‘পাওয়ারে’র ফাঁ’দে পড়ে যু’বক-যু’বতীরা খাচ্ছে যৌ”ন উ’ত্তে’জক ট্যাবলেট!

| আপডেট :  ১১ জানুয়ারি ২০২১, ০৫:১৯ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১১ জানুয়ারি ২০২১, ০২:৩০ অপরাহ্ণ

দেশে বি”কৃ’ত যৌ’নরুচির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন পণ্যের প্রসার ক্রমেই বাড়ছে। একটি কল করেই যে কেউ অনলাইনের বিভিন্ন নামি-বে’নামি প্রতিষ্ঠান থেকে মা’রা’ত্মক ক্ষ’তি’কর এসব পণ্য হাতে পেয়ে যাচ্ছেন। এসব পণ্যের ভেতর রয়েছে যৌ”ন উ’ত্তেজক ভা’য়াগ্রা ট্যাবলেটও। এই ট্যাবলেট কিনতে চি’কিৎসকের ব্যবস্থাপত্র বা’ধ্যতা’মূলক হলেও যে কেউ ফা’র্মেসিতে বা অনলাইনে অর্ডার দিয়ে কিনতে পারছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই ধরনের পণ্য আমাদের তরুণ সমাজকে বি’প’দের দিকে ঠে’লে দিচ্ছে।

সম্প্রতি রাজধানীতে ঘটে যাওয়া ধ… ও হ… ঘটনাতেও এসব পণ্য ব্যবহারের আলামত পাওয়া গেছে। মা’দ’কের ভ’য়াল ছো’বলের মতোই বি”কৃ’ত যৌ’নরু’চির এসব উপাদান বি’প’জ্জ’নক হয়ে উঠছে। প্রশ্নের মুখে পড়েছে সা’মাজিক ও নৈ’তিক মূল্যবোধ। স’ম্প্রতি রাজধানীর কলাবাগানে ধ”.. পর র’ক্ত’ক্ষ’রণে এক স্কু’লছা’ত্রীর মৃ’ ‘ত্যু হয়েছে। আনুশকা নূর আমিন নামের ঐ ছা’ত্রীর দে’হে ‘ফ’রেন ব’ডি’র আ’লামত মিলেছে। ঢাকা মে’ডিকেল কলেজ হা’সপাতালে আনুশকার ম’য়’নাত’দন্ত হয়।

সেখানকার ফ’রেনসিক মে’ডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ সং’বাদমাধ্যমকে বলেন, স্বা’ভাবিক শা’রী’রিক স’ম্পর্কে এতটা ভ’য়াবহ প’রিণতি হওয়ার কথা নয়। শ’রীরের নি’.’ঙ্গে কোন ‘ফ’রেন ব’ডি’ জাতীয় কিছু একটা ব্যবহার করা হয়েছে। এক কথায় সেখানে বি’০’কৃ’ত যৌ’০না’চার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমি আমার পোস্টমর্টেম জী’বনের অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে পারি, স্বা’ভাবিক শা’রী’রিক স’ম্পর্কে এই ই’নজু’রি মোটেও স’ম্ভব না। ওটা অন্য কিছু ছিল।

