রাত নামলেই ঢাকায় অন্যরকম উদ্দাম পার্টি: কারও হাত বান্ধবীর কাঁধে, কোলে বসছে কেউ

| আপডেট :  ২২ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:১৩ পূর্বাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২২ জানুয়ারি ২০২১, ০৯:১৩ পূর্বাহ্ণ

রাজধানী ঢাকা শহরে রাত নামলেই নানা রকম বিষয় ফুটে ওঠে। বিশেষ করে বিভিন্ন তারকা হোটেল-রিসোর্টে অনেক মানুষ যাওয়া আসা করে। তবে কিছু তারকা হোটেল-রিসোর্টে নানা রকম আয়োজন করা হয়। এমনকি তরুণীদের মাধ্যমে উ’দ্দাম পার্টির আয়োজন করানো হয়। আর এই সকল তরুণীরা অনেক সময় টাকার বিনিময়ে খারাপ কাজ করে থাকে। এবার রাজধানী ঢাকা শহরের উদ্দাম পার্টির চিত্র এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

রাত নামলেই ভিন্নরূপ ধারণ করে ঢাকা। বদলে যায় ঢাকার বিভিন্ন তারকা হোটেল-রিসোর্টের দৃশ্যপট। নিয়নবাতি, লেজার লাইটের ঝলকানি। তরুণ-তরুণীদের হই-হুলোড়, উল্লাস। হিন্দি-ইংরেজি পপ গানের সঙ্গে নাচ। বিদেশি ব্রান্ডের অবৈধ জিনিসের ঘ্রাণ। বিটের তালে তালে কেঁপে ওঠছে চারপাশ। নিচতলার বিশাল রুমে আয়োজন করা হয়েছে নাচ, গানের। রুমটির চার পাশে সারিবদ্ধ সোফা, চেয়ার।

মাঝখানে ড্যান্সফ্লোর। রুমের ভেতরে দো’তলার সিঁড়ির পাশে দাঁড়িয়ে ডিস্ক জকি। হিন্দি-ইংরেজি গান মিলিয়ে বাজাচ্ছেন এই ডিজে তরুণী। তার পাশে দাঁড়িয়ে দুই তরুণী ও এক তরুণ। গানের তালে তালে শরীর দুলানোর চেষ্টা করছেন তারা।তরুণের হাতে বিয়ারের ক্যান। পান করছেন আর হুররে বলে চিৎকার করছেন। বিয়ার এগিয়ে দিচ্ছেন ওয়েস্টার্ণ পোশাক পরিহিতা পাশের তরুণীকে। ওই তরুণীও চুমুক দিচ্ছেন। একে অন্যের কাঁধে হাত রাখছেন। কাছে টেনে নিচ্ছেন। বেসামাল অবস্থা ড্যান্সফ্লোরে। স্বল্পবসনা পার্টিগার্লরা নাচ করছেন।

সোফা থেকে দর্শককদের কেউ কেউ ওঠে এসে যোগ দিচ্ছেন তাদের সঙ্গে। পান করছেন আর নাচছেন। ১৯ বছরের তরুণ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের দেখা গেছে তরুণীদের সঙ্গে উ’দ্দাম নাচে অংশ নিতে। গানের তালে তালে শরীর দোলাচ্ছেন আর এক হাতে সঙ্গীকে জড়িয়ে রেখেছেন কেউ কেউ। কারও এক হাত বান্ধবীর কাঁধে বা পে’টে অন্য হাতে বি’য়া’রে’র ক্যান।

শীতের রাতে নাচতে নাচতে ঘেমে যাচ্ছেন অনেকে। এরমধ্যেই এক বয়স্ক ব্যক্তি ড্যান্সফ্লোরে পার্টিগার্লদের একের পর এক টাকা দিচ্ছেন। নাচতে নাচতে তার কাছে গেলেই টাকা জোটে পার্টিগার্লদের। সব তরুণীরা তখন তার দিকেই ঝুঁকছেন। তার পাশে, কোলে বসছেন কেউ কেউ। টেনে তাকে কাছে নিয়ে একসঙ্গে নাচার চেষ্টা করছেন। সব মিলিয়ে এ এক অন্য রকম রাত, অন্য রকম দৃশ্যপট। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিন্নরূপ ধারণ করে এই পার্টি।

দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে বিশিষ্ট এক ব্যক্তি। তার সেবায় নিয়োজিত কয়েক কর্মচারী। রয়েছেন দুই তরুণী। দরজা বন্ধ। এক তরুণীসহ ভেতরে বিশ্রাম নিচ্ছেন তিনি। প্রায় আধাঘণ্টা পর ওই তরুণী রুম থেকে বের হন। ততক্ষণে তার ঠোঁটের লিপিস্টিক অনেকটা নেই। লেপ্টে আছে ঠোঁ’টের নিচে। চুলগুলো এলোমেলো। কিছুক্ষণ পর ওই রুমে যান আরেক তরুণী। দীর্ঘ বিশ্রাম শেষে শেষরাতে ওই অতিথি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো গাড়িতে করে রিসোর্ট ত্যাগ করেন। তার সঙ্গে বেরিয়ে যান কয়েক জন।

দ্বিতীয় তলার রুমটি এবার অন্যদের বিশ্রামাগারে পরিণত হয়। অর্থের বিনিময়ে সঙ্গীসহ বিশ্রাম নিচ্ছেন পার্টিতে অংশগ্রহণকারীরা। এভাবে নিচে নাচ, গান। উপরে বিশ্রাম। রাতভর চলছিলো পার্টি।

ঢাকার অদূরে তুরাগ নদীর তীরে একটি রিসোর্টের পার্টির দৃশ্য এটি। পুলিশের বাধার কারণে পার্টি নিয়মিত হয় না। মাঝে-মধ্যে আয়োজন করা হয়। যখন আয়োজন করা হয় তখন অবশ্য বিশিষ্ট কোনো ব্যক্তি অতিথি হিসেবে থাকেন সেখানে। তাই তেমন কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না আয়োজকদের।

ভেতরে যখন পার্টি চলছে বাইরে তখন রিসোর্টের নিরাপত্তা বলয়। কয়েক নিরাপত্তাকর্মী বাইরে দায়িত্ব পালন করছেন। নির্দিষ্ট টিকেট ছাড়া কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। গত বৃহস্পতিবারের ওই পার্টিতে প্রায় অর্ধশত তরুণী ও বিভিন্ন বয়সের শতাধিক পুরুষের উপস্থিতি ছিলো। সূত্র: মানবজমিন

এদিকে, এই সকল পার্টিতে তরুণীদের দিয়ে খারাপ কাজও করানো হচ্ছে। তবে তরুণীরা অর্থের জন্য সব কিছু করতে রাজি হয়। আর এই সকল ঘটনা প্রায় সময় ঘটে থাকে বলে অভিযোগ উঠে আসে। কিন্তু এই সকল হোটেল-রিসোর্ট যারা পরিচালনা করেন তারা সব সময় ক্ষমতার জোর দেখান। যার কারণে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও তেমনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না বলে মনে করেন অনেকে।