ফুলসজ্জার রাতে প্রথম ওর চোখে চোখ রাখা। ওমা! ক্ষু’ধার্তের মত তাকিয়ে আছে মা’য়াদয়াহীন এক জোড়া চোখ

| আপডেট :  ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৬:০৪ অপরাহ্ণ

মানসূরা মৌ
আজ সাতদিন হয়ে গেলো আমার বিয়ে হয়েছে!!

হলুদসন্ধ্যা, রূপসজ্জা, ফুলসজ্জার মাঝে টুপ করে কখন আমার শান্তকে ছে’ড়ে অন্যের হয়ে গেলাম টেরই পেলাম না। অথচ একসময় মনে হতো ওকে না পেলে আমি ম’রেই যাবো। ওমা সাতদিন হয়ে গেলেও এখনও দিব্যি বেঁ’চে আছি। বিয়ের আগের দিনই ভেবেছিলাম পা’লিয়ে যাবো কিন্তু বাঁ’ধা দিল শান্ত, বলে সামর্থ্য অর্জন না করে তোমায় গ্রহণ করতে পারি না।

ভালোবাসি বলেই তোমায় ভালো রাখতে চাই তোমার বাবা-মা এর সাথে কথা বলে ৬ টা মাস, সময় নাও, বিশ্বাস করো, তোমায় ভরণপোষণ করতে আমার বেগ পেতে হবে না।কিন্তু না এই রুকজানার তর সইল না। বাবার মায়ের কাছে বলার সাহস ও পেল না। দিব্যি পিএইচডি ধারী সায়েন্টিস্ট পেয়ে মাত্র ২৪ বছর ৭ মাস বয়সে বিয়ের পিঁড়িতে বসলাম। আর এমন সু পাত্র কে কোন বাবা-মা ই ছাড়ে।

বিয়েটা আমার বেশ জমকালোই হয়েছে। পাত্র আমেরিকাতেই সেটেল্ড। ওরা দুই ভাই এক বোন। মা-বাবা ভাই-বোন সবাই ফিরে এসেছে দেশেতে। ছেলেকে দেশে বিয়ে দিয়ে ওরা আবার বিদেশে থিতু হবে। পান-চিনি থেকে বিয়ের আগ পর্যন্ত ওর মানে আমার স্বামীকে দেখিনি (শান্ত রো’গে আ’ক্রান্ত ছিলাম)

ফুলসজ্জার রাতে প্রথম ওর সাথে চোখে চোখ রাখা। ওমা! আমি শিউরে উঠে চোখ নামিয়ে ফেললাম। মনে হচ্ছিল মা’য়াদয়াহীন এক জোড়া চোখ আমার দিকে ক্ষু’ধার্তের মতন তাকিয়ে আছে। হঠাৎ ধীরে ধীরে বললো, রুকজানা, তুমি ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ো। ও আর একটা কথা…ইয়োর নেইম ইজ টু লং, মে আই কল রুক??

তার কথায় ভ্যা’বাচা’কা খেয়ে শুয়ে কখন ঘুমিয়ে পড়লাম টেরই পেলাম না। বৌ ভাতের দিন খবর পেলাম আমার শ্বশুর -শাশুড়ি, দেবর আর ননদ কালই আমেরিকাতে ফ্লাই করবে। আমার স্বামীর কি এক গবেষণার জন্য এক বছর এখানে থাকতে হবে। শুনেই কেমন যেন অ’স্হির লাগছে। এতো বড় ফ্লাটে মাত্র দুজন আর এক জন কাজের লোক, সেই সাথে ওর ভাবলেশহীন চোখ!!

দ্বিতীয় রাতে খুব আ’তঙ্কি’ত ছিলাম। এই বুঝি আমার শ’রীরের উ’পর ঝাঁ’পিয়ে প’ড়ে। কিন্তু না, এই রাতে নিজ হাতে কফি বানিয়ে আমাকে এক মগ কফি দিয়ে, সেই শান্ত কন্ঠে, রুক তুমি রেস্ট করো, আমি রিসার্চের কাজটা শেষ করি।

অদ্ভুত ব্যাপারটা হলো ওই তিতকুটে কফি খেয়েও আমার ঘুম কা’টার বদলে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লাম। পরদিন হাত-পায়ে প্র’চন্ড ব্য’থা নিয়ে ঘুম ভা’ঙ্গলো। এমন মনে হচ্ছিল আমি ওঠার শক্তি পর্যন্ত পাচ্ছিলাম৷ এমন সময় ডঃ তামিম মানে আমার স্বামী ঘরে ঢুকেই বললো রুক! রাতে রিসার্চের কাজ শেষ করে এসে দেখি তুমি ঘুমাচ্ছো, তাই ডাকিনি।

সারা শ’রীরের য’ন্ত্র’ণায় আমার কথা বেরুচ্ছিল না। সে হটাৎ বলে রুক! সারা শ’রীরে ব্য’থা কি? বমি বমি লাগছে? ওর চোখ দুটো দুটো চকচক করছে।
ও কীভাবে জানলো আমার ব্য’থা, আমি তো বলিনি?

ভালো ভাবে তাকিয়ে দেখি ওর হাতে ও’ষুধ আর পানির গ্লাস। আমার হাতে ও’ষুধ দিয়ে বললো এটা খাও, আশা করি ব্য’থা কমে যাবে। আমি কিছুটা দ্বিধা নিয়েই ও’ষুধটা খেয়ে, কোনমতে নাশতা সেরে আবার ও ঘুমালাম।
#র’ক্তের_নে’শা
চলবে…