গোপনে ৮ বিয়ে! যেভাবে সুন্দরী মেয়েদের টার্গেট করতো নক্সবন্দী

| আপডেট :  ৮ মার্চ ২০২১, ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৮ মার্চ ২০২১, ০৯:৫৪ পূর্বাহ্ণ

হাসানুর রহমান হোসাইন নক্সাব’ন্দী ওরফে মো. হাসান। তার প্রধান পরিচয় তিনি একজন । দেশের বিভিন্ন স্থানে তিনি ওয়াজ মাহফিল করে বেড়ান। তবে ৪র্থ স্ত্রীর মা’মলায় এখন তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কা’রাগারে (কেরানীগঞ্জ) রয়েছেন।

৪র্থ স্ত্রীর অ’ভিযোগ, এখন মা’মলা তুলে নিতে নক্সাব’ন্দীর পরিবারের লোকজন নানাভাবে চা’প দিচ্ছেন। মা’মলা তুলে না নিলে প্রা’ণনা’শের হু’মকি দিচ্ছেন প্র’তারণার শি’কার ভু’ক্তভোগী নারীকে।আজ শনিবার (৬ মার্চ) দুপুরে ১টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রা’ইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নক্সাব’ন্দীর ৪র্থ স্ত্রী ৩ মাসের কন্যা শি’শুকে নিয়ে এসব অ’ভিযোগ করেন। এ সময় তার পাশে বাবা ও মা উপস্থিত ছিলেন।

ওই নারী বলেন, বিয়ের পর আমি জানতে পারি, গো’পনে তার আরও ৭ স্ত্রী রয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লায় তার এক স্ত্রী ২টি মা’মলা করেছেন। এমনকি তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়িও হয়েছে। ওই ঘরে ২টি কন্যা স’ন্তান রয়েছে।বড় মেয়ের বয়স ৯ বছর। বিয়ের আগে এত বিয়ের তথ্য গো’পন করে আমার সঙ্গে প্র’তারণা করেছেন। এরপরও সবকিছু সহ্য করে তার সঙ্গে ঘর-সংসার করছিলাম। কিন্তু ২০২০ সালের অক্টোবর মাসের শেষ দিকে আমার বাবার কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে ৩ লাখ টাকা নেয়। যা ৩ নভেম্বর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।

সেই টাকা ফেরত চাইতে গেলে আমার স্বামী হাসান নক্সাব’ন্দী, ভাই আনাস ও মামা সুজন মোল্লা আমাকে শা’রীরিক নি’র্যাতন করেন। তারা জানায় কোনো টাকা ফেরত দেওয়া হবে না। এরই মধ্যে গত ২৮ নভেম্বর আমার একটি কন্যা শি’শু জন্মগ্রহণ করে।২৯ নভেম্বর আমার কোল থেকে বাচ্চা কেড়ে নিয়ে মে’রে ফেলার চেষ্টা চা’লায়। আমি চি’ৎকার করলে আনাস আমার মুখ চে’পে ধরে, আবুল কালাম ও সুজন মোল্লা এ’লোপাথাড়ি কিল ঘু’ষি মা’রতে থাকে। এরপর আমি ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনায় চলে যাই।

ওই নারী অ’ভিযোগ করে বলেন, এর আগে ২০১৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর পারিবারিকভাবে নক্সাব’ন্দীর সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। কুমিল্লার হোমনার দুলালপুরে এক পীরের আস্তানায় ওয়াজ মাহফিল করতে গিয়ে তিনি আমাকে পছন্দ করেন।আমার মা ওই পীরের ভক্ত ছিলেন। সেই সুবাদে নক্সাব’ন্দী পীরের মাধ্যমে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। রাজি না হলেও পীরের জো’রাজুরিতে একপর্যায়ে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যাত্রাবাড়ীর ধলপুর এলাকায় একটি বাসায় নিয়ে তোলেন আমাকে।

