৫০ হাজার টাকায় খু’ ‘০নি ভাড়া করে ছে’লেকে হ’ ০’ত্যা করে নদীতে ভাসালেন মা

| আপডেট :  ১৪ মার্চ ২০২১, ০২:৪৫ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৪ মার্চ ২০২১, ০২:৩২ অপরাহ্ণ

অষ্টম শ্রেণির ছাত্র পারভেজ সন্ধ্যায় বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। রাতে সে আর বাসায় ফেরেনি। পরদিন সকালে ব্রহ্মপুত্র নদে ভাসমান অবস্থায় পারভেজের লা ০’শ খুঁজে পায় পুলিশ। পারভেজের মা’থার ক্ষ”তচি’হ্ন রয়েছে। পুলিশ নিশ্চিত তাকে হ’ ০’ত্যা করা হয়েছে। পুলিশ জানতে পারে, অত্যন্ত ভদ্র, শান্ত এ কি’শোরটির স’ঙ্গে এলাকা বা তার স্কুলে কারোর কোনো শ’০ত্রুতা ছিল না।

তবে তাকে নৃ০ ‘শংসভাবে হ’’০ ত্যা করল কে? এমন প্রশ্ন সঙ্গে নিয়ে পুলিশ পারভেজ খু’০ নের ত’দ’ন্ত শুরু করে। ঘটনাটি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের মরিচারচর নামাপাড়া এলাকার। ঘটেছে গত বছর অক্টোবরে।

পারভেজের বাবা মুঞ্জুরুল হক মালয়েশিয়া প্রবাসী। পাঁচ স’ন্তানকে নিয়ে স্বা’মীর বাড়িতে থাকেন স্ত্রী রোজিনা। পারভেজ ছিল তাদের বড় স’ন্তান। সে মরিচারচর উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। পারভেজের লা ০’শ উ’দ্ধা’রের পর গোটা এলাকায় শো’০কের ছায়া নেমে আসে। ঘটনার সময় পারভেজের সঙ্গে মোবাইল ফোন ছিল। সেটিও খোয়া গেছে।

থানা পুলিশ, সি’আইডি, র‌্যা’ব এবং পুলিশ ব্যুরো অব ই’নভেস্টিগেশন (পি’বিআই) পৃথকভাবে নিজেদের মতো করে ত’দ’ন্ত শুরু করে। পারভেজের খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনকে সূত্র ধরে পুলিশ ত’দন্ত এগিয়ে নিয়ে যায়। পিবিআই সেই সূত্র ধরে অ’ভিযান চা’লায় গাজীপুরের টঙ্গীতে। সেখান থেকে গ্রে’০ ফতার করা হয় রবিউল ইসলাম নামে এক যু’বককে। পুলিশ তাকে জেরা করলে সে একজন সাধারণ নি’রীহ বলে দা’বি করে।

তার বি’রু’দ্ধে কোথাও কোনো জি’ডি বা মা’মলাও নেই বলে জানায়। পুলিশ তার কাছ থেকে উ’দ্ধা’র হওয়া মোবাইল ফোন দেখিয়ে বলে, ওটার মালিক কে? রবি বুঝে যায়, সে ধ’রা পড়ে গে’ছে। রবিউল ইসলাম স্বী’কার করে, ব্রহ্মপুত্র নদে উ’দ্ধা’র হওয়া পারভেজের খু’০নি সে নি’জেই।

কেন পারভেজকে সে খু ‘০ন করেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে রবিউল যা বলল, তাতে কিছুক্ষণের জন্য হৃৎস্পন্দন যেন থমকে গিয়েছিল পুলিশ দলের। রবিউল বলেছে, খু’০ নের জন্য তাকে ৫০ হাজার টাকায় ভাড়া করেছিল পারভেজের মা নিজেই। চিফ জু’ডিশিয়াল ম্যা’জিস্ট্রেট আ’দালতে হা’জির করা হলে সে ১৬৪ ধারায় দায় স্বী’কার করে হ’ ০’ত্যার লো’মহ’র্ষক বর্ণনা দেয়। পুলিশ দ্রুত ময়মনসিংহ থেকে গ্রে’০ফতার করে পারভেজের মা রোজিনা ইয়াসমীনকে।

