মাহবুব থেকে যেভাবে হয়ে ওঠেন সাদেক বাচ্চু

| আপডেট :  ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৭:২১ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৭:২১ অপরাহ্ণ

খলনায়কের চরিত্রে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছে যে মানুষগুলো। তাদের মধ্যে সাদেক বাচ্চু একজন। তিনি অন্যান্য চরিত্রসহ প্রায় ৫০০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। আজ দুই বছর হলো তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন। মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২০২০ সালের এই দিনে তিনি পরলোক গমন করেন।

সাদেক বাচ্চুর আসল নাম মাহবুব আহমেদ সাদেক। কিংবদন্তী এই অভিনেতা মাত্র ৮ বছর বয়সে অভিনয় জগৎ-এ প্রবেশ করেছিলেন। তার জন্ম ১৯৫৫ সালের ১ জানুয়ারি। তিনি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। মাধ্যমিক পাশ করেই তিনি তার পিতাকে হারান। এরপর তার পিতার দেখানো পথ ধরেই ডাকবিভাগের চাকরি শুরু করেন। ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি এই চাকরি করেছিলেন।

মাহবুব আহমেদ থেকে সাদেক বাচ্চু হয়েছিলেন ১৯৯১ সালে। বেতারে ১৯৬৩ সালে ‘খেলাঘর’ নামে তার প্রথম নাটক প্রচার হয়। এরপর মঞ্চনাটক, টিভি নাটক অতঃপর সিনেমায় আসেন। নির্মাতা এহতেশাম ‘চাঁদনী’ সিনেমায় কাজ করার সময় তাকে এই নাম দেন। ওই সময়ে আরও অনেককেই স্ক্রিন-নেম দিয়েছিলেন এহতেশাম, যারা প্রত্যেকেই সফল। যেমন- শাবানা, শাবনাজ, শাবনূর প্রমুখ।

পরিবারের দায়িত্ব থেকেই তিনি চাকুরিতে প্রবেশ করলেও অভিনয়ের প্রতি ছিল তার ঝোঁক। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৪ সালে তিনি প্রথম টিভি নাটক ‘প্রথম অঙ্গীকার’-এ অভিনয় করেন। এরপর থেকে তিনি প্রায় এক হাজার নাটকে অভিনয় করেছেন। তর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নাটক হলো- ‘ঝুমকা’, ‘পূর্ব রাত্রি পূর্ব দিন’, ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’, ‘নকশী কাঁথার মাঠ’, ‘গ্রন্থিক গণ কহে’, ‘জোনাকী জ্বলে’ ইত্যাদি।

১৯৮৫ সালে প্রথমে সাদেক বাচ্চু নায়ক হিসেবে সিনেমার পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন। ‘রামের সুমতি’ সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। এরপর আরও কয়েকটি সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে কাজ করলেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাননি তিনি।

এরপর ‘সুখের সন্ধানে’ নানক সিনেমায় তিনি প্রথম খল অভিনয় করেন। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। অল্প সময়েই পরিচিতি লাভ করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি।

সাদেক বাচ্চুর অভিনীত সিনেমার সংখ্যা প্রায় ৫০০। তার অভিনীত কয়েকটি সিনেমা হলো- ‘সুজন সখি’, ‘ডিসকো ড্যান্সার’, ‘প্রিয়জন’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘লাল বাদশা’, ‘মরণ কামড়’, ‘বন্ধু যখন শত্রু’, ‘পিতা মাতার আমানত’, ‘কোটি টাকার কাবিন’, ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘বধূবরণ’, ‘মায়ের হাতে বেহেস্তের চাবি’, ‘মন বসে না পড়ার টেবিলে’, ‘আমার স্বপ্ন আমার সংসার’, ‘মায়ের চোখ’, ‘বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না’, ‘জিদ্দি মামা’, ‘জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার’, ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’, ‘রাজাবাবু- দ্য পাওয়ার’, ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী ২’, ‘লাভ ম্যারেজ’, ‘আরও ভালোবাসবো তোমায়’, ‘বসগিরি’ ইত্যাদি।

জীবনে অনেক কাজ করলেও পুরস্কার তেমন পাননি সাদেক বাচ্চু। শুধু একটি সিনেমার গল্প’র জন্য ২০১৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।