ওই নারী অ’ভিযোগ করেন, ধলপুরের বাসায় একা রেখে বাইরে তালা দিয়ে ১০ থেকে ১৫ দিন করে বাইরে থাকতেন এই ভণ্ড। একই ভবনের ৬ তলাতেও একটি বাসা ভাড়া রেখেছিলেন। যেখানে প্রায়ই অন্য নারীদের এনে ঝাড়ফুঁক ও বিভিন্ন স’মস্যা সমাধান করার কথা বলে রাত্রিযাপন করতেন।এ নিয়ে বললে আমাকে সবাই মিলে মা’রধর করতেন। মা’রধরের পর অজ্ঞান হয়ে যাই। এরপর হাসপাতালে গিয়ে ২০২০ সালের ১০ মার্চ পরীক্ষা করালে জানতে পারি আমি স’ন্তান-সম্ভবা। এরপর স’ন্তান ন’ষ্ট করতে উঠে পড়ে লাগে সবাই এবং নি’র্যাতন করে।

গত ১৮ জুন আবারও নি’র্যাতন করলে আমি যাত্রাবাড়ী থানায় জি’ডি করি। পুলিশ হাসান নক্সাব’ন্দীকে থানায় নিয়ে আসে। একপর্যায়ে তার ভাই আনাস ও মামা সুজন মোল্লা মুচলেকা দিয়ে থানা থেকে বের করে নিয়ে যান। এরপর আবার একই রকম অ’ত্যাচার চালাতে থাকেন।চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ঢাকার নারী ও শি’শু নি’র্যাতন দ’মন আ’দালতে মা’মলা করেন ওই নারী। আ’দালত মা’মলা আমলে নিয়ে মতিঝিল থানাকে ত’দন্তের দায়িত্ব দেয়।

হাসান নক্সাব’ন্দী কমলাপুর পুরাতন বাজার জামে মসজিদের খতিব হিসেবে কর্মরত থাকায় মতিঝিল থানা ত’দন্তের দায়িত্ব পায়। নক্সাব’ন্দীর বি’রুদ্ধে সত্যতা পাওয়ায় আ’দালত গত ১৯ ফেব্রুয়ারি গ্রে’প্তারি পরোয়ানা জারি করে। আর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নক্সাব’ন্দীকে গ্রে’প্তার করে মতিঝিল থানা পুলিশ।

এই নারী স্ব’রা’ষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির প্রতি অনুরোধ করে বলেন, আমি নিরীহ পরিবারের গরীব বাবা মায়ের স’ন্তান। নক্সাব’ন্দী আমাকে বিয়ে করে প্র’তারণা করেছেন। আমার কোলে একটি কন্যা স’ন্তান রয়েছে। এখন নানাভাবে আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের হু’মকি ধমকি দিচ্ছেন নক্সাব’ন্দীর পরিবারের লোকজন। আমি এ থেকে মুক্তি চাই, নক্সাব’ন্দীর শা’স্তি চাই।

মতিঝিল থানার এসআই হেলাল উদ্দিন বলেন, মাওলানা হাসানুর রহমান নক্সাব’ন্দীর বি’রুদ্ধে শিগগিরই আ’দালতে চার্জশিট দেওয়া হবে। রি’মান্ডে একাধিক বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন নক্সাব’ন্দী। একাধিক ঘরে ছেলে মেয়ে থাকার কথাও জানিয়েছেন তিনি।তিনি ওয়াজ মাহফিলের আড়ালে নারীদের টার্গেট করে বিয়ে করতেন। এরপর নানারকম নি’র্যাতন চালাতেন। এরমধ্যে কেউ কেউ তাকে ছেড়ে চলে গেছেন বলে জানিয়েছেন। চট্টগ্রামে তার একটি বাড়ি রয়েছে এবং সেখানে তার প্রথম স্ত্রী থাকার কথা স্বীকার করেছেন নক্সাব’ন্দী।