উনাকে আমি চিনি না, তার সঙ্গে আমার পরিচয়ও নেই: বাঁধন

| আপডেট :  ২৮ অক্টোবর ২০২২, ০৮:২০ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৮ অক্টোবর ২০২২, ০৮:২০ অপরাহ্ণ

নাটক ও সিনেমায় অনবদ্য অভিনয় করে আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়েছেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। তার আজ জন্মদিন। কততম? বয়স প্রকাশে ক্ষেত্রে শোবিজ তারকাদের মধ্যে সংকোচ থাকলেও তিনি এ ব্যাপারে রীতিমত খোলাখুলি। এ কথা তিনি নিজেই জানিয়ে আসছেন বছরের পর বছর। এবারও জানালেন। তার বয়স ৩৯ বছর। ২৭ অক্টোবর দিবাগত রাত ১২টার পর তিনি তার ফেসবুক ভেরিফাইড পেজে জন্মদিন উপলক্ষে একটি পোস্ট দিয়েছেন।

পোস্টে তিনি লিখেছেন, এটা আমার জন্মদিন!!!! আমার জন্ম ১৯৮৩ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকায়। যদিও আমি প্রায় ৩৯ বছর ধরে পৃথিবীতে আছি। আমার জীবন সত্যিই শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে যখন আমি সমাজ এবং আমার পরিবার দ্বারা সংজ্ঞায়িত “আদর্শ নারী” হিসাবে আমার পরিচয় হারিয়েছিলাম! তারপর ৫ বছর চলে গেছে। এখন আমি জানি, আমি কি চাই। আসলে আমার শান্তিপ্রিয় জীবন ছাড়া আর কিছুই চাওয়ার নেই।

বিশেষ এই দিনে ভক্ত-অনুরাগী-বন্ধু-স্বজনদের কাছ থেকে নানান উপহার ও ভালোবাসাময় শুভেচ্ছা পাচ্ছেন বাঁধন। তবে এদিন অন্যরকম এক উপহার পেয়ে আবেগে আপ্লুত এই তারকা। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাঁধনকে নিয়ে একটি লেখা পোস্ট করেছেন ব্যারিস্টার ও প্রগতিশীল লেখক ইমতিয়াজ মাহমুদ।

ইমতিয়াজ মাহমুদ লিখেছেন, ‘আজমেরী হক বাঁধন একজন লোকপ্রিয় নায়িকা। তার ছবি দেশের জন্যে আন্তর্জাতিক সম্মান বয়ে এনেছে সে কথা তো সকলেই জানেন। তাকে আমি কেবল অভিনেত্রী অভিনয়শিল্পী বা ইংরেজিতে অ্যাক্টর না বলে নায়িকা বলতেই পছন্দ করবো-আর ইংরেজিতে হিরো। কেন? কেননা এই অভিনেত্রী কেবল তার পেশাগত ক্ষেত্রে অর্থাৎ অভিনয়ের ক্ষেত্রেই যে নায়কোচিত অগ্রসরতা দেখিয়েছেন সেটা তো কেবল নয়- নিজের জীবনে এবং সমাজের সর্বত্র তিনি একটা লড়াইয়ের অগ্রভাগে দাঁড়িয়ে লড়ছেন প্রতিদিন। ওকে তাইলে আপনি হিরো বলবেন না তো কি কেবল অভিনেত্রী অভিধায় সীমিত রাখবেন?’

এই লেখক আরও লেখেন, ‘না, নানাপ্রকার লড়াই তো আমাদের সকলকেই নিজেদের জীবনে লড়তে হয়। বাঁধনকেও লড়তে হয়েছে, প্রতিদিনই লড়তে হয়। আর যদি এই পোড়ার দেশে নারী হয়ে জন্মগ্রহণ করে থাকে কেউ তাইলে তো তার লড়াইটা শুরু হয়ে মায়ের গর্ভ থেকে বাইরে আসার সাথে সাথেই। কখনো কখনো তো মায়ের গর্ভে থাকতেই নারী শিশুটির টিকে থাকার লড়াই শুরু হয়ে যায়।’

‘বাঁধনও একজন নারী তাকেও তো লড়তে হবেই- এটাই তো স্বাভাবিক। তবু অন্য সকলের সাথে আমাদের এই হিরোর লড়াইয়ের একটা পার্থক্য রয়েছে। বাঁধন তার লড়াইটা জানেন, শত্রু মিত্র চেনেন এবং জানেন যে তার প্রতি যে আক্রমণ সেটা কেবল তার ব্যক্তিগত বিড়ম্বনা বা বিপদ মাত্র নয়, এটা হচ্ছে নারীর প্রতি পিতৃতন্ত্রের হাজার বছরের পুরনো আক্রমণ ও আঘাতেরই একটা অংশ মাত্র।’

লেখকের স্ট্যাটাসের সবশেষ বাঁধনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছাও জানান এই লেখক, ‘আজকে আজমেরী হক বাঁধনের শুভ জন্মদিন। আপনাকে অভিবাদন বাঁধন। শুভ জন্মদিন।’

এ নিয়ে বাঁধন জানান, এই লেখককে কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। তার সঙ্গে আমার পরিচয়ও নেই। দূর থেকে জেনেই তিনি আমাকে নিয়ে লিখেছেন। লেখাটি পড়ে সত্যিকার অর্থেই আমি আনন্দিত এবং অনুপ্রাণিত। আমার জীবনের জার্নিটা তো অনেক কঠিন। সে জার্নিটার মধ্যে যখন মানুষের এমন ভালোবাসা পাই তখন সত্যিকার অর্থেই মনের ভেতর একটা শক্তি অনুভব করি। মানুষের এমন ভালোবাসা নিয়েই পথ চলতে চাই।