শঙ্কট ও শঙ্কা থেকে মুক্তি পেতে করণীয় ও দোয়া

| আপডেট :  ১৪ জানুয়ারি ২০২১, ০৫:৫৯ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৪ জানুয়ারি ২০২১, ০৫:৫৯ অপরাহ্ণ

সুখ আর দুঃখ মিলিয়েই মানুষের জীবন। প্রতিটি মানুষই তার জীবনে বিভিন্ন সময়ে সঙ্কট ও শঙ্কার মুখোমুখি হয়। মানুষের জীবনে ভালো এবং খারাপ সময়ের আবর্তন নিয়ে মহান আল্লাহ সূরা আল-ইমরানের ১৪০ নং আয়াতে বলেছেন, মানুষের মধ্যে আমি পালাক্রমে এই দিনগুলোর আবর্তন-পরিবর্তন ঘটাই।’ আর কোরআন এবং হাদীসে মানুষের জীবনব্যবস্থার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যেমন আলোচনা হয়েছে তেমনি আলোচনা হয়েছে সঙ্কট এবং শঙ্কার মুহুর্তে করণীয় নিয়েও।

হাদীসে বর্ণিত আছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রীতি ও আদর্শ ছিল সব বিষয়ে মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া। যখনই তাঁর সামনে কোনো সামান্য উদ্বেগের বিষয়ও উপস্থিত হত তখনই তিনি নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন এবং দোয়া নিয়োজিত থাকতেন।

হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অভ্যাস ছিল- প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়ার রাত হলে তাঁর আশ্রয়স্থল হত মসজিদ যতক্ষণ না ঝড়ো হাওয়া শান্ত হত। আর যখন আকাশে সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা ঘটত তখনও তাঁর আশ্রয়স্থল হল নামাজস্থল (অর্থাৎ তিনি এ সঙ্কটময় মুহূর্তে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতেন এবং শঙ্কামুক্ত হওয়ার জন্য নামাজ অব্যাহত রাখতেন) যতক্ষণ না সূর্য বা চন্দ্র গ্রহণমুক্ত হয়ে যেত।’

এছাড়া পবিত্র কোরআনেও আল্লাহ তাআ’লা বিপদের সময়ে তার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করতে বলেছেম। সূরা বাকারার, ১৫৩ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে (আল্লাহর কাছে) সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’

সূরা নামলের ৬২ নং আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন, ‘বলুন তো কে অসহায়ের ডাকে সাড়া দেন; যখন সে (অসহায় ব্যক্তি) ডাকে এবং কষ্ট দূরীভূত করেন এবং তোমাদের প্রত্যেককে পৃথিবীতে আগের লোকদের স্থলাভিষিক্ত করেন। সুতরাং আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনো উপাস্য আছে কি? তোমরা অতি সামান্যই স্মরণ কর।’

এমনকি আল্লাহর নিকট তার বান্দারা কিভাবে সহচোগিতা চাইবেন এবিষয়েও আল্লাহ তা’আলা নির্দেশনা দিয়েছেন। সূরা তাহরিমে আল্লাহ তা’আলা বলেছেন ‘মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর; বিশুদ্ধ তাওবা। আশা করা যায়, তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের মন্দ কাজগুলো মুছে দেবেন আর তোমাদের সবাইকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। আল্লাহ সেদিন নবি এবং তাঁর বিশ্বাসী সহচরদের সবাইকে অপদস্থ করবেন না। তাদের নূর তাদের সামনে ও ডানদিকে ছুটোছুটি করবে। তারা বলবে- হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের নূরকে পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি সবকিছুর উপর সর্ব শক্তিমান।’

সঙ্কট ও শঙ্কায় দোয়া: চরম বিপদের সময় হজরত ইউনুস আলাইহিস সালাম যেভাবে আল্লাহর কাছে নিজেকে সর্ম্পন করে দিয়েছিলেন তেমনই বিপদের মুহূর্তে সবার উচিত তাওবা-ইসতেগফার করা, আল্লাহর দিকে রুজু হওয়া এবং নিম্নোক্ত দোয়াগুলো বেশি বেশি পড়া-
– لَا إِلَهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
উচ্চারণ : ‘লা ইলাহা ইল্লা আংতা সুবহানাকা ইন্নি কুংতু মিনাজ জালিমিন।’
অর্থ : ‘তুমি ব্যতিত কোনো উপাস্য নেই; তুমি নির্দোষ আমি গোনাহগার।’ (সুরা আম্বিয়া : আয়াত ৮৭)

– نَصْرٌ مِّنَ اللَّهِ وَفَتْحٌ قَرِيبٌ
উচ্চারণ : নাসরুম মিনাল্লাহি ওয়া ফাতহুং কারিব।
অর্থ : ‘আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে সাহায্য ও আসন্ন বিজয়।’ (সুরা সফ : আয়াত ১৩)