এবার ইউএনও সায়েদুল আরেফিনের টিকট’ক ভিডিও ভাই’রাল

| আপডেট :  ২২ মার্চ ২০২১, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২২ মার্চ ২০২১, ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ণ

ফটিকছড়ি উপজে’লা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. সাইয়েদুল আরেফিনের ছোট তিনটি টিকট’ক ভিডিও ভাই’রাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে। ‘সবদিকে ফিট আমাদের ইউএনও মহোদয়, হ্যাপী ফ্যামিলী’ শিরোনামে রাশেদ মুন্না ও এম. শাহনেওয়াজ নাজিম নামের দুটি আইডি থেকে প্রায় এক মিনিটের পৃথক দুটি টিকট’ক ভিডিওতে দেখা যায়, ইউএনও তার চিকিৎসক স্ত্রী’ সানজিদা সুলতানার সাথে চ’মৎকার শিল্পীত ভূমিকায় গান করছেন। গান ও সুরের মেজাজের সাথে মিল রেখে ইউএনও’র অঙ্গভঙ্গিও ছিল দারুণ উপভোগ্য। স্ত্রী’কেও মনে হচ্ছে বেশ সপ্রতিভ পারফর্মা’র।

অবশ্য কেউ কেউ ভিডিও দুটির ব্যাপারে নেতিবাচক মন্তব্য করলেও বেশিরভাগ ফেসবুক ব্যবহারকারী এই দম্পতির অনবদ্য পারফরমেন্সে দারুণ খুশি। অনেকের প্রশংসা ও অ’ভিনন্দনে ভাসছেন ইউএনও দম্পতি। পাশাপাশি নেতিবাচক মন্তব্যেরও জবাব দিচ্ছেন কেউ কেউ।

মাহমুদ আল আজাদ নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির এগুলো মানায় কি? জবাবে আহসান আরিফ চৌধুরী জুয়েল নামের একজন বলছেন, এইতো দিলেন তো শেষ করে। উনি মানুষ, রোবট না। তাছাড়া এখানে খা’রাপ কী’ দেখলেন?

নেতিবাচক মন্তব্যকারী মাহমুদ আল আজাদকে জবাব দিতে গিয়ে সবিস্তারে ব্যাখ্যাও দিলেন এম এইচ রহমান নামের একজন। তিনি লেখেন, প্রথমত- এটা করেছিলেন ২০১৮ সালে, আজ থেকে প্রায় ৩ বছর আগে। এরপর কেউ এটাকে ভাই’রাল করছে এখন। তাই এদিক দিয়ে দোষের কিছু না। দ্বিতীয়ত, এটা উনার স্ত্রী’। বাইরের কোনো মে’য়ের সাথে করেনি। সুতরাং এদিকে দিয়েও দোষের কিছু দেখছি না। তৃতীয়ত- উনিও আমাদের সবার মত মানুষ। উনারও শখ-ইচ্ছা এগুলো থাকতে পারে, যা আমা’র, আপনার আছে। এদিকে দিয়েও দোষের কিছু না। আপনার চোখে খা’রাপের কী’ দেখলেন?

তবে বুধবার মধ্যরাত থাকে ভিডিও দুটি ফেসবুকে দেখা গেলেও বৃহস্পতিবার সকাল ১২ টার পর থেকে মোরশেদ মুন্নার পোস্ট করা ভিডিওটা আর দেখা যাচ্ছে না।

এদিকে, ‘কেনে চলর-বাই ফারহান’ এই আইডি থেকেও বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে ওই দুটি ভিডিও’র সাথে ইউএনও’র আরও একটি টিকট’ক গানের ভিডিও জোড়া দিয়ে আপ দেওয়া হয়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ইউএনও সায়েদুলকে গান করছেন- তুমি এখনো আমায় বন্ধু ভাব কি/কখনো কি আমায় ভেবেছিলে বন্ধুর চেয়ে একটুখানি বেশি…। এতে একজন মডেলের ছবিও জুড়ে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে ফটিকছড়ির সন্তান, ইন্সপায়ার চট্টগ্রামের পরিচালক জাওইদ চৌধুরী একুশে পত্রিকাকে বলেন, স্ব স্ব ক্ষেত্রে একটা পেশাগত আচরণ, শুদ্ধাচারের ব্যাপার আছে- সেটা যেন আম’রা ভুলতে বসেছি। একজন ইউএনও গান করতেই পারেন, সেটা তার একান্তই ব্যক্তিগত। কিন্তু সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেন আসবে? তাছাড়া টিকট’ক ভিডিওকে কেন্দ্র করে সমাজে ইদানীং অনেক অন্যায়-অ’প’রাধ হচ্ছে। সেই অর্থে আমাদের সমাজে এখনো এই মাধ্যমটি অ্যালাউ না, বরং বিতর্কিত। তেমন একটি অগ্রহণযোগ্য, অ’প’রাধপ্রবণ ‘মাধ্যম’ ব্যবহার করে প্রজাতন্ত্রের একজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মচারির গান করা কতটুকু শোভন, গ্রহণযোগ্য তা আমা’র বোধে আসছে না।

এদিকে, কী’ভাবে এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে এল, কোন প্রেক্ষাপটে, কখন টিকট’ক ভিডিওগুলো নির্মিত হয়েছে সেসব বিষয়ে কথা বলার জন্য বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া একটার দিকে ফটিকছড়ি উপজে’লা নির্বাহী কর্মক’র্তা মো. সায়েদুল আরেফিনের মোবাইল ফোনে ফোন করেও পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, বিসিএস (প্রশাসন) ৩০ ব্যাচের কর্মক’র্তা মো. সায়েদুল আরেফিন সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের পিএ, পিরোজপুরের এসিল্যান্ড, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্প, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন চেয়ারম্যানের পিএসসহ নানা জায়গায় কাজ করে ২০১৯ সালের ২০ মে ফটিকছড়ি উপজে’লার নির্বাহী কর্মক’র্তা হিসেবে যোগ দেন। তার বাড়ি মানিকগঞ্জে। তার স্ত্রী’ সানজিদা সুলতানা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ট হাসপাতা’লে কর্ম’রত।