দিন-রাত পা’প ক’র্মে ডুবে আছে কু’খ্যা’ত এক দ্বীপ

| আপডেট :  ২৩ জানুয়ারি ২০২১, ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৩ জানুয়ারি ২০২১, ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ণ

লেক ভিক্টোরিয়ায় ভাসছে কু’খ্যা’ত এক দ্বীপ। নাম তার রেম্বা। যেখানে যৌ’ 0নক’র্মী, মা’দ’ক ও ম’দের এক স্বর্গরাজ্য। রেম্বা দ্বীপের টিনের চালের বাড়িগুলো দিনে দুইবার ভাড়া দেয়া হয়। লেক ভিক্টোরিয়া সম্পর্কে অনেকেই জানেন। আফ্রিকা মহাদেশের বৃহত্তম এবং পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তমহ্রদ এটি। কেনিয়া, তানজানিয়া এবং উগান্ডার মধ্যবর্তী একটি সুউচ্চ মালভূমির উপর অবস্থিত এই হ্রদের দৈর্ঘ্য ৩৫৯ কি.মি ও প্রস্থে ৩৩৭ কি.মি.। আয়তনে হ্রদটি প্রায় ৬০ হাজার বর্গ কিলোমিটার।

পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম হ্রদ লেক ভিক্টোরিয়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে প্রায় তিন হাজার দ্বীপ। এগুলোর মধ্যে অনেক দ্বীপেই আছে জনবসতি। এই হ্রদ থেকে মাছ শি’কার করেই চলে এসব জনবসতির জীবন। এসব যাযাবর মা’নুষদের নেই নিজস্ব বাড়ি-ঘর। আজ এই দ্বীপ, তো কাল ওই দ্বীপে ভবঘুরের মতো ঘুরে বেড়ায় তারা।

লেক ভিক্টোরিয়ার হাজারো দ্বীপের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে রেম্বা। কু”খ্যা’ত ও বি’তর্কি’ত এই রেম্বা দ্বীপে চলে নানা অ’সামাজিক ক’র্মকা’ণ্ড। যৌ’ 0নক’র্মী, আফ্রিকার কু’ খ্যা’ত অ’পরা’ধী, ড্রাগ পা’চা’রকারীদের গা ঢাকা দেয়ার শীর্ষস্থান হলো এই রেম্বা আইল্যান্ড। মাত্র দুই হাজার বর্গ মিটারের এই দ্বীপের জনসংখ্যা ২০০৯ সালে ছিল মাত্র ১৩১ জন।

তবে এর বর্তমান জনসংখ্যা ২০ হাজারেরও বেশি। রেম্বা নামক ক্ষুদ্র দ্বীপটি যেন আরেক ছোট্ট আফ্রিকা। সেখানে রয়েছে আফ্রিকার সব দেশেরই মানুষ। ছোট্ট এই দ্বীপে নেই পা ফেলার জায়গা। গিজগিজ করছে মানুষ। এইটুকু দ্বীপে গায়ে গায়ে ঘেঁ’ষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে আছে করো’গেটেড টিনের চালাঘর।

রেম্বাতে স্বা’স্থ্য ও পরিস্কার প’রিচ্ছন্নতার কথা কেউ ভাবেন না। দ্বীপের চারদিকে আ’বর্জনার স্তূপ। দ্বীপটির চারপাশে মলমূত্র থেকে শুরু করে ব্যবহৃত স্যানিটারি প্যাড, কন্ডোম, ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ ও সুঁচ পড়ে থাকে। সেই সঙ্গে মাছ প’চা গ’ন্ধ তো রয়েছেই। অবাক করা বি’ষয় হলো, এই পরিবেশেই বাস করছে ২০ হাজারেরও বেশি মা’নুষ।

রেম্বা দ্বীপের টিনের ছাউনি দেয়া বাড়িগুলো প্রতিদিন দুইবার ভাড়া দেয়া হয়। ঘরগুলো দিনে একজন ও রাতে আরেকজন ভাড়া নেয়। যারা রাতে মাছ ধরেন, দিনের জন্য ঘর ভাড়া নেন। কেউ দিনে মাছ ধরলে ঘর ভাড়া নেন রাতটুকুর জন্যই। ভাড়া ১২০০ থেকে ছয় হাজার টাকা। এই বাড়িগুলোকে বলে উসিসেমে। কিছু বাড়ি যৌ’ 0নকর্মীরা ভাড়া নিয়ে রাখেন। তাদের ব্যবসা চা’লানোর জন্য। প্রতিদিন ভোরে এই দ্বীপ থেকে ২০০ মা’নুষ বের হয়ে যায় আর ৪৯০ জন নতুন মানুষ ঢোকেন।

