ওসিকে থানায় বো’মা মা’রার নি’র্দেশ দিলেন এম’পি শাহীন চাকলাদার, অডিও ফাঁ’স নিয়ে তো’লপাড় (অডিওসহ)

| আপডেট :  ৩০ জানুয়ারি ২০২১, ০২:৪৫ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৩০ জানুয়ারি ২০২১, ০২:৪৫ অপরাহ্ণ

যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সং’সদ সদস্য ও জে’লা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এবং কেশবপুর থানার ওসি জসিম উদ্দীনের মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড ফাঁ”স হয়েছে। থানায় বো’মা মে’রে পরিবেশ আ’ন্দোলন ক’র্মীকে ফাঁ’সা’নোর নি’র্দেশনার ওই অডিও ফাঁ”সের পর তো’লপাড় সৃ’ষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভা’ইরাল হয়েছে অডিও রেকর্ডটি।

অডিও বি’ষয়ে জানতে চাইলে শনিবার কেশবপুর থানার ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, অনেক বি’ষয়েই এম’পি সাহেবের সঙ্গে কথা হয়। অডিও রেকর্ডের কথোপকথনের বি’ষয়টি আমার স্মরণে নেই।

এ প্রসঙ্গে শনিবার এম’পি শাহীন চাকলাদার বলেন, অডিও রেকর্ডটি টেম্পারিং করা হয়েছে। ও’সির সঙ্গে এ সংক্রান্ত কোনো কথা হয়নি। জনপ্রিয় এম’পিকে (শাহীন) বি’তর্কি’ত করার জন্য একটি পক্ষ মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে।

একাধিক সূত্র জানায়, পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) কর্মী কেশবপুর উপজে’লার বাসিন্দা মো. সাইফুল্লাহ সম্প্রতি সাতবাড়িয়া এলাকার ‘মেসার্স সুপার ব্রিকস’ নামে অ’বৈ’ধভাবে গড়ে ওঠা একটি ইটভাটার বি’রু’দ্ধে উচ্চ আ’দালতে রিট করেন। আ’দালত থেকে ভাটার বি’রু’দ্ধে নি’র্দেশনাও আনেন। আর এতেই ক্ষি’প্ত হন এম’পি শাহীন চাকলাদার। তিনি সপ্তাহ দুই আগে কেশবপুর থানার ওসি জসিম উদ্দীনকে ফোন করে থানায় বো’মা মে’রে ‘ডা’কা’তি’ চে’ষ্টার অ’ভিযো’গ এনে সাইফুল্লাহকে মা’ম’লার আ’সা’মি করতে বলেন।

শাহীন চাকলাদার নিজের পরিবেশ ও বন ম’ন্ত্রণালয় বি’ষয়ক সং’সদীয় কমিটির সদস্য পরিচয়ের কথা উল্লেখ করে ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আপনি রাতেই থানায় বো’মা মা’রে’ন। তারপর সাইফুলের নামে মা’ম’লা করেন। এরপর বলেন, পুলিশকে সিভিল কাপড়ে পাঠিয়ে ইটভাটায় বো’মা মে’রে ডা’কাতির উদ্দেশ্যে হা’ম’লা- এমন একটা মা’ম’লা দেন। তিনি ওসিকে বলেন, মা’ম’লা করতেই হবে- এটাই শেষ কথা।’

এই অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভা’ইরাল হয়েছে। কিছু গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। এম’পি এবং ওসির কথোপকথনের অডিও ফাঁ”সে তো’লপাড় হয়েছে।

এমপি শাহীন চাকলাদার ও ওসি মো. জসিম উদ্দিনের কথোপকথন:

ওসি: আসসালামু আলাইকুম স্যার।

শাহীন চাকলাদার: সাতবাড়িয়ার সাইফুল্লাহ কিডা, চেনো?

ওসি: সাতবাড়িয়া, সাইফুল্লাহ আছে, স্যার ওই ইটভাটার একটা বি’ষয় নিয়ে সাইফুল্লাহ, ‘বেলা’য় যেয়ে মা’ম’লা-টা’মলা করে আর কী। বাজে একটা ছে’লে স্যার।

শাহীন চাকলাদার: আপনি এখন রাত্তিরে থানায় বো’ম মা’রে’ন একটা। মা’রা’য়ে ওর নামে মা’ম’লা করতে হইবে। পারবেন? আপনি থাকলে এগুলো করতে অইবে। না অইলে কোনো জায়গায় করবেন? আমি যা বলছি, লা’স্ট কথা ইডাই। যদি পারেন ওই এলাকা ঠাণ্ডা রাখতি, আমি বন ও পরিবেশ বি’ষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য। ওখানে কারও বাপের ক্ষ’মতা নেই। সে (সাইফুল্লাহ) বারবার যেয়ে কেন করে, আপনি কী করেন?

ওসি: ও তো স্যার হাইকোর্টের কাগজ নিয়া আসে বারবার।

শাহীন চাকলাদার: আরে কোথার হাইকোর্ট-ফাইকোর্ট। কোর্ট-ফোর্ট যা বলুক, বলুইগ্যা। আমাদের খেলা নাই? খেলা নাই?

ওসি: হাইকোর্টে স্যার…

শাহীন চাকলাদার: ওসি হলি, ওসি কিন্তু ডায়নামিক হইতে অয়। আজকে বাঘারপাড়ার ওসি আসছিল আমার কাছে। ওরে আবার চৌগাছায় দিয়ে দিচ্ছি। ও ওসি… চেনেন? বাঘারপাড়া ওসিকে চেনেন?

ওসি: চিনি না আবার স্যার? মামুন সাহেবরে?

শাহীন চাকলাদার: কথা বইলেন তার সঙ্গে। তাকে নিয়ে আসতেছি চৌগাছায়। আপনে ওকে যে কোনোভাবে, যে কোনো লো’ক দিয়ে, কাইলকে যে কোনো দু’র্ঘটনা ঘটায়ে কালকে কাজটা করেন, ওকে?

ওসি: স্যার, দেখি স্যার। কী হয়েছে স্যার? ও কি ডি’স্টার্ব করতেছে আবার?

শাহীন চাকলাদার: ও কী ডিস্টার্ব করবে? আচ্ছা, বন ও পরিবেশ অফিসে আমি আছি। কার বাপের ক্ষমতা আছে এখানে আসবে! আমি বলছি কী, একটা আপনি খেলা খেলে ওকে ভেতরে নিয়ে আসেন। কথা বুঝেন নাই?

ওসি: স্যার, স্যার। দেখবোনে স্যার।

শাহীন চাকলাদার: কেমন অফিসার আপনি, আল্লাই জানে। কাজ দিলি কাজ পারেন না।

শাহীন চাকলাদার: সব কাজ করেন, না? তালিপরে যে কোনো ভাটায় যেয়ে, দরকার হলি পুলিশের লো’ক দিয়ে সিভিলে বো’ম ফা’টায় দিয়ে চলে আসুক। বলতে হবি যে হা’ম’লা করেছে ডা’কা’তি করার জন্য। এটা ছিল অমুক। একটা বানাই দিলে অয়া গেল।

উল্লেখ্য, যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সং’সদ সদস্য ও সাবেক জনপ্রশাসন প্র’তিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকের মৃ’’ত্যুর পর ২০২০ সালের ১৪ জুলাই যশোর-৬ আসনে উপনির্বাচন হয়। ওই উপনির্বাচনে বিজয়ী হন যশোর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। শাহীন চাকলাদার সদর উপজে’লা পরিষদের তিনবার নির্বাচিত চেয়ারম্যানও ছিলেন।

সূত্রঃ যুগান্তর