কৃষি ঋণ পেতে ১ লাখে ১০ হাজার টাকা ঘুষ

| আপডেট :  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ণ

কৃষি ব্যাংকের মাদারীপুর শাখায় কৃষি ঋণ নিতে লাখে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে চললেও ভুক্তভোগীরা পান না কোন প্রতিকার। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা। যদিও তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন শাখা ব্যবস্থাপক ও জেলা প্রশাসক।

মাদারীপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা আলী আজগর। বাড়িতে একটি গরুর খামার করার জন্য ঋণের আশায় কৃষি ব্যাংকের মাদারীপুর শাখায় কাগজপত্র জমা দেন ৪ মাস আগে। ব্যাংকের কর্মকর্তা সৌরভ মন্ডলের মাধ্যমে ৩ লাখ টাকা ঋণ পাইয়ে দিবে বলে নিরাপত্তা কর্মী মনোয়ার ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন বলে অভিযোগ তার। স্ত্রীর গহনা বন্ধক রেখে ২০ হাজার টাকা জোগাড় করে মনোয়ারকে ঘুষ দিলেও বাকি ১০ হাজার টাকার জন্য আজও পাচ্ছেন না কৃষি ঋণ।

ভুক্তভোগী আলী আজগর জানান, চার পাঁচ মাস আমাকে ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু কোন ঋণ দিচ্ছেন না। শুধু আলী আজগর নন। তার মতো অনেকেই এই ঘুষ বাণিজ্যের ‍শিকার। ঘুষ দিয়ে ব্যাংক থেকে কৃষি ঋণ নিলেও ব্যাংক কর্মকর্তাদের চাপে তারা মুখ খুলতে চান না। এর ফলে প্রকৃত কৃষকরা বাদ পড়ে যান স্বল্পসুদে সরকারের এই কৃষি ঋণের বিশেষ সুবিধা থেকে।

এক নারী কৃষক বলেন, আমরা জোর করি যে আমাদের লোন না ‍দিলে আমরা ফসল করবো কিভাবে।ঘুষ দিতে হয় বলে কৃষি ঋণ নিতে যান না বলেও জানান এক কৃষক। ‘তারা (ব্যাংকের কর্মচারিরা) ‘কানে কানে বলেন কিছু (ঘুষ) দিতে পারলে (লোনের ব্যবস্থা) করিয়ে দিবানে’ এমন প্রস্তাব দেয় বলেও জানালেন অপর এক কৃষক। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ব্যাংকের ম্যানেজার।

মাদারীপুর শাখা কৃষি ব্যাংকের নিরাপত্তা কর্মী মো. মনোয়ার হোসেন ঘুষের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ও আমাদের কোন টাকা দেয় নাই। ৩০ হাজার টাকায় ৩ লাখ টাকা লোন পাওয়ায় দিবো এই কথাও আমি বলি নাই। আমি বলেছি, লোন দেওয়ার ব্যাপারে আমি তোমাকে সহযোগিতা করব।

মাদারীপুর শাখা কৃষি ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক হোসেন আহাম্মদ বলেন, আমি জয়েন করার পর আমার নামে এখনও কোন অভিযোগ আসেনি।

এদিকে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়ে জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ঘুষ নিয়ে বা হয়রানি করে কৃষকদেরকে লোন নিতে হয় বা কৃষকরা লোন না পায় তাহলে আমরা সে ব্যপারে আইনগত ব্যবস্থা অবশ্যই নেব। কৃষি ব্যাংকের মাদারীপুর শাখা থেকে কৃষকদের নামে প্রতি বছর ১২ থেকে ১৪ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়।