তারকাদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা, লাভ হচ্ছে কার?

| আপডেট :  ৮ আগস্ট ২০২২, ০৪:৪৭ অপরাহ্ণ | প্রকাশিত :  ৮ আগস্ট ২০২২, ০৪:৪৭ অপরাহ্ণ

প্রতিনিয়ত বিশ্বজুড়ে নানা বিষয় নিয়েই আলোচনা-সমালোচনা হয়। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে এ ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্য দেশগুলোর তুলনায় আমরা মনে হয় একটি বেশিই এগিয়ে। কারণ এদেশের জনগণ যেকোনো একটি বিষয় সামনে এলে সেটি নিয়ে একটু বেশিই মাতামাতি করেন। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে ঘরের চার দেয়ালের মধ্যেও এ নিয়ে তুমুল তর্ক-বির্তক হয়।

এ ক্ষেত্রে অন্যান্য বিষয়বস্তুর তুলনায় সব থেকে বেশি আলোচনা-সমালোচনায় হয় শোবিজ অঙ্গনের তারকাদের নিয়ে। যা বিগত বছরগুলোর দিকে লক্ষ্য করলেই তা স্পষ্ট বোঝা যায়।

বর্তমান সময়ে আলোচনার তুঙ্গে আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। তাকে নিয়ে সংবাদ প্রচার হচ্ছে বিশ্ব গণমাধ্যমগুলোতেও। এ ছাড়াও বছর কয়েক আগে বুকে সার্জারি করে তুমুল আলোচনায় ছিলেন বিতর্কিত সানাই মাহবুব। এরপর তিনি পা রাখেন শোবিজে। তবে বর্তমানে এই অভিনেত্রী ধর্মের পথ বেছে নিয়ে বিনোদন অঙ্গনকে বিদায় জানিয়েছেন। এ ছাড়া আলোচনায় ছিলেন দন্ত চিকিৎসক নায়লা নাঈম। যিনি শোবিজে পা রাখার পরই পার্শ্ববর্তী দেশের গণমাধ্যম তাকে তুলনা করেন ‘বাংলাদেশি সানি লিওনি’ হিসেবে।

এবার প্রশ্ন হলো- হিরো আলম, নায়লা নাঈম, সানাই মাহবুব- এদের নিয়ে এত আলোচনা-সমালোচনা করে আসলে লাভটা কার হচ্ছে?

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিনয়, গান আর নির্মাতা ‘পরিচয়ধারী’ বিতর্কিত হিরো আলমকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করার কারণে দেশের মানুষের কাছে তাদের নিয়ে কৌতুহল বাড়ছে। এতে করে তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইউটিউব চ্যানেলগুলোতে দর্শক সংখ্যাও বাড়ছে। আর এই মাধ্যমগুলো থেকে তারা সবাই বেশ ভালো একটি আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছে। তাদের আয়ের পথ বাড়লেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শোবিজ অঙ্গনে। এই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে যুক্ত থাকা জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রী বা নির্মাতারা বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

দেশের বরেণ্য অভিনেতা ও নির্মাতা কাজী হায়াৎ বলেন, ‘এসব নিয়ে আপনারা যারা লেখাখেলি করছেন তারাই তো এদের দেশের মানুষের কাছে পরিচিতি এনে দিচ্ছেন। আমি মনে করি, এদের নিয়ে লেখালেখা বা আলোচনা-সমালোচনা করা বন্ধ করুন, তাহলে এমনিতেই তারা দমে যাবে।’

এই নির্মাতা আরও জানান, ‘আমরা যেভাবেই তাদের নিয়ে কথা বলি না কেন- এটা কিন্তু আমাদের মূলধারার অভিনয় শিল্পীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আর এই সস্তা আলোচনা-সমালোচনা কাজে লাগিয়ে তাদের আয়ের পথটি আরও বাড়ছে।’

একই সুরে কথা বললেন পরিচালক সমিতির নেতা সোহানুর রহমান সোহান। তার ভাষ্য, ‘আজ যে বিশ্ব মিডিয়া হিরো আলমকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করছে, এর পেছনে কারা দায়ী? আমরা। আমরা যদি এদের নিয়ে এত মাতামাতি না করতাম, তাহলে আজ তারা কিন্তু এই অবস্থানে আসতো না। আমি কাউকে ছোট করে বলছি না, যারা সমালোচনায় এসেছে তারা সবাই কিন্তু কোনো না কোনো অবস্থান থেকে ভালো। কিন্তু অভিনয়, গানে আসার যোগ্যতা কি তাদের আছে? অভিনয়, গান, নির্মাণ যদি একদিনে শেখা যেতো তাহলে আমরা বছরের পর বছর এর পেছনে লেগে থাকতাম না বা শেখার জন্য রাত-দিন পরিশ্রম করতাম না।’

সোহান আরও বলেন, ‘আমাদের উচিত তাদের কাজকর্ম নিয়ে কোনো কথা বা লেখালেখির দরকার নেই। আমরা আসলে তাদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করে দিনশেষে তাদেরই লাভ করছি আর ক্ষতি করছি আমাদের ইন্ডাস্ট্রির।’

আলোচনা-সমালোচনা করে তাদের পাশাপাশি আরও লাভের খাতায় নাম লিখেছেন- নবাগত নায়িকা শাহ হুমায়রা সুবাহ, কৌতুক অভিনেতা শামীনুর রহমান ওরফে চিকন আলী, প্রয়াত কৌতুক অভিনেতা আসান আলী ওরফে ভাদাইমাসহ আরও অনেকে।