বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছেন চাঁদপুরের প্রথম নারী জেলা প্রশাসক

| আপডেট :  ১৪ মার্চ ২০২১, ০৬:৪৫ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৪ মার্চ ২০২১, ০৬:৪৫ অপরাহ্ণ

অঞ্জনা খান মজলিস। চাঁদপুরের প্রথম নারী জেলা প্রশাসক। বাবাই তাকে এ পদে আসার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। পূরণ করেছেন বাবার স্বপ্ন। এখন মানুষের চাওয়াগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে সে অনুযায়ী কাজ করতে চান। কাজের মাধ্যমে মানুষের ভালোবাসা পেয়ে তৃপ্ত হতে চান ২০০৩ সালে ২২তম বিসিএস প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন অঞ্জনা খান। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে তার কর্মজীবন শুরু হয়। পরে তিনি ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হন।

এরপর মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এবং পরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অঞ্জনা খান। পরে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপ-সচিব হন তিনি। এ পদে দায়িত্ব পালন শেষে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান অঞ্জনা খান। তার জন্মস্থান সাভারের আনন্দপুরে।নারী দিবস উপলক্ষে সফল এ ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে কথা হয় জাতীয় একটি অনলাইনের নিজস্ব প্রতিবেদক শাহাদাত হোসেন এর সাথে।প্রতিবেদক : চাঁদপুরের প্রথম নারী জেলা প্রশাসক। কাজের ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছেন কি না?

অঞ্জনা খান মজলিস : ২০০৩ সালে যখন প্রশাসনে যোগ দেই তখন থেকেই মূলত মাঠপর্যায়ের কাজগুলো করছি। নিজেকে কখনও নারী হিসেবে চিন্তা করিনি। সবসময় চিন্তা করেছি, আমি একজন সরকারি ও প্রশাসনের কর্মকর্তা। আমার মনে হয়, একজন কর্মকর্তাকে কর্মকর্তা হিসেবেই দেখা উচিত। পুরুষ না নারী, সেটা দেখার বিষয় নয়। তিনি কেমন কাজ করছেন, সেটাই দেখার বিষয়।এটা ঠিক, নারীরা এখনও পুরুষের সমানতালে চাকরিতে আসতে পারছেন না। আরও সময় লাগবে। হয়তো আমরা ১০ বছর পর দেখতে পারব চাকরিতে অর্ধেক পুরুষ আর অর্ধেক নারী। তখন হয়তো বিষয়টি নতুন লাগবে না যে, একজন নারী জেলা প্রশাসক হয়েছেন বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হয়েছেন।

তবে আমরা এখন যারা কাজ করছি, খুবই সাবলীলভাবে করতে পারছি। কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে না। বাংলাদেশের মানুষ শিক্ষাদীক্ষায় এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তন হচ্ছে। মানুষ নারীদের আর আগের মতো আলাদাভাবে দেখে না।আমি এখানে (চাঁদপুর) কাজ করছি দুই মাস হয়ে গেল। কাজ করতে গিয়ে সবার সহযোগিতা পাচ্ছি। দিনেরাতে যখনই প্রয়োজন, কাজ করে যাচ্ছি। কাজ করতে গিয়ে কোনো বাধার সম্মুখীন হচ্ছি না।প্রতিবেদক : চাকরিজীবনে আসার আগের দিনগুলো কেমন ছিল?

অঞ্জনা খান মজলিস : আমি একটি সম্ভ্রান্ত পরিবার থেকে এসেছি। আমার বাবা ও শ্বশুর দুজনই সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। আমার স্বামীও সরকারি কর্মকর্তা। এজন্য আমার কোনো পিছুটান ছিল না। সবসময় তাদের সহযোগিতা পেয়েছি। আমার বাবা ও শ্বশুর আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন।প্রতিবেদক : ধারাবাহিক সফলতার পেছনে কোন নামটি প্রথমে চলে আসে?অঞ্জনা খান মজলিস : সবার প্রথমে অবশ্যই আল্লাহর নাম। অনেক শুকরিয়া, তিনি আমাকে এ অবস্থানে এনেছেন। তারপর আমার বাবা ও মা। সবচেয়ে বেশি অবদান আমার বাবার। তিনি আমাকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার।

প্রতিবেদক : একটি জেলার প্রশাসক। পরবর্তী চাওয়া-পাওয়া সম্পর্কে যদি বলতেন…অঞ্জনা খান মজলিস : সবকিছুই ক্ষণস্থায়ী। শুধু কাজটা রয়ে যায়। আপনি যে কাজ করবেন, মানুষ সেটিই মনে রাখবে। এজন্য আমি মনে করি, যতদিন জেলা প্রশাসক হিসেবে সরকারি দায়িত্বে আছি, ততদিন যেন মানুষের সেবা করতে পারি। জেলা প্রশাসক হিসেবে আমার কাছে মানুষের যে চাওয়া, সেটা দিতে পারলেই আমি তৃপ্ত।