেবন করা উচিত। গবেষণার তথ্যেও এমনটাই দেখা গেছে।

এছাড়া, আইভারমেকটিনের আরেকটি বড় সুবিধা হলো এর দাম। স্বল্পমূল্যের ওষুধটি ব্যবহারে চিকিৎসকদের নির্দেশিত ডোজের দাম ১০০ টাকার বেশি নয়। চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি বা দীর্ঘদিন অ্যাজমায় ভুগছেন ও ৩৫ বছর ধরে স্টেরয়েড নিচ্ছেন, এমন রোগীর চিকিৎসায়ও আইভারমেকটিন কার্যকর। ৭৬ বছর বয়সী নারীও আইভারমেকটিন সেবন করে দ্রুত আরোগ্য লাভ করেছেন। অনেকে সেরে উঠেছেন ১৬ দিনের মধ্যেই।