উভয় স’ঙ্ক’টে বাবুনগরী

| আপডেট :  ৬ এপ্রিল ২০২১, ০৩:৪৩ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৬ এপ্রিল ২০২১, ০৩:৪৩ অপরাহ্ণ

আল্লামা শফী যখন হেফাজতের আমীর ছিলেন তখন তিনি শক্ত হাতেই হেফাজতকে নিয়ন্ত্রণ করতেন। দলের ভেতরে তার একচ্ছত্র কর্তৃত্ব ছিল। তিনি একেবারে উ’গ্রবা’দী ছিলেন না। সকলের সঙ্গে তিনি সম্পর্ক রেখে চলছেন এবং কখনোই তিনি চ’রমপন্থা গ্রহণ করতেন না। যদিও ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকা অ’বরোধ কর্মসূচি হয়েছিল।

কিন্তু এই কর্মসূচিতে হেফাজত যে তা’ণ্ডব করেছিল সেটি আল্লামা শফীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল বলেই হেফাজত বিভিন্ন সময় বলেছে। তারপরও আল্লামা শফী স’রকারের সাথে একটি সফল সমঝোতা করে এই ঘটনাটির মীমাংসা করেছিলেন। আল্লামা শফী যেরকম সকলের কাছে একজন গ্রহণযোগ্য আলেম হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং তিনি হেফাজতকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতেন না ঠিক তার উল্টো জুনায়েদ বাবুনগরী।

জুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজতের আমীর হওয়ার পরপরই হেফাজতকে একটি আগ্রাসী এবং উ’গ্রবা’দী অবয়ব দেওয়ার চেষ্টা করেন, স’রকারের সঙ্গে বাহাসে নামেন এবং বিভিন্ন বি’ষয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে থাকেন। প্রথমেই বাবুনগরী বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেন। এরপর নরেন্দ্র মোদির সফর নিয়েও তিনি বিতর্কে জড়ান এবং সেই বিতর্কও এখন হেফাজতকে এক বি’তর্কি’ত অবস্থানে নিয়ে গেছে।

এর ফলে দেশের সবচেয়ে বড় অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে দাবিদার হেফাজতে ইসলাম নতুন সং’কটে পড়েছে। আর এই সং’কটের সবচেয়ে বেশি স’মস্যায় পড়েছেন হেফাজতের আমীর জুনায়েদ বাবুনগরী। জুনায়েদ বাবুনগরী এখন উভ’য় স’ঙ্কটে পড়েছেন।

প্রথম স’ঙ্কট হলো তিনি স’রকারের সঙ্গে এক অঘোষিত যু’দ্ধে জড়িয়ে পড়েছেন এবং হেফাজতের নেতারাও স্বীকার করছেন যে স’রকারের সঙ্গে এই যু’দ্ধে হেফাজতের জয়ী হওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই। ফলে আল্লামা শফী ২০১৩ -এর পর থেকে স’রকারের সাথে সমঝোতা করে কওমী মাদ্রাসার জন্য যা কিছু অর্জন করেছিলেন সব কিছু এখন ভেস্তে যেতে বসেছে।

আর এই যু’দ্ধে যদি বাবুনগরীর কৌশল জয়ী না হয় তাহলে হেফাজত নিঃশেষিত হয়ে যাবে। জুনায়েদ বাবুনগরী এখন কি করবেন? তিনি কিভাবে স’রকারের বি’রুদ্ধে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন সেটি তার জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয় স’ঙ্কট হেফাজতের আমীরের সামনে এসেছে সমঝোতার স’ঙ্কট।

হেফাজতের আমীর যদি এখন সমঝোতা করেন স’রকারের সঙ্গে, আপোষ রফা করেন তাহলে হেফাজতের মধ্যেই তাকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা হবে। সকলেই মনে করবে যে জুনায়েদ বাবুনগরী স’রকারকে চা’পে ফে’লে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য হয়তো এই আন্দোলনের নাটক করেছিলেন, এই সমস্ত ইস্যুগুলো সামনে এনেছিলেন।

এখন হেফাজতের নেতারাই বলছেন যে, জুনায়েদ বাবুনগরী হেফাজতকে পয়েন্ট অফ নো রিটার্ন-এ নিয়ে গেছেন অর্থাৎ তিনি যেভাবে চ’রমপন্থার ঘোষণাগুলো দিয়েছেন তাতে এখন হেফাজতের আর সমঝোতার পথ খোলা নেই।

তাই হেফাজত যদি এখন স’রকারের সাথে কোনরকম আপোষ রফা করে সেটি জুনায়েদ বাবুনগরীর জন্য হবে বুমেরাং। আর এরকম উভয় স’ঙ্কটে পড়ে হেফাজতের আমীর এখন কি করবেন সেটাই দেখার বি’ষয়।