যো’০নিপ’থ ও পায়ুপথ থেকে প্রচুর র’ক্তক্ষ’রণের কারণে ভু’ক্তভো’গীর মৃ’’ত্যু হতে পারে বলে ধারণা এই চি’কিৎসকের। তিনি বলেন, প্রচুর র”ক্তক্ষ’রণ হওয়ায় সে ‘হাইপো ভোলেমিক’ শকে মা”রা গেছে। রাজধানী ঢাকায় ঘটে যাওয়া ঘটনা প’র্যবেক্ষণে চি’কিৎসক ‘ফ’রেন ব’ডি’র কথা উল্লেখ করেছেন। ফলে আলোচনায় উ’ঠে এসেছে বি’০’কৃ’ত যৌ’০নরুচি মেটাবার বিভিন্ন উপাদান বা পণ্যের কথা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনলাইনে চাইলেই পাওয়া যাচ্ছে বি’০’কৃ’ত যৌ’০না’চারের বিভিন্ন পণ্য। ফেসবুকে হর হা’মেশাই পপ আপ বিজ্ঞাপনে উঠে আসছে বিভিন্ন যৌ’০নসামগ্রী। এইসব যৌ’০নসামগ্রী পশ্চিমা বিভিন্ন দেশে বৈ’ধ হলেও বাংলাদেশে অ’বৈ’ধ। তবুও আড়ালে আবডালে এসব পণ্য কিনতে সক্ষম হচ্ছেন যেকোন বয়সের ক্রেতারা। যদিও দোকানিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বি’ষয়ে জানতে চাইলে তারা দা’বি করেন শুধুমাত্র প্রা’প্তবয়স্করাই তাদের ক্রেতা।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। এই পণ্যগুলোর কিছু বৈ’ধ আর কিছু একেবারেই অ’বৈ’ধ। যেমন ‘ম্যা’জিক ক’নডম’ নামের একটি বিশেষ ক’নডম বাজারে রয়েছে যা এক হাজারেরও বেশিবার ব্যবহার করা যায়। বিক্রেতাদের দা’বি, এটি একটি বৈ’ধ পণ্য। এর ড্রা’গ লা’ইসেন্স রয়েছে। এ বি’ষয়ে এশিয়ান স্কাই শপের এক্সিকিউটিভ অফিসার মেহেদি হাসান সময়নিউজকে জানান, ম্যাজিক ক’নডমটা আমরা বিক্রি করি। এটা বৈ’ধ। তবে অন্যান্য আরো প্র’ডাক্ট আছে যা বৈ’ধ নয়। যেমন ডিলডো, ফ্লা’শলাইট, বিভিন্ন যৌ০’ন উ’ত্তে’জক ক্যাপসুল, স্প্রে প্রভৃতি।

সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে পেজ খুলে ও ইউটিউবে চ্যানেল খুলে বহু কা’লোবাজারি এসব বিক্রি করছে। তাদের অন্যতম পণ্য হচ্ছে, ডিলডো (পু’রুষের বিশেষ অ’ঙ্গের ন্যায় প্লাস্টিক বা সিলিকন দিয়ে তৈরি বস্তুত), প্লাস্টিক বা সিলিকনের তৈরি ম্যা’জিক ক’নডম, যৌ’০ন পুতুল, স্প্রে ও ভা’য়াগ্রা। এসব পণ্যের আবার বহু রং, প্রকার ও আকার রয়েছে। তাহলে এই ‘অ’বৈ’ধ’ পণ্যগুলো বিক্রি হচ্ছে কীভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমরা কেউ কোন পণ্য চাইলে তাকে কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেই। ‘দা’রাজ’, ‘আজকের ডিল’ নামের বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের পণ্য ডেলিভারি দেওয়া হয়। তবে আমরা ডিলডো, ফ্লা’শলাইট বা যেকোন যৌ’০ন উ’ত্তেজক পণ্য ডিসপ্লেতে রাখি না।

অ’বৈ’ধ এসব পণ্যের জন্য আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি হয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এই ক’র্মকর্তা বলেন, এর আগে একবার বিভিন্ন যৌ’০নসামগ্রী জাতীয় পণ্য ডিসপ্লেতে রেখে ভ্রা’ম্যমাণ আ’দালতের বিচারে আমরা ছয়লক্ষ টাকা জ’রিমানা দিয়েছি। সেসময় ম্যা’জিস্ট্রেট সরোয়ার আলম এই জ’রিমানা করেছিলেন। ঐ ঘটনায় আমাদের তিনজন ক’র্মীকেও আ’ট’ক করা হয়েছিল। অ’বৈ’ধ হলেও এসব পণ্য দেশে ঢুকছে কী করে তা খোঁজ করে জানা যায়, এয়ারপোর্ট এলাকায় শাজাহান নামের এক ‘নে’তা’র মাধ্যমে ডিলডো ও টয় ভ্যা’জাইনা বাংলাদেশে ঢুকছে। সেখান থেকেই অন্যান্য দোকানিরা তাদের অনলাইন শপের জন্য পাইকারি হারে কিনছেন এসব পণ্য। পরে তা অনলাইনে মুখরোচক বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। টেলিমার্কেটিংয়ের এই যুগে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে এসব পণ্যের প্রসার।

