শিক্ষিকার স্বামী প্রথমে বটি খোঁজেন, না পেয়ে ওড়নায় আগুন দেন!

| আপডেট :  ১৪ আগস্ট ২০২২, ০৩:৩৮ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ১৪ আগস্ট ২০২২, ০৩:৩৮ অপরাহ্ণ

কলেজছাত্রকে বিয়ে করে অলোচিত সেই শিক্ষিকা খাইরুন নাহারের মৃ’তদেহ উ’দ্ধার করেছে পুলিশ। খাইরুন নাহারের স্বামী মামুনের দাবি, তিনি শিক্ষিকা ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁ’চিয়ে আত্মহ’’ত্যা করেছেন। পুলিশ জি’জ্ঞাসাবাদের জন্য মামুনকে আ’টক করে নাটোর থানায় নিয়ে এসেছেন। আজ সকালে নাটোর শহরেরবলারী পাড়া এলাকার সাবেক কমিমশনার নান্নু শেখের বাড়ির চারতলা ফ্লাট থেকে খায়রুন নাহারের মৃ’তদেহ উ’দ্ধার করে পুলিশ।

খায়রুন নাহার স্বামী মামুনকে নিয়ে ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন। খারুন নাহারের স্বামী মামুন বলেন, ‘রাত ২টার দিকে খায়রুন নাহার খুব অ’সুস্থ বোধ করলে আমি ও’ষুধ নিতে হাসপাতালে যাই। ফিরে এস দেখি দরজা খোলা। তখনই আমার আ’শঙ্কা জাগে। বেড রুমে ঢুকে দেখি খায়রুন নাহার গ’লায় ওড়না পেঁ’চিয়ে সিলিংয়ের সঙ্গে ঝুলছে। আমি তাকে নামানোর জন্য বটির খোঁজে রান্না ঘরে যাই। কিন্তু বটি না পেয়ে লাইটার জ্বা’লিয়ে ওড়নায় আ’গুন ধরিয়ে দেই। ওড়না অর্ধেক পু’ড়ে গেলে টান দিয়ে ছিঁড়ে তার দেহ নামিয়ে খাটে শুইয়ে দেই। এরপর দৌড়ে গিয়ে আমি নিচতালায় নাইট গার্ড নিজাম উদ্দিনকে খবর দেই। ফিরে এস দিখি সে মা’রা গেছে। ’ তিনি আরো বলেন, অনেক রাত হওয়ায় আমি পাশের ফ্লাটের কাউকে ডাকিনি।

নাইট গার্ড নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘রাত ২টার দিকে মামুন নিচে নেমে এসে জানায় সে হাসপাতালে যাবে। তখন আমি গেট খুলে দেই। এরপর ফিরে আসার কিছুক্ষণ পরেই জানায় তার বউ গ’লায় ওড়না পেঁ’চিয়ে আত্মহ’’ত্যার চেষ্টা করছেন। এরপর ও’পরে গিয়ে আমি খাটের ও’পর শোয়ানো মৃ’তদেহ দেখতে পাই। পরে পুলিশকে জানানো হয়। এরপর পুলিশ আসে। ’

জানা যায়, গত বছরের ১২ ডিসেম্বর কাজি অফিসে গিয়ে দুজন গো’পনে বিয়ে করেন। বিয়ের ছয় মাসেরও বেশি সময় পার হওয়ার পর সম্প্রতি বি’ষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। শিক্ষিকা খাইরুন নাহার গুরুদাসপুরের খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। মামুন নাটোর এন এস স’রকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক বছর আগে ফেসবুকে শিক্ষিকা খায়রুনের সঙ্গে একই উপজে’লার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামের কলেজছাত্র মোহাম্মাদ আলীর ছেলে মামুনের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে তাদের দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বরে কাউকে না জানিয়ে গো’পনে বিয়ে করেন তারা। এর আগে রাজশাহীর বাঘা উপজে’লায় একজনের সঙ্গে বিয়ে হয় খায়রুন নাহারের। তবে পারিবারিক ক’লহে সেই সংসার বেশিদিন টেকেনি। প্রথম স্বামীর ঘরে তার বড় ছেলে বৃন্ত রয়েছে। অপরদিকে ছোট ছেলে বিম রয়েছে তার নানার বাড়ি গুরুদাসপুর পৌর এলাকার খামার নাচকৈড়ে নানার বাড়িতে।

বিয়ের ছয় মাস পর তাদের সম্পর্ক জানাজানি হলে ছেলের পরিবার মেনে নিলেও খায়রুন নাহারের পরিবার মেনে নেয়নি। বর্তমানে নাটোর শহরের বলারীপাড়া এলাকায় সাবেক কমিশনার নান্নুর ছেলে তানভীর সিদ্দিকী সুজনের বাড়ির চারতলা ফ্লাটে ভাড়াটিয়া হিসেবে দুজন বসবাস করছিলেন।

মামুন বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমাদের সংসারে কোনো বি’রোধ ছিল না। কিন্তু খায়রুন নাহারের পরিবার বিয়েটা মেনে নেয়নি। ’ তিনি আরো বলেন, ‘খায়রুন নাহার মাত্র দুইদন আগে বেতন তুলেন। তার ঋ’ণ থাকায় ২৭ হাজার টাকার মধ্যে ২০ হাজার টাকা কে’টে নেয়। বাকি ৭ হাজার টাকার মধ্যে ৫ হাজার টাকা তার বড় ছেলেকে দেয়। কিন্তু ছেলের দাবি এখন তার ৬ লাখ টাকা লাগবে। ওই টাকা দেওয়ার মতো সামর্থ্য তার ছিল না। ফলে বড় ছেলের সঙ্গে তার মনোমালিন্য হয়। এনিয়ে সে মা’নসিক ক’ষ্টে ভুগছিল। তারপরেই এ ঘটনা। ’ মামুন বলেন, ‘আমি তাকে নানাভাবে বুঝানো চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে মা’নসিকভাবে ভে’ঙে পড়েছিল।

নাটোরের পুলিশ সুপার রিটন কুমার সাহা বলেন, ‘লা’শ উ’দ্ধার করে ম’য়নাত’দন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল ম’র্গে প্রেরণ করেছে। ফ্যানের সঙ্গে আ’গুন দিয়ে পোড়ানো ওড়নার অংশ বিশেষ দেখা গেছে। সব কিছু দেখে প্রথমিকভাবে আত্মহ’’ত্যাই মনে হয়। ’ তিনি বলেন, ‘অসম বিয়ের কারণে সহকর্মী, আত্মীয়-স্বজন এবং পরিচিতজনদের অসহযোগিতা আত্মহ’’ত্যার প্ররোচনার কাজ করতে পারে। পুলিশের একাধিক টিম বি’ষয়টি নিয়ে কাজ করছে। মামুনকে জি’জ্ঞাসাবাদের জন্য আ’টক করা হয়েছে। ত’দন্ত চলছে। আমরা আশা করছি দ্রুতই সঠিক কারণ জানা যাবে। ’