আপনার চোখ কপালে উঠবে এদের পয়ঃনিষ্কাষণ ব্যবস্থার কথা জানলে! ২০ হাজার মা’নুষের জন্য দ্বীপে আছে মাত্র চারটি পাবলিক টয়লেট। মাটির ভেতরে করা গর্ত আর চার দিকে বেড়া এটাই টয়লেট। দ্বীপে কয়েকটি ও’ষুধের দোকান রয়েছে। আর দোকানগুলো চা’লায় হা’তুরে ডাক্তারেরা। ভু’ল ও’ষু’ধে শি’শুর মৃ’’ত্যু সেখানকার নৈমিত্তিক ঘটনা। বেশিরভাগ দোকানই মা’দ’কজা’তীয় ট্যাবলেট, অন্যান্য ও’ষুধ ও ক’ন্ডোম দিয়ে ঠাসা। যৌ’ 0নরো’গ ও এ’ইডস দ্রুত ছড়াচ্ছে দ্বীপটিতে, তবুও তাদের নেই কোনো মা’থা ব্য’থা!

এই দুই হাজার বর্গমিটার দ্বীপের মধ্যে আছে, মাছের আড়ত, একটি গির্জা, একটি ম’সজিদ, জু’য়ার অসংখ্য কাউন্টার, ম”দ ও ড্রা’গের পাব, সেলুন, ও’ষুধের দোকান, খাবার হোটেল ও হাজার তিনেক যৌ’ 0নকর্মী। চলে জু’য়া খে’লার প্রতিযোগিতা, লো’কে এখানে যেমন আমির হয়, তেমনি ফ’কিরও হয়। এখানে দে’হব্যবসা বে’আ’ইনি নয়।

সারাদিন মাছ শি’কার করে লেকের চারদিক থেকে এসে ভিড়ে মাছ ভর্তি নৌকো। সেই মাছগুলো রেম্বা দ্বীপের আড়তে বেচে মৎস্যজীবীরা। মাছ বেচা টাকা দিয়ে প’তি’তা স’ঙ্গ করে বা সেই টাকা ড্রা’গ ও ম’দে উ’ড়িয়ে পরদিন আবার নৌকা নিয়ে জলে নামেন হাজারো ম’ৎস্যজীবী।

একজন যৌ’ 0নকর্’মী দিনে ভারতীয় মুদ্রায় পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করেন। দ্বীপে ব্যাঙ্ক নেই, তাই যৌ’ 0নক’র্মীরা টাকা রাখতে বা’ধ্য হন নিজের পোশাকের মধ্যে। কখনো সেই টাকা অন্যজন কে’ড়ে নেয়। তাই কয়েক সপ্তাহ পরপরই টাকাকড়ি লু’কিয়ে নিয়ে উ’ধাও হয়ে যান অনেক যৌ’ 0নকর্মী। স’ঙ্গে করে বয়ে নিয়ে যান যৌ’ 0ন রো”গ।

রেম্বা দ্বীপের ওইসব টিনের ঘরে মেলে বিভিন্ন বয়সের যৌ’ 0নক’র্মীদের। জায়গা না থাকায় একই ঘরে ১০ থেকে ১২ জন যৌ’ 0নক’র্মী একই স’ঙ্গে যৌ’ 0নক’র্মে লি’প্ত হন। অন্যদিকে ঘরের বাইরে অপেক্ষায় থাকেন আরো খদ্দেররা। যৌ’ 0নক’র্মীদের শি’শুরা রা’স্তায় খেলে বেড়ায়, অ’পরিচিত লো’কদের হা তে যৌ’0’ন নি’গ্রহের শি’কা’র হয়, আর টিনের ঘরে যৌ’ 0নশো’ষিত হয় তাদের মা’য়েরা।

কু’খ্’যাত রেম্বা দ্বীপে রয়েছে আবার পু’লিশও, তাদের সংখ্যা মাত্র নয় জন। এই কয়জন পু’লিশের পক্ষে তো আর ২০ হাজার মা’নুষকে সামলানো স’ম্ভব নয়। এই দ্বীপের প্’রভাবশালী ব্যবসায়ীরা কেনিয়ার মাসাইদের (দ্বীপের ক্ষমতাশীল সে’নাবা’হিনী) পয়সা দিয়ে পো’ষেন। অ’পরা’ধ করে আ’ইনের হা’ত এড়িয়ে রেম্বাতে লু’কিয়ে থাকেন এসব প্র’ভাবশালীরা। আর রেম্বা থেকে জলপথে পার্শ্ববর্তী যে কোনো দেশে পা’লিয়ে যাওয়া অত্যন্ত সহজ। তাই রেম্বা দ্বীপ দুর্’বল প্র’শাসনের আওতায় থেকে হয়েছে কু’খ্যা’ত।