আমিও বদলে যাবো, আর কারও পাশে দাঁড়াবো না: অনন্ত জলিল

| আপডেট :  ২৭ আগস্ট ২০২২, ০৮:২৯ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ২৭ আগস্ট ২০২২, ০৮:২৯ অপরাহ্ণ

একসময়ে তার পরিচিত ছিলো শুধুমাত্র ব্যবসায়ী। ম্যানচেস্টার থেকে বিবিএ এবং ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে পড়ালেখা শেষে দেশে ফিরে ১৯৯৯ সালে ব্যবসায়ী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। খুব অল্প সময়েই ব্যবসায়ী হিসেবে সাফল্যের দেখা পাওয়ার পর ২০১০ সালে নাম লেখান বাংলা চলচ্চিত্রে।

সিনেমার পাশাপাশি ব্যক্তি জীবনেও অত্যন্ত আন্তরিক ও সহযোগিতাপরায়ন ছিলেন এই অভিনেতা। ১৯৯৯ সালে নিজের ক্যারিয়ার শুরুর পর এখন পর্যন্ত এই অভিনেতা প্রায় ২০ হাজার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। শুধুমাত্র এই অভিনেতার গার্মেন্টসেই কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে প্রায় ১২ হাজার মানুষের। এছাড়া করোনা পরিস্থিতি থেকে শুরু করে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি, যেকোনো সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতেই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। চলচ্চিত্র অঙ্গনের যে কারও দূরাবস্থাও করেচেন সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা।

তবে সম্প্রতি দিন- দ্য ডে’ সিনেমাটির ইরানি পরিচালক মুর্তজা অতাশ জমজমের সাথে জটিলতার পরে কাউকে পাশে না পেয়ে বদলে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এই অভিনেতা। কয়েকদিনের ঘটনার পরে ক্ষোভে অভিমান নিয়ে বলেছেন ‘অনন্ত জলিলকে আপনারা মেরে ফেলেছেন।’

শনিবার (২৭ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনন্ত। সেখানে তিনি মূলত মুর্তজা অতাশ জমজমের ইনস্টাগ্রামে অনন্তর প্রতি অভিযোগ বার্তা ও ‘দিন দ্য ডে’ ছবির বাজেট প্রসঙ্গে নিজের আত্মপক্ষ সমর্থন করেন। এই অভিনেতা জানান, চাইলে তিনি এই কথাগুলো আরও আগেই বলতে পারতেন। তবে তিনি মাঝের কয়দিন অপেক্ষা করেছেন তার ভক্ত ও মিডিয়ার আচরণ দেখার জন্য। যা দেখে তিনি হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন।

মিডিয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, ‘সত্যতা যাচাই না করে কেমন করে ছবিটিকে ৪ কোটি টাকার বলে হাজার হাজার নিউজ করলেন আপনারা। আপনাদের যাচাইয়ের সময় নাই? অনন্ত জলিল মানেই আলোচনা-সমালোচনার কম্পিটিশন লেগে যায়।’

এরপর তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন সেই মানুষ বা সংগঠনের প্রতি, যাদেরকে তিনি বিভিন্ন সময় আর্থিক সহায়তা করেছেন। অনন্ত বলেন, ‘যে কোনও দুর্যোগ হলে অনন্ত ঝাঁপিয়ে পড়ে। কারও বিপদ হলে অনন্ত ছুটে যায়। মানুষের সহযোগিতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমার ফ্যান ক্লাব হয়েছে। কদিন আগেও তাদের ২৫ লাখ টাকা দিয়েছি। কিছুদিন আগে সিলেটে ৩০ লাখ দিয়েছি বন্যার জন্য। ঢাবিতে বন্যার্তদের জন্য ৫ লাখ দিলাম। করোনার সময় আমি বস্তিতে বস্তিতে ঘুরেছি। আমার ওয়াইফ তার বাচ্চাদের নিয়ে সাহায্য দিয়েছে। জেলায় জেলায় ঘুরে বেড়িয়েছি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। নিজের জীবনের মায়া করিনি। এই সময়ে এসে দেখলাম, তারা আমার জন্য আন্দোলন করে কি না। না, কেউ আমার হয়ে দাঁড়ায়নি। তারমানে আমি এতোদিন যা করেছি ভুল করেছি। মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমার ভুল ছিলো।’

সবশেষে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনন্ত বলেন, ‘আপনারা অনন্ত জলিলকে মেরে ফেলেছেন, আপনারা আমার চোখ খুলে দিয়েছেন। আমিও অন্য সকল সেলিব্রিটিদের মত হয়ে যাবো। আপনারা আমাকে আর পাবেন না।’

প্রসঙ্গে্ত, গত ১০ বছরে অনন্ত জলিল উপহার দিয়েছেন খোঁজ দ্যা সার্চ,স্পিড, মোস্ট ওয়েলকামের মত সিনেমা। বিভিন্ন আলোচনা সমালোচনা থাকলেও তিনও বর্তমানে বাংলা চলচ্চিত্রে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারীদের একজন। চেষ্টা করেছেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে ডিজিটালাইজেশন সহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে দিতে।