পারভেজের বাবা দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকায় পারভেজের মা রোজিনা জ’ড়িয়ে পড়েন একাধিক প”রকীয়ায়। রোজিনা দিন-রাত কথা বলতেন তার প্রে’মিকদের সঙ্গে। বড় ছেলে পারভেজ বি’ষয়টি আঁচ করতে পেরে নানাভাবে তার মা’কে বা”ধা দিত। তার মা যে নম্বরগুলোয় কথা বললেন পারভেজ কৌশলে সেই নম্বরগুলো ব্লক লি’স্টে রেখে দিত।

রবিউলের বাড়ি পারভেজের বাড়ির কাছেই। পারভেজের মা রোজিনা তার ফোনের ব্লক করা নম্বরগুলো রবিউলের কাছ থেকে আনব্লক করে নিতেন। রোজিনা ফোনে কথা বলার জন্য মোবাইলে টাকা রিচার্জ করে নিতেন রবিউলের মাধ্যমে। পারভেজ দিন দিন আরও জো’রালোভাবে তার মা’য়ের প”রকীয়ায় বা”ধা দিতে থাকে। তার মা’কে ভ”য় দেখায় সব ঘটনা সে তার বাবাকে বলে দেবে। ভ”য়ে ভী’ত হয়ে পড়েন পারভেজের মা। প’রিকল্পনা করতে থাকেন নিজ স’ন্তা’নকে হ’০ ‘ত্যা করে পথের কা”টা দূর করার।

এ দিকে রবিউল ই’সলাম রবি টঙ্গীতে গিয়ে গার্মেন্টে চাকরি নেয়। ছে’লেকে হ’ ০’ত্যা করে পথের কা”টা দূর করার প’রিকল্পনা মোতাবেক পারভেজের মা রোজিনা ফোন করে রবিউলকে জ’রুরি কথা আছে বলে টঙ্গী থেকে বাড়িতে আনেন। রোজিনা ছে’লে পারভেজকে খু০ ‘ন করার প্রস্তাব দেন রবিউলকে। বিনিময়ে অফার দেওয়া হয় ৫০ হাজার টাকা। লোভে পড়ে যায় রবিউল। অনেক চিন্তার পর রা’জি হয়ে যায়।

জিজ্ঞেস করে কীভাবে? তখন পারভেজের মা বলেন, তুমি নদীর পাড়ে গিয়ে অপেক্ষা কর, আমি পারভেজকে তোমার কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি। তখন রবিউল নদীর পাড়ে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে সে নদীর পাড়ে থাকা একটি গাছের মোটা ডাল তার কাছে রাখে। এদিকে রোজিনা তার ফোনটা পারভেজের হাতে দিয়ে বলে নদীর পাড়ে রবিউল আছে তুমি গিয়ে এই ফোনটা তাকে দিয়ে আস।

পারভেজ তার সাইকেল নিয়ে নদীর পাড়ের উদ্দেশে বের হয়। মায়ের কথায় সরল বিশ্বাসে মৃ’’ত্যুর দিকে এগোতে থাকে পারভেজ। পারভেজ নদীর পাড়ে পৌঁছে রবিউলকে দেখতে পায় এবং তার মা’য়ের দেওয়া ফোনটা রবিউলকে দিয়ে দেয়। ফোন রবিউলের হা’তে দিয়ে পারভেজ বাড়ির দিকে পা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রবিউল তার কাছে রাখা গাছের মোটা ডাল দিয়ে পারভেজের মা’থায় স’জো’রে একের পর এক আ’ঘা’ত করতে থাকে।

আ’কস্মিক আ’ঘা’তে হ’তবিহ্বল পারভেজ মা’টিতে লু”টিয়ে পড়ে। রবিউল পারভেজের স্মার্ট ফোন এবং পারভেজের মা’য়ের দেওয়া বাটন ফোন দুটি নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যা’গ করে। রবিউল পারভেজের মা’য়ের কাছে গিয়ে হ’’০ ত্যার ৫০ হাজার টাকা দা’বি করে। তখন পারভেজের মা তাকে বলেন, এখন তুমি যাও।

পারভেজের বাবা বিদেশ থেকে টাকা পাঠালে আমি তোমাকে ডে’কে দিয়ে দেব। রবিউল ওই রাতেই আবারও টঙ্গীতে ফিরে আ’ত্মগো’প’ন করে। পরদিন সকালে একই গ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে পারভেজের ম” রদেহ উ’দ্ধার করে পুলিশ।