এছাড়াও বাজারে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ইরেকটাইল ডিসফাকশনের ও’ষুধ ভা’য়াগ্রা (সি’লডেলাফিল) ট্যাবলেট। এসব ট্যাবলেট সেবন করা হয় দীর্ঘক্ষণ যৌ’০নক্রিয়ার লক্ষ্যে। উৎসুক মন থেকে বা আগ্রহ থেকে প্রায়ই তরুণরা আকৃষ্ট হয়ে কিনছে এসব ট্যাবলেট। বি’ধিনি’ষেধের মু’খোমুখি হতে হয় না বলে যে কেউই এই ট্যাবলেট কিনতে পারছে। চি’কিৎসকের পরামর্শ ছা’ড়া এসব ও’ষুধের ব্যবহার তরুণ প্রজন্মের স্বা’স্থ্যের জন্য ভ’য়া’ল ক্ষ’তি ডে’কে আনতে পারে বলে জানা যায়।

ঢাকা সম্মিলিত সা’মরিক হা’সপাতা’লের (সি’এমএইচ) মনোরো’গবিদ্যা বিভাগের সাবেক প্রধান ব্রি’গ্রেডিয়ার জে’নারেল অধ্যাপক মো. আজিজুল ইসলামের স’ঙ্গে বি’ষয়টি নিয়ে কথা বলে সময়নিউজ। উ’দ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই বি’ষয়গুলোকে সোশিও-কালচারাল (সামাজিক-সাংস্কৃতিক) প্রেক্ষিতে নিয়ে ভাবতে হবে। শুধু একটা ‘সেক্টর’ থেকে ভাবলে তা ভু’ল হবে। বর্তমানে আমরা ডিজিটালাইজেশনের নামে প্রগতির অনেক ঊর্ধ্বে উঠে গেছি। পশ্চিমা কালচারের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে আমরা বড় বি’প’দ ডেকে আনছি।

মধ্যবিত্তের যে সংস্কৃতি তা থেকে দূরে সরে যাওয়ার কারণে বি’০’কৃ’ত যৌ’০ন লালসা সমাজে জায়গা করে নিচ্ছে বলেও মনে করেন এই অধ্যাপক। তিনি বলেন প্রতিষ্ঠান শিক্ষা দিচ্ছে না, স’ন্তান কী করছে তার খোঁজ রাখছি না আমরা। দেশে সে”ক্স এডুকেশন দরকার কিনা সে বি’ষয়ে জানতে চাইলে এই অধ্যাপক বলেন, আমি এটা বলব না যে দরকার নেই আবার এটাও বলব না ঢালাওভাবে দরকার আছে। এটার জন্য হুট করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত হবে না। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত টিম জানাবে ঠিক কতটুকু যৌ’০নশিক্ষা আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ ও ধর্মীয় মূ’ল্যবোধ মাথায় রেখে আমাদের জন্য জ’রুরি।

ভোক্তা অধিকার আইন-২০০৯ অনুযায়ী যেকোনো ধরনের অ’বৈ’ধ পণ্য বিক্রি অ’পরা’ধ। এজন্য আইনে জে’ল বা জ’রিমানা অথবা উভ’য় দ’ণ্ডের বিধান রয়েছে। এছাড়া নিরাপদ খাদ্য আইন অনুযায়ী নিয়ম ভ’ঙ্গ করে ও’ষুধ বিক্রি করা অ’পরা’ধ। প্রেসক্রিপশন ছাড়া ভা’য়াগ্রা বিক্রি করলে অন্যান্য আইন ছা’ড়াও এই আইনে ক’ঠোর শা’স্তির কথা বলা হয়েছে। এসব অ’বৈ’ধ পণ্য বিক্রির বি’রুদ্ধে করণীয় কী তা জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক ও স’রকারের উপস’চিব মনজুর মোহাম্ম’দ শাহরিয়ার বলেন, অ’বৈধ পণ্য বিক্রি করলে ভোক্তা অধিকার আইনে শা’স্তির বিধান রয়েছে।

আমরা অ’ভিযোগ পেলেই ম’হাপরিচালক স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেব। এখন কেউ ফেসবুকে পেজ খুলে বা ইউটিউবে চ্যানেল খুলে এসব বিক্রি শুরু করলে হুট করে আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব হয় না। এজন্য দেশের কোথাও এমন পণ্য বিক্রি হলে আমাদেরকে জানানোর অনুরোধ করছি। এসব অ’বৈ’ধ পণ্য যেন দেশের ভিতরে ঢু’কতে না পারে সে বি’ষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোকে আরো স’চেতন থাকার আহ্বান জানান মনজুর শাহরিয়ার। সুত্রঃ সময় নিউজ