‘মামুনুলকাণ্ড’ লাইভ করা সেই সাংবাদিককে তু’লে এনে বে’ধড়’ক মা’রধ’র

| আপডেট :  ৬ এপ্রিল ২০২১, ০৫:১৮ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৬ এপ্রিল ২০২১, ০৫:১২ অপরাহ্ণ

নারায়ণগঞ্জে হেফাজতে ই’সলামের যুগ্ম মহাস’চিব মামুনুল হকের রিসোর্ট-কাণ্ডের তথ্য সংগ্রহ করতে যাওয়ায় স্থানীয় এক সাংবাদিকের বাড়িতে হা’ম’লা চা’লিয়েছেন সংগঠনটির ক’র্মীরা। এ সময় ওই সাংবাদিককে পি’টিয়ে আ’হ’ত করার পাশাপাশি তার ঘরের আসবাব ভা’ঙ’চুর করা হয়েছে। সোনারগাঁ উপজে’লার সনমান্দি ইউনিয়নের নাজিরপুর ভান্টি চর এলাকায় সোমবার (৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আ’হত সাংবাদিক হাবিবুর রহমান ‘চ্যানেল এস’ নামের একটি বেস’রকারি সংবাদমাধ্যমের সোনারগাঁ প্রতিনিধি। তাকে আ’হত অবস্থায় সোনারগাঁ উপজে’লা স্বা’স্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

হাবিবের ছোট ভাই মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল আমার বড় ভাই হাবিব। রাত সাড়ে ৯টার দিকে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা লা’ঠিসোঁ’টা নিয়ে আমাদের বা’ড়িতে হা’ম’লা করে। তারা ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভা’ঙ’চুর করে। টে’নেহিঁ’চড়ে ঘরের বাইরে নিয়ে গেছে হাবিবকে।

তিনি আরো বলেন, মামুনুল হকের বাহিনী কয়েক দফায় লা’ঠি দিয়ে পি’টিয়েছে আমার ভাইকে। মা’রধ’র করে তার দাঁ’ত ভে’ঙে ফে’লেছে। তাদের কাছ থেকে ভাইকে বাঁ’চাতে না পেরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে খবর দিই। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে তাদের কাছ থেকে ভাইকে উ’দ্ধা’র করে হা’সপাতালে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হেফাজতের নেতা-কর্মীরা হাবিবকে মা’রধ’র করে ঘরের বাইরে নিয়ে আসেন। এরপর ফেসবুকে ক্ষমা চাইতে বলেন মামুনুলের কাছে। তাদের মধ্যে একজনকে বলতে শোনা যায়, হুজুরের (মামুনুল হক) কাছে মাফ চাইতে হবে, হুজুর যাতে আপনাকে ক্ষ’মা করে দেয় এ জন্য।

আরেকজন বলছেন, আপনি বলবেন, “হুজুরের (মামুনুল হক) কাছে আমি ক্ষমা চাই। সাংবাদিক হিসেবে সেখানে গিয়ে ভু’ল করেছি। আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।”

এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিক হাবিবুর রহমান বা’দী হয়ে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৭০/৮০ জনকে অ’জ্ঞাত আ’সামি করে সোনারগাঁ থানায় একটি লিখিত অ’ভিযোগ দা’য়ের করেছেন।

আ’হত সাংবাদিক হাবিবুর রহমান বলেন, মামুনুল অনুসারীরা শনিবার থেকেই আমাকে নানাভাবে হ’”ত্যার হু’মকি দিয়ে আসছিল। তাদের ভ’য়ে আমি শনিবার থেকেই ঘ’রব’ন্দি। গতকাল শতাধিক হেফাজতকর্মী বাড়িতে হা’ম’লা চা’লালে আমি সোনারগাঁ থানা পুলিশের সহযোগিতা চাই। পুলিশ পৌঁছানোর পূর্বেই তারা আমাকে মা’রধ’র করে। আমার চি’ৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে তারা পা’লিয়ে যায়। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার নি’রাপত্তাহী’নতায় ভু’গছি।

সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক খন্দকার তবিদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় থানায় লিখিত অ’ভিযোগ নেওয়া হয়েছে। মা’মলার প্রস্তুতি চলছে।

গত শনিবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের একটি রিসোর্টে এক না’রীকে নিয়ে গিয়ে অ’বরু’দ্ধ হন মামুনুল হক। কয়েক ঘণ্টার হা’ঙ্গামার পর হা’মলা চা’লিয়ে তাকে উ’দ্ধার করে নিয়ে আসে হে’ফাজতে ই’সলামের কর্মীরা। মামুনুল দাবি করতে থাকেন ওই না’রী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। দুই বছর আগে তারা বিয়ে করেছেন। তবে মামুনুল তার কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার বাবার যে নাম বলেছেন, বাড়ি যেখানে বলেছেন, তার সঙ্গে সেই মেয়ের বক্তব্যের মিল নেই।

মামুনুল দাবি করেন, তার স্ত্রীর নাম আমেনা তাইয়্যেবা। শ্বশুরের নাম জাহিদুল ইসলাম। বাড়ি খুলনায়। তবে মেয়ে জানান, তার নাম জান্নাত আরা ঝর্ণা। বাবা ওলিয়র রহমান। বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার কামারগাঁও গ্রামে।

এর মধ্যে মামুনুলের আসল স্ত্রীর সঙ্গে তার, স্ত্রীর সঙ্গে মামুনুলের বোনের আর ঝর্ণার সঙ্গে হেফাজত নেতার মোবাইল কথোপকথন হিসেবে তিনটি অডিও রেকর্ড ফাঁ’স হয়। এগুলো বিভিন্ন বেস’রকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রকাশ হয়।